RSS

Sunday, June 14, 2009

পাত্র-পাত্রী দেখার ম্যানার্স

সময়ের সাথে সাথে যেমন অনেক কিছুই পাল্টে গেছে তেমনি পাল্টেছে বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী দেখার ধরন-ধারণও। বিশেষ করে হাল জমানায় যারা নিজেদের খানিকটা ‘স্মার্ট’ অথবা কেতাদুরস্থ বলে ভাবেন তারা এখন আর বাড়ি গিয়ে পাত্রীর চলন-বলন কিংবা আপাদমস্তক দেখে বিয়ের সম্বন্ধ খোঁজেন না। বরং মা-বাবা অথবা বয়োজ্যোষ্ঠ কারো মধ্যস্থতায় বাড়ির বাইরে কোনো শপিং মল বা ফাস্টফুডের দোকানে পাত্রীর সাথে খানিকটা কথা-বার্তাই পাত্র-পাত্রীর যোগাযোগের আধুনিক একটি পন্থা হিসেবে অধিক চর্চিত হচ্ছে। তবে যারা প্রথম দেখাতেই সবকিছু জাহির করতে চান কিংবা এর উল্টো পিঠে কম কথা বলতে গিয়ে কাজের কথাটিও জেনে নিতে ভুলে যান তাদের অনেককেই পরে এ নিয়ে পস্তাতে হয়। কাজেই আপনারও যদি বিয়ের ফুল ফোটাতে এমনতর দেখাদেখির মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাহলে পাত্র কিংবা পাত্রীর সাথে কিভাবে কথা বলবেন আর কতটা বলবেন তা নিয়ে কিছু ধারণা থাকা প্রয়োজন। আর এজন্য নিচের টিপস্গুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন।

০ সেলফোন এবং যোগাযোগের নানা মাধ্যমের এই যুগে দেখা হবার আগে এক-আধটু আলাপ হওয়াটা দোষের কিছু নয়। কাজেই কোনো ধরনের আলাপচারিতা না করে হুট করে পাত্র-পাত্রীর মুখোমুখি না হয়ে আগে থেকে একটু কথা বলে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। এক্ষেত্রে খুব বেশি কিছু না হলেও অন্তত দেখা হওয়ার আগে একদিন কথা বলে কোথায়, কখন দেখা করবেন ইত্যাদি ঠিক করে নিন।
০ অনেকেই পাত্র-পাত্রী দেখতে যাবার সময় তাদের দু’একজন আত্মীয় বা বন্ধুকেও সাথে নেন। তবে পারিবারিক কোনো সমস্যা না থাকলে এক্ষেত্রে বেশি মানুষ এড়িয়ে চলাটাই মঙ্গলজনক। কেননা অন্য অনেকের সামনে যে কথাগুলো মনখুলে বলা সম্ভব হয় না দু’জনের একান্ত আলাপনে এমন অনেক বিষয়ই উঠে আসতে পারে। তাছাড়া যারা একটু আত্মকেন্দ্রিক স্বভাবের তারা অন্যের উপস্থিতিতে কথা বলতেও সংকোচ বোধ করতে পারেন। তবে কোনো কারণে যদি আত্মীয় বা বন্ধুদের উপস্থিতি প্রয়োজনীয় হয় তাহলে আলাপের সময়টিতে তাদের একটু দূরে থাকা বা কম কথা বলা বাঞ্চনীয়।
০ মার্কেট কিংবা ফাস্টফুড শপ, পাত্রী দেখার জন্য যে স্থানেই যান না কেন অবশ্যই পাত্র বা পাত্রীকে জানিয়েই সেটা করুন। কারো অজান্তে তাকে দেখে আসার মধ্যে কোনো বাহাদুরী নেই। যদি বিয়ের সব আলাপই আনুষ্ঠানিক ভাবে এগিয়ে থাকে তাহলে এভাবে দেখাদেখির প্রয়োজন পড়ে না।
০ বিয়ের জন্য যাকে দেখতে গেলেন তাকে কোনো একটি কারণে প্রথম দেখাতে আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। তবে তাৎক্ষণিক ভাবে এর প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে সৌজন্যতাবোধ বজায় রাখুন এবং কোনো রকম তাড়াহুড়ো না করে আলোচনা শেষ করে তবেই উঠুন। এছাড়া আপনি যে তাকে পছন্দ করেননি কথার মাঝে এটি বুঝতে না দেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এছাড়া যদি কোনো শপিং মলে তাকে দেখতে যান তবে পছন্দ না হলে কাউকে না জানিয়ে চলে আসাটাও একটি অপরাধের কাজ।
০ যে স্থানটিতে দেখা করবেন বলে মনস্থ করেছেন সেটি যেন দু’জনের জন্যই সুবিধাজনক দূরত্বে হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
০ আলোচনার শুরুতেই ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা না বলে হালকা কোনো বিষয় দিয়ে আলাপ শুরু করুন।
০ নিজের সম্পর্কে অহেতুক বাড়িয়ে বলবেন না। এমনকি প্রসঙ্গের বাইরে কোনো একটি বিষয় ধরে নিজেকে জাহির করার চেষ্টাটাও দৃষ্টিকটু।
০ আপনি যেমন সংক্ষেপে আপনার দৃষ্টিভঙ্গিটা শেয়ার করবেন তেমনি সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনীর দৃষ্টিভঙ্গিটিও কথাচ্ছলে জেনে নেয়ার চেষ্টা করুন। বিপরীত লিঙ্গের মানুষটি যদি খানিকটা সংকোচ বোধ করেন তাহলে তাকেও মনখুলে কথা বলতে সাহায্য করুন।
০ নিজের পরিবার, পরিজন, সামর্থ্য আর পছন্দ-অপছন্দের কথা সংক্ষেপে অন্যের সামনে তুলে ধরুন।
০ খাবার দোকানে কথা হলে মেন্যু নির্বাচনের ক্ষেত্রে দু’জনের মতামতকেই গুরুত্ব দিন।
০ যেসব বিষয় পরে বয়োজ্যোষ্ঠরা আলাপ করে ঠিক করে নিতে পারবেন সেগুলো নিয়ে নিজেরা অহেতুক কথা বলে সময় নষ্ট করবেন না।
ফ সম্ভব হলে একে অন্যের জন্য ছোটখাটো কোনো উপহারও নিয়ে যেতে পারেন।

0 comments:

Post a Comment