RSS

Sunday, June 21, 2009

ফ্রিজের যত্নআত্তি

এই গরমে হাঁপিয়ে ওঠা আপনাকে দুদন্ড শান্তি দিতে পারে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি। শহুরে গেরস্তালিতে আপনি তো নলকুপের ঠান্ডা পানি পাচ্ছেন না। ঘরের ফ্রিজটি তাই আপনার বন্ধু। অন্যান্য আসবাব, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি সংসারে পরে এলেও সমস্যা নেই। কিন্তু অপরিহার্য ফ্রিজ। ফ্রিজ ছাড়া সংসার চলেই না। ব্যবহারের পাশাপাশি তাই দরকার এ যন্ত্রটির যত্ন নেওয়া। পরিষ্ককার-পরিচ্ছন্নতাসহ আনুষঙ্গিক যত্নে ফ্রিজ ভালো থাকবে অনেক দিন। তা ছাড়া খাবারের সঠিক মান বজায় রাখার জন্য নিয়মিত ফ্রিজ পরিষ্ককার-পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। আজকের নকশায় তাই দেওয়া হলো নিয়মিত ফ্রিজ পরিষ্ককারের নানা তথ্য।
সাধারণত ফ্রিজ প্রতিদিন পরিষ্ককারের দরকার হয় না। সপ্তাহখানেক পর পর, নয়তো মাসে দুবার নিয়ম করে ফ্রিজ পরিষ্ককার করা যায়। ফ্রিজ কীভাবে পরিষ্ককার করেন এবং অন্যরা কীভাবে যত্ন নিতে পারেন, এ ব্যাপারে জানতে চাই অভিজ্ঞ গৃহিণী শাহানা আলমের কাছে। তিনি জানান, ‘আমি সাধারণত ১০ থেকে ১২ দিন পর পর ফ্রিজ পরিষ্ককার করি। প্রথমে ফ্রিজটা বন্ধ করে নিই। যেন বরফ গলে যায়। বরফ গলার পর ডিপফ্রিজটি শ্যাম্পু ও ডিটারজেন্ট পাউডার মেশানো পানিতে একটি পরিষ্ককার কাপড় ভিজিয়ে বারবার মুছে পরিষ্ককার করি। সাধারণ তাপমাত্রার ফ্রিজের বাক্সগুলো বাইরে বের করে ধুয়ে ফেলি। ফ্রিজের বাইরের অংশটুকুও ডিটারজেন্ট পাউডার, নয়তো শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে-মুছে ফেলি। পরিষ্ককার পানিতে পরিষ্ককার কাপড় ভিজিয়ে মুছি। এ ক্ষেত্রে পানিটা আমি কুসুম গরম নিই। পরিষ্ককার হওয়ার পর শুকনো করে মুছে ফেলি। এক-দেড় ঘণ্টা পর শুকিয়ে গেলে ফ্রিজ চালু করি। যেদিন ফ্রিজে অল্প খাবার থাকে সেদিন সিদ্ধান্ত নিই পরিষ্ককারের অথবা সময় ঠিক করে খাবার সেই অনুপাতে রাখি। তাই আর সমস্যা হয় না।’
ফ্রিজ পরিষ্ককারের সঙ্গে সঙ্গে খাবার রাখার ব্যাপারে শাহানা আলম জানান, ‘যেসব খাবার দীর্ঘদিন ফ্রিজে থাকে, প্রয়োজন না থাকলে সেগুলো ফেলে দেওয়াই ভালো। আবার একধরনের খাবার যেমন−ফল, মিষ্টি সব ছড়িয়ে না রেখে একটা সেলফে রাখাই ভালো। যেন তাড়াহুড়োর সময় সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। ডিপফ্রিজের মাছ-মাংস রাখার সময় পলিথিন কাগজ ব্যবহার না করে বাক্সে আলাদা আলাদাভাবে রাখা যায়। এক বাটির সঙ্গে যেন আরেক বাটি লেগে না যায়, এ জন্য বাটির বাইরে তেল ঘষে নেওয়া যায়।’
ফ্রিজের যত্নআত্তি নিয়ে জানান ফিলিপসের শোরুম ব্যবস্থাপক মেহেদি হাসান। তিনি জানান, ‘ফ্রিজ পরিষ্ককারের দেড়-দুই ঘণ্টা আগে ফ্রিজটা বন্ধ করে নিতে হবে। ডিটারজেন্ট পাউডারের বদলে লেবুর রস দিয়ে ফ্রিজ পরিষ্ককার করা যায়। এতে খাবারে ডিটারজেন্টের গন্ধ লাগার আশঙ্কা থাকে না। মোছার সময় পরিষ্ককার সুতি কাপড় ব্যবহার করা উচিত। শুকনো করে মোছা উচিত। খাবার রাখার ক্ষেত্রে একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যেন দুটি পাত্রের মধ্যে অন্তত তিন থেকে চার সেমি জায়গা ফাঁকা থাকে। যাতে ঠান্ডা হাওয়া সহজেই চলাচল করে সব খাবারকে সমান ঠান্ডা রাখতে পারে। আবার আমরা বাজার থেকে ডিম এনেই ফ্রিজে ভরে রাখি, এটা ঠিক নয়। ডিমের ময়লা, জীবাণু অন্য খাবারেও লাগতে পারে। বাজার থেকে আনা ডিম তাই পরিষ্ককার করে ফ্রিজে রাখতে হবে।’
ফ্রিজের যত্ন ও সতর্কতা বিষয়ে মেহেদি হাসান জানান আরও কিছু তথ্য:
বরফ ভাঙার ক্ষেত্রে শক্ত স্ক্রুডাইভার বা এ-জাতীয় কোনো কিছু ব্যবহার করা উচিত নয়। ভোল্টেজ ওঠা-নামার সময় ঝুঁকি এড়াতে স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করা উচিত। যেহেতু এ সময় বারবার বিদ্যুৎ চলে যাবে, তাই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার মুহুর্তে ফ্রিজের সুইচটি বন্ধ করে রাখতে পারেন।
বাসা পরিবর্তন করতে অনেক সময় ফ্রিজ ওপর-নিচ ওঠানামা করা হয়। এ ক্ষেত্রে ফ্রিজ বাসা থেকে বের করার ন্যুনতম তিন-চার ঘণ্টা আগে বন্ধ করতে হবে এবং নতুন বাসায় সংস্থাপনের তিন-চার ঘণ্টা পর চালু করতে হবে। কারণ, ফ্রিজ নাড়াচাড়া করলে কম্প্রেসারের গ্যাস ওপরে উঠে যায়। তাই সময় নিয়ে চালু করা উচিত।
বছরে একবার বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে ফ্রিজের পেছনে বা নিচে থাকা কয়েল পরিষ্ককার করতে পারেন। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার বা নরম ঝাড়ন দিয়ে কয়েলে লেগে থাকা ধুলো-ময়লা সাফ করতে পারেন। ফ্রিজের কোনো সমস্যায় কারিগর ডেকে সাহায্য নেওয়া উচিত।

0 comments:

Post a Comment