RSS

Monday, June 29, 2009

বর্ষার সাজ

আষাঢ় মাসের বেশ কয়েক দিন কেটে গেল। ঝুম বৃষ্টি নামেনি এখনো। কিন্তু আকাশে মেঘের ঘনঘটা, মাঝে মধ্যে এক পশলা বর্ষণ, নতুন গজানো কচি লতাপাতা আর কদম ফুলের বাহারে বর্ষার আমেজ পাওয়া যাচ্ছে বেশ। আর ঋতুবদলটা প্রকৃতিতে ফুটে ওঠার পাশাপাশি সাজপোশাকে তো চোখে পড়বেই। যেমন মেয়েদের পরনে এখনই দেখা যাচ্ছে নীল-সবুজ পোশাক, চুলে কদম বা বেলি।

বানিয়ে নিন পছন্দের ব্লাউজ

একটি ব্লাউজ বানাতে নাকি ৫৫০ টাকা? অনেকে আবার ১৫০০-২০০০ টাকাও দেয়। বাচ্চার স্কুল ছুটির অপেক্ষায় পাশে দাঁড়ানো ভাবিদের গল্প শুনে তো থ আফরোজা রহিম। ভাবছিলেন, এ তো খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি। শাড়ি ঠিক থাকলেই তো হয়, ব্লাউজে এত মনোযোগ দেওয়ার কীই বা আছে? আছে বৈকি। ব্লাউজটি যদি সুন্দর এবং শাড়ির সঙ্গে মানানসই না হয়, তাহলে তো সবই মাটি। পরিধেয় শাড়িটিকে অপূর্ব করে তোলার জন্য ব্লাউজটিও হওয়া উচিত দারুণ।

চোখের ভাষা

চোখের নীরব ভাষা নাকি হাজারো শব্দের তুলনায় জোরালো। ওই চোখ নিয়ে কবির যত কাব্য...পাখির নীড়ের মতো চোখের বনলতা সেনকে নিয়ে আজও মানুষের কল্পনার অন্ত নেই। মনের কথা বলতে পারা সে চোখের ভাষা সহজ করে তুলতে পারাটাও কম কৃতিত্বের নয়। চোখের সৌন্দর্যের নানা দিক নিয়ে বলেছেন রূপ বিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খান।

উজ্জ্বল রঙে প্রাণবন্ত ঘর

একান্ত মুহুর্তের সঙ্গী মানুষের ঘর। আর ঘরটি যদি বসবাসরত ব্যক্তিটির রুচিবোধের সঙ্গে মিলিয়ে করা হয়, তবে সহজেই ঘরটি দেবে তাকে এক প্রাণবন্ত উচ্ছ্বাসের ছোঁয়া।

রান্না করুন পুষ্টিমান বজায় রেখে

খাদ্য তালিকায় শাকসবজি অনেকের পছন্দের শীর্ষে। স্বাস্থ্য নয়তো ত্বকসচেতনতায় সবজি সবারই প্রিয়। ভিটামিন ও খনিজ লবণের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ও সহজলভ্য উৎস হচ্ছে শাকসবজি। কিন্তু খাবার টেবিলে আমরা বাটিভর্তি যে সবজি পাই তার সবটুকুতে কি পুষ্টিমান বজায় থাকে? রান্না করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়। তাহলে পুষ্টিমান বজায় রেখে সবজি খাওয়ার উপায়? খুব কঠিন কিছু নয়, আছে সে উপায়ও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক খুরশীদ জাহান বাতলে দিয়েছেন সে উপায়। খুরশীদ জাহান বললেন, ‘শাকসবজি ও ফলমূল থেকে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাওয়া যায়। কিছু কিছু শাকসবজি যেমন ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, টমেটো, গাঁজর, মুলা, শসা ইত্যাদি কাঁচাই খাওয়া যায়। অন্যান্য শাকসবজি রান্না করে খেতে হয়। রান্না করতে গিয়ে আমরা পুষ্টি উপাদান নষ্ট করে ফেলি। এর ফলে গৃহীত খাদ্য থেকে যতটুকু পুষ্টি উপাদান পাওয়া উচিত তা আমরা পাই না। যদি একটু সচেতন হয়ে রান্না করি তবে পুষ্টির অনেকটাই আশানুরূপ আমরা পাব।’
শাকসবজি কাটা, ধোয়া ও রান্নার সময় বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সংরক্ষণের জন্য সেসব ব্যাপারে মনোযোগী হতে হবে তা নিয়ে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন খুরশীদ জাহান।
0 রান্নার ঠিক আগে শাকসবজি ধুয়ে কাটতে হবে। অনেকক্ষণ ধরে কেটে না রাখাই ভালো।
0 সবজি কাটার সময় যতটা সম্ভব খোসাসহ কাটতে হবে। কারণ খোসার নিচেই বেশির ভাগ ভিটামিন থাকে। প্রয়োজনে খোসা পাতলা করে কাটতে হবে।
0 ধারালো এবং পরিষ্ককার বঁটি দিয়ে যতটা সম্ভব বড় বড় টুকরা একই সাইজ করে কাটতে হবে। টুকরা ছোট-বড় হলে পুষ্টি উপাদান বেশি নষ্ট হয়।
0 সবজি বেশি তাপে অল্প সময়ে রান্না করা উচিত। বেশি সেদ্ধ হলে পুষ্টি উপাদান বেশি নষ্ট হয়।
0 অল্প পানি দিয়ে রান্না করলে ভিটামিন ‘সি’ অনেকটা রক্ষা করা যায়।
রান্নার সময় পাত্রের মুখ ভালো করে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে, যাতে বাইরের বাতাস পাত্রের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে।
0 ছড়ানো পাত্রে শাকসবজি রান্না করা উচিত নয়। এতে বাতাসের অক্সিজেন সবজির সংস্পর্শে বেশি আসার ফলে ভিটামিন বেশি নষ্ট হয়।
0 শাকসবজি সেদ্ধ করা পানি না ফেলে এ পানি ডাল বা অন্য তরকারির সঙ্গে ব্যবহার করে অথবা শাকের সঙ্গে শুকিয়ে নেওয়া যায়।

মশার উৎপাত আর নয়

‘সাধারণত শীতকালের চেয়ে গরমকালে মশার প্রকোপটা অনেকটাই বেড়ে যায়। কেননা শীতের চেয়ে গরমের সময়ে মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায়। মশার মাধ্যমে ছড়াতে পারে নানা ব্যাধি। তাই এ থেকে সব সময় সতর্কতা প্রয়োজন। মশার মাধ্যমে সাধারণত দুটি রোগ বেশি ছড়ায়−ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া।’ বলেছিলেন বারডেম হাসপাতালের শিশুবিভাগের বিভাগীয় প্রধান তাহমিনা। তিনি আরও বলেন, সব সময়ই মশা থেকে সুরক্ষিত থাকলে এসব রোগ এড়ানো সম্ভব।
মশা সাধারণত জমানো পানিতে অর্থাৎ খাবার বা গোসলের জন্য সংরক্ষিত পানি, বৃষ্টির পানি যেখানে জমে থাকে, যেমন টায়ার, নারকেলের ভাঙা অংশ, পড়ে থাকা হাঁড়ি-পাতিল, ফুলের টব, ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনারে জমে থাকা পানিতে ডিম পাড়ে এবং ছয়-সাত দিনের মধ্যে বংশবিস্তার করে।

চোখ ঢাকুন রোদচশমায়

গরমটা ভালোই পড়েছে। সেই সঙ্গে সুর্যের তাপ, ধুলোবালি কিছুই আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছে না। এই গরমে যতই এগুলো থেকে দুরে থাকতে চান না কেন, ঘুরে-ফিরে তা আপনার কাছে আসবেই। ত্বকে না হয় সানস্ক্রিন বা লোশনে কাজ চালিয়ে নিতে পারেন, কিন্তু চোখ দুটো? চোখ দুটোকে বাঁচাবে কে? ঠিক ধরেছেন−রোদচশমা। এই গরমে রোদচশমা যে কতটা দরকারি তা জেনে নিন চিকিৎসকের কাছ থেকে। ‘গরমেই মূলত চোখের নানা ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে।’ বলছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ শফিকুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, ‘গরমে চোখের ভেতরটা শুকিয়ে যায়। আবার পরিবেশগত কারণে বারবার ঘেমে যাওয়ার একটা প্রবণতা দেখা যায়। এই ঘাম যদি চোখের ভেতর চলে আসে, চোখে নানা ধরনের রোগ দেখা দেয়। আবার রোদে বের হওয়ার ফলে চোখ জ্বলে এবং লাল হয়ে যায়। বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া আক্রমণের ফলেও চোখ লাল হয়। কড়া আলোর উপস্িথতি চোখের জন্য ক্ষতিকর। আবার প্রচন্ড রোদের মধ্যে সুর্যের দিকে তাকানো হলে চোখের জন্য নানা ধরনের অসুখের সৃষ্টি করে। এসব সমস্যা থেকে খুব সহজে রেহাই পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো রোদচশমা ব্যবহার করা।’

কানের জন্য ছোট্ট দুল

হাওয়া বদলের সাথে সাথে মানুষের মনও বদলে যায়, সেই সাথে বদলে যায় পুরনো ফ্যাশন। প্রকৃতিতে এখন প্রচন্ড গরম। গরমে একটু স্বস্তির জন্য মানুষের মন অস্থির থাকে। কিন্তু কাজ তো থেমে থাকে না কোনো কিছুর জন্য। কাজের জন্য বাইরে বের হতেই হয়। আর বাইরে বের হলে একটু সাজ তো লাগেই। মেয়েদের সাজের প্রধান সামগ্রীই হচ্ছে গহনা। বিশেষ করে কানের দুল। কানের দুল না পরলেই নয়। সব মেয়েরাই পোশাকের সাথে মিলিয়ে কানের দুল পরবেই। এইতো কিছুদিন আগেও বড় বড় কানের দুল না পড়লে যেন সাজ অসম্পূর্ণই থেকে যেত। আর এই প্রচন্ড গরমে স্বস্তি পাওয়ার জন্য সবকিছুর হচ্ছে হালকা ব্যবহার। তা খাওয়া থেকে শুরু করে পোশাক, সাজ সবকিছুতেই। সেই সাথে কানের দুলও। এখন বড় কোনো অকেশন ছাড়া শাড়িতেও ফ্যাশন সচেতন মেয়েরা কেউ বড় কানের দুল পড়ছে না। সবাই সব রকমের ড্রেসের সাথে ম্যাচিং করে হালকা ছোট কানের দুল পড়ছে। শর্ট কামিজ, ফতুয়া, স্কার্ট এমনকি শাড়ির সাথেও মেয়েরা জারকান, রুমি এবং নরমাল পাথরের ছোট কানের দুল বেশি পড়ছে। এছাড়া সোনা, রূপা, হিরা, রুবি, মুক্তা, পিতল, কপার, অক্সিডাইজ, বাঁশ, নারকেলের আইচা, ফিতা, চট, কাপড়, লেস, কাঠ, পাটকাঠি, মাটি, গ্লাস, সিরামিক ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিসের তৈরি কানের দুল ছোট, বড়, বুড়ো সবাই কোনো না কোনোটি ব্যবহার করছে। বুড়ো যারা তারা সোনা, রুপা এবং মুক্তার কানের দুল বেশি পছন্দ করে। এছাড়া হিন্দু মেয়েদের মধ্যে স্বর্ণের ছোট কানের দুলের ব্যবহারের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইয়াং জেনারেশন সোনা রূপার চেয়ে হিরা, রুবি এবং নরমাল স্টোনের ছোট কানের দুল ড্রেসের সাথে মিলিয়ে পড়তে বেশি পছন্দ করছে। ঢাকার এবং বিভিন্ন জেলা শহরের প্রায় সকল শপিং সেন্টারে আপনার পছন্দমত ছোট কানের দুল কিনতে পারেন। একটু দামী এবং আনকমন কানের দুল কিনতে যেতে পারেন আলমাস শপিং সেন্টার, বসুন্ধরা সিটি, হলমার্ক, আর্চিস গ্যালারি, নিউমার্কেট এবং চাঁদনী চক ইত্যাদি মার্কেটে। কথা বলেছি আলমাস সুপার শপের বিক্রেতা স্বর্ণা এবং জামিলের সাথে। তারা জানিয়েছেন তাদের কানের দুলের দরদাম। ছোট কানের দুল জারকান পাথরের ৮০-৫০০ টাকা, রুবি পাথরের দাম পড়বে ২৫০-৯০০ টাকা এবং নরমাল পাথরের কানের দুল ৮০-১৫০০ টাকা। উল্লেখ্য পাথর এবং পাথরের পরিমাণ অনুযায়ী দাম হয়। তারা জানালেন ছোট কানের দুল এখন বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বসুন্ধরা সিটিতে ৫০-২৫০০ টাকার মধ্যে আনকমন কানের দুল কিনতে পারবেন। চাঁদনী চকে ৩৫-৩০০০ টাকার মধ্যে হোয়াইট গোল্ডের সাথে পুঁতির কাজের তৈরি ছোট কানের দুল কিনতে পারেন। আপনি ইচ্ছা করলে দুলের অর্ডারও দিতে পারেন তৈরি করার জন্য। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার পছন্দমত ডিজাইন অনুযায়ী কানের দুল ব্যবহার করতে পারবেন। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজগুলো ফ্যাশনেবল মেয়েদের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন ডিজাইনের কানের দুল তৈরি করছে ছোট কানের দুল সব বয়সের মেয়েদের চেহারার সাথে মানিয়ে যায়। অঞ্জনস, কে-ক্রাফট, বাংলার মেলা, আড়ং, রঙ-এ তাদের নিজস্ব ডিজাইনে তৈরি এসব কানের দুলের দাম পড়বে ২৫-৫০০ টাকা। স্কুল, কলেজ এবং ব্যস্ত শপিংমলের ফুটপাতে লেস, পুঁতি, ঝিনুক, মাটির এবং স্টোনের দুল পাওয়া যায়। এখানে কম দামে ছোট কানের দুল কিনতে পারেন। দাম বেশি, কম কোনো বিষয় না, বিষয় হচ্ছে কানের দুল আপনার চেহারা এবং ড্রেসের সাথে মিলে ফ্যাশনে কতটা বৈচিত্র্য আনতে পেরেছে। আপনার সাজ-পোশাকের সাথে ছোট একজোড়া কানের দুল এনে দিবে আপনার সুরুচির পরিচয়। এছাড়া বিভিন্ন হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েও আপনি ঘরে বসেই তৈরি করতে পারেন আপনার পছন্দের কানের দুল। এভাবে সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে কানের দুল ব্যবহার করে আপনার সুরুচির পাশাপাশি ফ্যাশনেও আনতে পারেন নতুনত্ব। সেক্ষেত্রে আপনার ইচ্ছাটাই যথেষ্ট। মানুষ এক জায়গায় একটা ফ্যাশন নিয়ে বেশিদিন পড়ে থাকে না। প্রতিদিনই থাকে পুরনোকে ঘিরে নতুন কিছু করার প্রবণতা। প্রাচীনকাল থেকেই কানের দুলের ব্যবহার। আগে ছেলেরাও কানের দুল পরত। এখনও সেটা বিদ্যমান। ছেলেরাও এক কানে ছোট রিং ব্যবহার করছে। মেটালের রিং পাওয়া যায় বিভিন্ন ডিজাইনের। মেটালের মধ্যে পাথর বসানো ঝোলানো দুল আছে। পাথরের রিং পাওয়া যায়। পাথরের রিং ব্যবহার করতে হলে কান ফুটো করতে হবে। কান ফুটো করা ছাড়া ম্যাগনেট রিং পরতে পারেন। এছাড়া চাপ রিং পাওয়া যায়। সেটা কানে বসিয়ে জোরে চাপ দিতে হবে। ছেলেরা ২০-১০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ছোট রিং কানের দুল কিনতে পারেন। এগুলো পাওয়া যাবে বিভিন্ন জুয়েলারি দোকানে এবং আর্চিস, হকমার্ক ও নিউ মার্কেটে।

টমেটোর টিউলিপ

টমেটো একসময় সিজনাল সবজি হিসেবে জনপ্রিয় হলেও এখন টমেটো পাওয়া যায় টমেটো পাওয়া যায় সবসময়। তাই খাবার সাজানোর জন্য এক পিস টুকটুকে লাল টমেটো সাজিয়ে দিতে পারে।
এ সংখ্যায় রেসিপি মেকওভারে থাকছে টমেটোর টিউলিপ ফুল
১. টিউলিপ ফুল বানাতে টমেটো নিন অপেক্ষাকৃত শক্ত ও লম্বাটে ধরনের। এর সাথে দরকার হবে যে কোন সবুজ পাতা। একটু বড় মাপের পাতা হলে দেখতে ভালো লাগবে।
২. এবার ধাঁরালো ছুড়ি দিয়ে টমেটো কাটুন। ফালি ফালি করে কাটতে হবে। তবে কেটে ফেলে দেয়া যাবে না। একটু ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
৩. এবার ছবির মতো করে হাতে ধরে ধরে টমেটোর কাটা অংশগুলো ফুলের পাপড়ির মতো উল্টোদিকে ভাজ করে নিন। খেয়াল রাখুন যেন ভেঙে না যায়।
৪. একটি সাসলিক কাঠিতে সবুজ পাতাগুলো আঁকাবাঁকা করে গেঁথে নিন। চকচকে এই সবুজ পাতাগুলো খাওয়ার উপযোগী না হলেও দেখতে কিন্তু বেশ লাগবে।
৫. এবার সাসলিক কাঠির মাথায় আপনার বানানোর টমেটোর টিউলিপ ফুলটি গেঁথে দিন। তৈরি হলে গেল টমেটোর টিউলিপ ফুল।

হেলদি ব্রেকফাস্ট

মুটিয়ে যাওয়ার দল কিংবা ব্যস্ত-সমস্ত ক্ষীণকায় তরুণ, সবার সব আক্রোশ যেন বরাদ্দ সকালের নাস্তার উপর। কেউ হয়তো দিনের পর দিন অকারণইে মুটিয়ে যাচ্ছেন। কাজেই তার প্রথম কাজ হিসেবে না জেনে-বুঝেই তিনি কাঁচি চালান সকালের নাস্তায়। কখনো না খেয়ে আবার কখনো যৎসামান্য সকালের নাস্তা করেই শুরু হয় সারাদিনের ডায়েট মিশন। অন্যদিকে যারা ওজন বাড়া নিয়ে সে অর্থে চিন্তিত নন তারাও যে সকালের নাস্তা নিয়ে খুব একটা ভাবেন তাও কিন্তু নয়। বরং দেরী করে ঘুম থেকে ওঠা কিংবা স্কুলে-অফিসে যাওয়ার দেরী হয়ে যাচ্ছে ভেবে প্রথম আক্রমণটা হয় সকালের নাস্তার প্রতিই। কোনোরকমে নাকে-মুখে যা একটা কিছু গুজেই এরা চটজলদি রওনা হন গন্তব্যে। এছাড়া দিনের পর দিন একই নাস্তা করে জীবন পার করে দেয়া লোকের সংখ্যাও কম নয়। অথচ সকালের নাস্তার প্রতি আমাদের এ জাতীয় প্রতিটি আচরণই কিন্তু মস্ত বড় ভুল। পুষ্টিবিদদের মতে, সারাদিনমান ঘরে আর বাইরে একজন কর্মক্ষম মানুষের কাজের যে জ্বালানী তার প্রায় অনেকটাই আসে সকালের নাস্তা থেকে। কাজেই নাস্তা পরিপূর্ণ না হওয়া মানে কিন্তু সারাদিনের কাজে প্রাণশক্তির ঘাটতি বয়ে বেড়ানো।

খেয়াল রাখুন নিচের বিষয়গুলোতে-
০ সাধারণত সকালের নাস্তা গ্রহণের পর প্রায় সবাইকেই কোনো না কোনো কাজে যেতে হয়। আর সকালের নাস্তার অতিরিক্ত ক্যালরি সারাদিনের কাজের মাধ্যমে পুড়িয়ে ফেলাটাও সহজ হয়। কাজেই যারা মোটা থেকে চিকন হতে চান তারা সকালের নাস্তায় ক্যালরি আর ফ্যাটের কঠিন হিসেব নিয়ে খানিকটা হলেও কম মাথা ঘামান। অন্যদিকে যারা চিকন থেকে মোটা হতে চান তাদেরও প্রথমেই ভাবতে হবে এই হেলদি ব্রেকফাস্ট নিয়েই।
০ সকালের নাস্তা মানেই দিনের পর দিন দুধ-ডিম খাওয়া নয়। বরং আবহাওয়া আর শরীরের অবস্থা বুঝে এই দুধ-ডিমের বাইরেও স্বাস্থ্যকর নাস্তা করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ গরমের দিনে ডিম খাওয়া কিংবা পেটের বদহজম জনিত সমস্যা থাকলে দুধ খাওয়াটা অনেকের জন্যই সমস্যা ডেকে আনতে পারে। অতএব দুধ কিংবা ডিম যদি বাদ দিতে চান তাহলে ফলের রস বা সবজি হতে পারে আপনার জন্য স্বাস্থ্যকর এক নাশতা।
০ সকালের খাবারে আঁশ জাতীয় খাদ্য উপাদান কিছুটা বেশি থাকলেই ভাল
০ যাদের এসিডিটি’র সমস্যা আছে তারা নান রুটি, পাউরুটি প্রভৃতি উপাদান সকালের নাস্তায় কম রাখবেন।
০ সিদ্ধ আটার চাইতে কাঁচা আটা কিংবা লাল আটার রুটি শরীরের জন্য অধিক উপকারী।
০ প্রতিদিন একই সময়ে নাস্তা করা সু-স্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান শর্ত।
০ নাস্তার উপাদান বা উপকরণ যাই হোক না কেন নাস্তা শুরু করার আগে অবশ্যই এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানি দিয়ে শুরু করবেন।

লেসের শাড়ি

বাঙালির নারীর পোশাক ঐতিহ্যে বরাবরই শাড়ি ছিল সবচেয়ে এগিয়ে। মসলিন, বেনারসী কিংবা কাতান, জামদানি এর সবই বাঙালির নারীর ফ্যাশন ঐতিহ্যে আদি অনুষঙ্গ। যুগে যুগে ফ্যাশন যেমন তার বেশ বদলিয়েছে তেমনি শাড়ির ফ্যাশনেও এসেছে পরিবর্তন। একসময় জর্জেটের ব্যাপক জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে উন্নত বিশ্বেও শাড়ির কদর আছে। সে ধারাবাহিকতায় শাড়ির সারিতে যুক্ত হয়েছে বারিজা, জর্জেট, শিফন ও সিল্কের মতো আধুনিক কাপড়। শাড়ির ফ্যাশনে এখন নতুন সংযোজন লেসের শাড়ি। শাড়ির এই ভিন্ন ধারা নিয়ে কড়চা’র মূল ফিচার আয়োজন লেসের শাড়ি।

Monday, June 22, 2009

যত্নে থাকুক চামড়ার পণ্য

দৈনন্দিন জীবনে আমরা কেউই চামড়াজাত পণ্যের ব্যবহারে পিছিয়ে নেই। ফ্যাশন কি প্রয়োজন−সবকিছুতেই এর ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চামড়াজাত পণ্য ব্যবহার করছেন; কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন এর যত্নের দিকটি?
যত্ন সব সময়ই প্রয়োজন, কিন্তু বর্ষায় চামড়াজাত পণ্যের একটু বাড়তি যত্ন নিতে হয়। চামড়াজাত পণ্যের যত্নে পরামর্শ দিয়েছেন লেদার টেকনোলজি কলেজের লেদার প্রোডাক্ট টেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক সবুর আহমেদ।
বর্ষায় পানির সংস্পর্শ বা স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় চামড়ার পণ্যে ছত্রাক পড়ে, যা চামড়ার গুণমান ক্ষতিগ্রস্ত করে। আবার তৈরির সময় ছত্রাকরোধী রাসায়নিক কম দেওয়া হলে প্রতিকুল পরিবেশে এসব পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে একটু যত্ন ও সচেতনতায় এ থেকে রক্ষা পেতে পারে আপনার শখের পণ্যটি।
চামড়ার পণ্য ব্যবহারের পর অবশ্যই তা ব্রাশ বা অন্য কিছু দিয়ে পরিষ্ককার করতে হবে। তারপর সহজে আলো-বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে রাখতে হবে। তাহলে তাতে ছত্রাক পড়বে না। আর ব্যবহার্য পণ্যটি যদি ভিজে যায় তাহলে তাতে নিউজপ্রিন্ট কাগজ দিতে পারেন। এটি বাড়তি পানি শুষে নেবে। প্রয়োজনে পণ্যটি রোদে শুকাতে দিন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, যেন কোনোভাবেই কড়া রোদ না হয়। কড়া রোদ পড়লে পণ্যটি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চামড়ার পণ্য ব্যবহারে আরও লক্ষ রাখতে হবে, একই পণ্য যেন পরপর বেশি দিন ব্যবহূত না হয়। এসব পণ্য অদল-বদল করে ব্যবহার করাই ভালো। এতে যেমন যত্ন নেওয়ার সুযোগ থাকে, তেমনি পণ্যের ওপর চাপও কম পড়ে। তবে এটি একেবারেই ফেলে রাখবেন না, তাহলে গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সব সময় মনে রাখতে হবে, চামড়ার পণ্য যথাযথ পরিষ্ককার করে শুকনো স্থানে রেখে ব্যবহার করলে বেশি দিন টেকসই হয়। চামড়াজাত পণ্য যদি আরও ভালো রাখতে চান, তাহলে সিলিকা জেল ব্যবহার করতে পারেন। প্যাকেটে মোড়ানো অবস্থায় এটি বাজারে পাওয়া যায়। চামড়াজাত পণ্যের পাশে থাকলে এটি সেসব পণ্য থেকে দ্রুত পানি শুষে নেয়। ফলে পণ্যটি ভালো থাকে ও টেকসই হয়।

যত্নে নখ সুন্দর

সুর তাল লয়ের মিলনে যেমন হয় গানের সৌন্দর্য তেমনি মুখ, চোখ, হাত, পা, নখ আলাদা আলাদাভাবে সুন্দর হয়ে উঠলে ফুটে ওঠে পুরো সৌন্দর্য। অর্থাৎ সৌন্দর্য বিচারে আপনার মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত প্রতিটি ব্যাপারই হতে হয় ঠিকঠাক। আর তাই আপনার হাতের ও পায়ের নখগুলো হতে হবে পরিমাপমতো ও সুসজ্জিত। নখের এখনকার ফ্যাশনের পাশাপাশি নখের যত্ন নিয়ে বলেছেন রূপবিশেষজ্ঞ নাহিন।

স্পার অন্য ভুবন

আস্তে-ধীরে সন্ধ্যা নামে। নিয়ন বাতির আলোয় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে নগর। এয়ারপোর্ট রোড ধরে নিকুঞ্জ-২-এ পা দিলেই হাতের বাঁ দিকে ঢাকা রিজেন্সি। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আসতে থাকে দেশি-বিদেশি অতিথিরা। বর্ণে-গন্ধে নতুনভাবে হাজির হয় ঢাকা রিজেন্সি। ১৩ জুলাই এ হোটেলটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করে বিলাসবহুল স্পা সেবার। যেটিকে হোটেল কর্তৃপক্ষ সিয়াম স্পা নামে পরিচয় করিয়ে দেয়। স্পার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে আসা থাই রাষ্ট্রদুত চালের পল থানচিৎ বলেন, ‘সিয়াম স্পা শুধু থাইল্যান্ডে নয়, পৃথিবীর বহু দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। আমার বিশ্বাস, এটি বাংলাদেশেও জনপ্রিয় হবে।’ এ ধরনের স্পা সেবা চালু করার জন্য তিনি হোটেল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান এবং এই স্পার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।
স্পা-ঘরের কাছাকাছি যেতেই চেনা-অচেনা গন্ধ যে কাউকে টেনে নিয়ে যাবে ভেতরে। থাইল্যান্ডের অচেনা সংগীত ভেসে বেড়ায় এ ঘর থেকে ও ঘরে। আলো-আঁধারিতে ঘেরা ঘরগুলোর কোণে কোণে প্রদীপ। দেশি-বিদেশি তরতাজা ফুলে আরও মোহনীয় হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। স্পা সেবার পাশাপাশি আছে স্যালন। থাইল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী তেল দিয়ে তৈরি অ্যারোমা থেরাপি, জাকুযি, হাইড্রো থেরাপি, হারবাল সনা, হট কম্প্রেস অ্যান্ড মিনারেল বাথের জন্য আছে আলাদা ঘর। প্রতিটি ঘরই বৈচিত্র্যে অনন্য। কোনোটা কাঠের তৈরি, তো কোনোটা পাথরের, আবার কোনোটা সম্পুর্ণ কাচে ঘেরা। প্রায় পাঁচ হাজার স্কয়ার ফুট জায়গাজুড়ে তৈরি এ স্পা সম্পর্কে ঢাকা রিজেন্সির জেনারেল ম্যানেজার সাহিদ হামিদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের এ সিয়াম স্পার উদ্বোধন করতে পেরে আমরা গর্বিত। আমাদের অনেক দিনের স্বপ্ন আজ বাস্তবের মুখ দেখছে।’ অনুষ্ঠানে আরও উপস্িথত ছিলেন ঢাকা রিজেন্সির সভাপতি আরিফ মোতাহার, ব্যবস্থাপনা পরিচালক কবির রেজা, সিয়াম এন্টারটেইনমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সমিয়োথ চাওপাকনাম প্রমুখ। রাত বাড়তে থাকে। সব ঘরেই মানুষের ভিড়। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে ব্যস্ত পায়ে হেঁটে বেড়ায় সুদুর থাইল্যান্ড থেকে উড়ে আসা মাসুজরা।

ক্র্যাশ ডায়েটের ফর্দ

শরীরের ওজনটা যখন আর কিছুতেই বশে আনা যায় না মূলত তখনই পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা শরণাপন্ন হন ক্র্যাশ ডায়েটের। এর উদ্দেশ্য বেমালুম মুটিয়ে যাওয়া মানুষদের অস্বাভাবিক ওজন এক সপ্তাহ বা এ ধরনের কোনো নির্ধারিত কম সময়ে অনেকটা কমিয়ে আনা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওজনভেদে বিভিন্ন মানুষের জন্য বিভিন্ন রকম ক্র্যাশ ডায়েট দেয়া হলেও গড়পরতা মানুষদের কথা চিন্তা করে কড়চা’র এবারের ডায়েট বিভাগে এক সপ্তাহের একটি ক্র্যাশ ডায়েট চার্ট তুলে ধরা হলো।

বাবা-সন্তান এবং মা

সফোক্লিসের বিখ্যাত নাটক ‘রাজা ঈদিপাস’ যে বিখ্যাত গ্রিক ট্র্যাজেডি’র জন্ম দিয়েছিল সেই ট্যাজেডি’র আলোকেই একটা অদ্ভূত রকমের তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছিলেন মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েড। ‘ইডিপাস কমপ্লেক্স’ নামের এই তত্ত্ব অনুযায়ী বাবার প্রতি মেয়েদের কিংবা মায়ের প্রতি ছেলেদের নাকি একটা বাড়তি টান থাকে। কিন্তু যেখানে মা-বাবা আর প্রতিটি সন্তানের আদর-ভালোবাসাতেই সৃষ্টি হয় একটি সুখের পরিবার সেখানে এই ফ্রয়েডিয় বিভাজনকে স্থান দিতে গেলে পুরো বিষয়টাই হয়ে পড়ে প্রশ্নবিদ্ধ। একথা হয়তো সত্য যে মা-বাবার কাছে তার প্রতিটি সন্তান যেমন সমতুল্য তেমনি সন্তানের কাছেও মা-বাবার অবস্থান একই সমান্তরালে। তবু সন্তান লালন-পালনের প্রক্রিয়া আর সামাজিক বাস্তবতার কারণেই অনেক সময় সন্তানের সাথে বাবা কিংবা মায়ের একটা অদৃশ্য দূরত্ব তৈরি হয়। কখনো যেমন এটির শিকার হন মায়েরা তেমনি সন্তানের দূরত্ব তৈরি হতে পারে বাবার সাথেও। তবে দূরত্বের ধরন আর কারণ যাই হোক না কেন, সন্তান বেড়ে ওঠার সময়টিতে এই দূরত্ব দূর করার দায়িত্ব কিন্তু মা-বাবার উপরই বর্তায়।

নখের যত্ন


বিভিন্ন গল্প উপন্যাসে উঠে এসেছে প্রিয়ার হাত-পায়ের সৌন্দর্য নিয়ে নানা কথা। বিজয়ী হয়ে আনন্দ উল্লাসে ভি-সূচক হাতের দু’আঙ্গুল উর্ধ্বে তুলে ধরা। দৃপ্ত পায়ে সম্মুখে এগিয়ে চলা। পায়ের পরিচ্ছন্নতা দেখে মানুষের চরিত্র বুঝে নেয়া যায় সহজে। আর এই হাত পায়ের সৌন্দর্যের মূল হচ্ছে নখ। হাত-পা সুন্দর রাখতে হলে নখ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। গৃহিণীদের জন্য হাতের নখের সৌন্দর্য রক্ষা করা একটু কঠিন। নখ সুন্দর রাখতে পানির ব্যবহার যত কম করা যায় ততই ভাল। কিন্তু গৃহিনীদের প্রায় সকল কাজেই পানির ছোঁয়া আছে। একটুখানি ইচ্ছা এবং সচেতনতা থাকলেই সম্ভব নখের যতœ নেয়া। নখের যতেœ ম্যানিকিওর ও পেডিকিওর জরুরি।

Sunday, June 21, 2009

অগ্নিকান্ড: সতর্ক থাকুন

আগুনকে বলা হয় সর্বভুক। যতক্ষণ পর্যন্ত আগুন মানুষের নিয়ন্ত্রণে থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত তা মানুষের বন্ধু। কিন্তু সতর্কহীনতার কারণে তা আবার শত্রু হতে বিন্দুমাত্র দেরি করে না। সতর্কতার অভাবে অগ্নিকান্ড ঘটতে পারে আপনার প্রিয় বসতবাড়ি, অফিস কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে। তাই আপনাকে অবশ্যই তিনটি প্রধান বিষয় মাথায় রাখতে হবে। প্রথমত, অগ্নিকান্ডের কারণ। দ্বিতীয়ত, এ থেকে সতর্ক থাকার নিয়মকানুন আর তৃতীয়ত, অগ্নিকান্ডের পর করণীয়।

ফ্রিজের যত্নআত্তি

এই গরমে হাঁপিয়ে ওঠা আপনাকে দুদন্ড শান্তি দিতে পারে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি। শহুরে গেরস্তালিতে আপনি তো নলকুপের ঠান্ডা পানি পাচ্ছেন না। ঘরের ফ্রিজটি তাই আপনার বন্ধু। অন্যান্য আসবাব, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি সংসারে পরে এলেও সমস্যা নেই। কিন্তু অপরিহার্য ফ্রিজ। ফ্রিজ ছাড়া সংসার চলেই না। ব্যবহারের পাশাপাশি তাই দরকার এ যন্ত্রটির যত্ন নেওয়া। পরিষ্ককার-পরিচ্ছন্নতাসহ আনুষঙ্গিক যত্নে ফ্রিজ ভালো থাকবে অনেক দিন। তা ছাড়া খাবারের সঠিক মান বজায় রাখার জন্য নিয়মিত ফ্রিজ পরিষ্ককার-পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। আজকের নকশায় তাই দেওয়া হলো নিয়মিত ফ্রিজ পরিষ্ককারের নানা তথ্য।

Wednesday, June 17, 2009

রুটিন মেনে ফিটনেস

এই পৃথিবীতে সুখ জিনিসটা বড্ড বেশি আপেক্ষিক। এমনকি ‘স্বাস্থ্য সকল সুখের মুল’ এই আপ্তবাক্যটি যারা দীর্ঘদিন থেকে আউড়ে যাচ্ছেন তাদের জন্য স্বস্থ্যও কম আপেক্ষিক কোনো বিষয় নয়। বিষয়টা বুঝতে হলে দু’চার তল্লাটে খোঁজ নেয়ার দরকার নেই। শুধু আশপাশের পাঁচ-দশজন মানুষের কথাই একবার ভাবুন না কেন। দেখবেন এরই মাঝে একদল আছে যাদের বেজায় দুশ্চিন্তা তাদের রোগাপাতলা শরীরটি নিয়ে। অন্যদিকে আরেক দলের তো নাওয়া-খাওয়াই হারাম হয়ে যাচ্ছে তাদের অকারণ মুটিয়ে যাওয়ার কারণ খুঁজতে খুঁজতে। সে যাই হোক, এ দু’দলের জন্যই প্রকৃত নিদান যে পর্যাপ্ত খাওয়া আর কার্যকর ব্যায়াম সেটি নতুন করে না-ই বা বললাম। তবে পত্রিকার পাতা থেকে বিশেষজ্ঞের চেম্বার - সঠিক ফিটনেসের জন্য সবার আগে চাই এই জানা বিষয়গুলো খানিকটা মানার অভ্যাস গড়ে তোলা। আর কি জানবেন কিংবা কি মানবেন সেটি এ বেলা আরো একবার বুঝিয়ে দেয়ার জন্যই নতুন করে পুরোনো কিছু মনে করিয়ে দেয়া। তবে এ রুটিনে চোখ বোলানোর আগে আরো একবার সতর্কবাণী - রুটিন পড়ে তা মানবার অভ্যাসটা কিন্তু গড়ে তুলতে হবে নিজ দায়িত্বেই।

পাঁচ ধাপে ফিটনেস

যারা আগ্রহ নিয়ে এ লেখাটা পড়ছেন ধরেই নেয়া যায় যে ফিট হবার একটা গোপন ইচ্ছা তাদের মনে আছে। এবার এই ইচ্ছেটাকে সত্যিকার অর্থে বাস্তবে রূপ দিতে চাইলে প্রথমেই ঝটপট একটু পরামর্শ সেরে ফেলুন একজন পুষ্টি বিশেষজ্ঞ বা এ সংক্রান্ত সঠিক জ্ঞান আছে এমন কারো সাথে। এবার এই সমঝদার লোকটিকে নিয়ে আপনার ওজন আর উচ্চতা অনুযায়ী তৈরি করে ফেলুন একটি ডায়েট চার্ট। প্রায়শই লক্ষ্য করা যায় যে নিজের উচ্চতা আর ওজনের প্রতি খেয়াল না রেখে আমরা গড়পরতা যে খাদ্য ও ব্যায়াম অনুসরণ করি তা আদতে খুব একটা কাজে আসে না । আর তাই ডায়েট চার্ট, অর্থাৎ সারা দিনে কি খাবেন বা কতোটুকু ব্যায়াম করবেন সেটি ঠিক করার সময় উচ্চতা ও ওজনের বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল হয় যদি পুষ্টি বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে প্রতিদিন কি খাবেন এবং কি ধরণের ব্যায়াম করবেন তার একটা রুটিন বানিয়ে নিতে পারেন। রুটিন বানানোর পর এ রুটিন অনুযায়ী সবকিছু ঠিকমতো এগুচ্ছে কি না সেটি আলাদা একটি খাতায় নোট করে একধরণের ‘চেক এন্ড ব্যালেন্স’ গড়ে তোলার চেষ্টা করুন।

ফিটনেস রুটিনের এই প্রথম ধাপটি সঠিকভাবে অনুসরণ করা সম্ভব হলে পা দিন দ্বিতীয় ধাপে। এ ধাপে আপনার করণীয় হলো ঘুম থেকে উঠে খাটে শুয়েই ১০ মিনিট হাত-পা টান করে গভীর শ্বাস নেয়া এবং কমপক্ষে ৩০মিনিট খোলা জায়গায় সাধারণের চেয়ে দ্রুতগতিতে হাঁটা।

ফিটনেসের তৃতীয় ধাপ হলো দ্বিতীয় ধাপের এক্সারসাইজের সাথে বাড়তি ১০ মিনিট যোগ করে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ বা ৫-১০ বার ওঠাবসা করা। সেই সাথে অফিসে কাজের ফাঁকে খানিকটা হাঁটা-চলার অভ্যাসও গড়ে তুলুন এই তৃতীয় ধাপেই।

ফিটনেসের চতূর্থ এবং পঞ্চম ধাপে খাওয়ার মান ও পরিমাণ ঠিক রেখে আপনাকে নজর দিতে হবে রাতের অবসর ও ছুটির সময়ের দিকে। এক্ষেত্রে চতূর্থ ধাপ হিসেবে রাতের খাবারের পর ১৫ মিনিট স্বাভাবিক গতিতে হাঁটা বা পায়চারি করার অভ্যাস রপ্ত করুন। আর এই ধারার ফিটনেসের সর্বশেষ ধাপ হিসেবে ছুটির দিনে শক্তি ক্ষয় হয় এমন কোনো কাজে নিজেকে নিয়োজিত করুন। এটা হতে পারে বাড়ির অতি প্রয়োজনীয় কোনো কাজ কিংবা কোনো ধরণের ঘাম-ঝড়ানো খেলা। তবে এতোসব করে শরীর থেকে যে শক্তি ক্ষয় হবে তা পুষিয়ে নিতে রোগা এবং মোটা দু’দলকেই খেতে হবে ডায়েট চার্টের কথা মাথায় রেখেই।

ঠোঁটের দৈনন্দিন যত্ন

০ প্রতিদিন ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে ঠোঁট পরিষ্কার করুন। মাঝে মধ্যে ব্রাশ দিয়ে ঠোঁটটা ব্রাশ করে নেবেন। এতে মরাকোষ ঝরে যাবে।
০ সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির হাত থেকে বাঁচতে হলে রোদে বের হওয়ার আগে এসপিএফ যুক্ত লিপকম বা নারকেল তেল লাগিয়ে তার উপর লিপস্টিক লাগাবেন।
০ রাতে ঘুমুতে যাওয়ার আগে অবশ্যই ক্রিম বা ভেজা তুলোর সাহায্যে লিপস্টিক তুলে ফেলে ভেসলিন লাগিয়ে শোবেন।
০ বার বার জিভ দিয়ে ঠোঁট কামড়ানো খুব খারাপ অভ্যাস। এটা ত্যাগ করার চেষ্টা করুন।
০ ভিটামিন সি’র অভাবে ঠোঁটের কোণা ফেটে যায়, মুখের ভেতর আলসার হয়। এর জন্য ভিটামিন সি যুক্ত ট্যাবলেট খান ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

রেফ্রিজারেটরকে সুস্থ রাখুন

০ দেয়াল ঘেষে কখনও ফ্রিজ রাখবেন না। দেয়ালর থেকে কমপক্ষে ১৫ সেন্টিমিটার দূরে রাখুন। যাতে ফ্রিজের পেছনে থেকে ভালভাবে বাতাস চলাচল করতে পারে।
০ ফ্রিজের সামনের দিকটা একটু উচু আর পেছনটা একটু নিচু করে বসান। এতে সামনের দরজাটা সহজে বন্ধ হবে।
০ রোজ ১ বার ফ্রিজের ভেতরটা পরিস্কার করুন। সপ্তাহে ১ বার পুরোটা খালি করে পরিস্কার করতে চেষ্টা করুন। নইলে খাবার থেকে ভেতরে দুর্গন্ধ তৈরি হবে।
০ নতুন ফ্রিজ কিনে এনেই তাতে খাদবস্তু রাখবেন না। কমপক্ষে ১ ঘন্টা চালান। তারপর ব্যবহার শুরু করুন।
০ খাবারের উপরে পলিথিনের মোটা আস্তরন থাকলে খাবার সঠিক ভাবে ঠান্ডা হবে না। তাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে এমন খাবার কাগজে মুড়িয়ে রাখুন।
০ কাঁচা তরকারি পলিথিনে মুড়িয়ে রাখলে বেশি টাটকা থাকবে।
০ ফলের মধ্যে কলা, তরমুজ, ফুটি, খরমুজ প্রভৃতি ফল ফ্রিজে রাখবেন না। কারণ এগুলো ঠান্ডা হলে দুর্গন্ধ ছড়ায়।

ননস্টিকের যত্নআত্তি

আধুনিক যুগে চাই আধুনিক রসুই ঘর। এখনকার স্মার্ট গৃহিণীরা তাই আধুনিক সব তৈজসপত্র দিয়ে সাজাতে চায় তাদের রান্নাঘর। রান্না এখন শুধু ক্ষুধা নিবারণের উপাদান না থেকে বরং তা একটা শিল্পতে পরিণত হয়েছে। আর তাই স্মার্ট গৃহিণীর রান্নাঘরের প্রথম পছন্দ ননস্টিক তৈজসপত্র। শুধু জিনিস দিয়েই ঘর ভরিয়ে ফেললে হবে না, তার চাই সঠিক ব্যবহারের নিয়ম এবং সঠিক উপায়ে যতœ। আপনার শখের ননস্টিক তৈজসের যতেœর কিছু খুঁটিনাটি জেনে নেয়া যাক-
০ রান্নার পরপরই বা সাথে সাথে ননস্টিক বাসন পানি বা সাবান পানিতে ডুবাবেন না। এতে করে কোটিংয়ে চিড় ধরে যাবে এবং পাত্রে সমানভাবে হিট ডিস্ট্রিবিউশন হবে না।
০ ননস্টিক পাত্র সবসময় পরিষ্কার করবেন প্লাস্টিক জালি বা নরম স্পঞ্জ দিয়ে। খসখসে, স্টিল বা মেটালের তৈরি কোনো প্রোডাক্ট দিয়ে ননস্টিক বাসন ঘষবেন না।
০ রান্না শেষ করার পর পাত্রটি ঠান্ডা হলে তা কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এতে করে পাত্রে জমে থাকা খাবার কণা নরম হবে এবং এটা পরিষ্কার করতে সুবিধা হবে। না হলে পাত্রে জমে থাকা খাবার কণা তুলতে বেশি ঘষাঘষি করতে হবে।
০ বেশি ক্ষারযুক্ত সাবান, ছাই, বালি এইসব দিয়ে কখনোই ননস্টিক বাসন ধুবেন না। ব্যবহার করুন লিক্যুইড সোপ।
০ ননস্টিক বাসন পরিষ্কার করার পর শুকিয়ে গেলে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে তুলে রাখুন।
০ মাছ, ডিম বা পাত্রে লেগে যায় এমন সব খাবার ভাজার জন্য কাঠ, প্লাস্টিক বা সিলিকনের হাতা বা চামচ ব্যবহার করুন। স্টিলের খুন্তি বা কাঁটা চামচ দিয়ে খাবার নাড়াচাড়া করলে কোটিং উঠে যেতে পারে।
০ ননস্টিক প্যানে ডেজর্ট বা মিটলোফ তৈরি করে খাবার বের করার সময় রাবার বা সিলিকনের স্প্যাচুলা ব্যবহার করুন। তা না হলে ছুরি বা স্টিকের চামচ ব্যবহার করলে সহজেই মরিচা পড়ে যাবে।
০ খুব বেশি টক কোনো খাবার ননস্টিক কুকওয়্যারে রান্না না করা ভাল। বেশি টকে ননস্টিকের কোটিং তাড়াতাড়ি নস্ট হয়ে যায়।

বাড়তি যত্ন
০ গাদাগাদি করে স্টিল বা অ্যালুমিনিয়ামের সঙ্গে ননস্টিক বাসন রাখবেন না। এতে স্ক্র্যাচ পড়ে যাবে। ঢাকনা হিসেবে শুধু ননস্টিক প্যান কভার ব্যবহার করুন।
০ প্রথম ব্যবহারে আগে আপনার ননস্টিক প্যানটি হালকা গরম পানিতে লিক্যুইড সোপ দিয়ে ধুয়ে নিবেন। এরপর শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে অল্প তেল দিয়ে গ্রিজ করে নিবেন।
০ অনেক দিন ব্যবহারের ফলে যদি ননস্টিক বাসনে সাদা দাগ দেখা দেয় তবে প্যানে অল্প পানি দিয়ে একটু ভিনেগার মিশিয়ে অল্প আঁচে ৫-১০ মিনিট কাঠের হাতা দিয়ে নাড়ুন। দাগ ওঠে যাবে।
০ ননস্টিক বাসন ধোয়ার পর হ্যাঙ্গিং র‌্যাকে ঝুলিয়ে রাখুন বা তুলে রাখতে চাইলে নরম কাপড় বা তোয়ালে মুড়িয়ে স্টোর করুন।

চুলের কিছু এক্সকুসিভ টিপস

০ লেবু, কিউয়ি সমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। ফ্রুট অ্যাসিড চুলের তেলতেলে ভাব ও ময়লা পরিষ্কার করে। চুলকে সজীব করে তোলে।
০ গ্লাসে বিয়ার ঢেলে রেখে দিন। এবার এ ফ্ল্যাট বিয়ার শ্যাম্পু করার পর পুরো চুলে ভাল করে লাগান। বিয়ার লাগানোর পর চুল ধোয়ার প্রয়োজন নেই কারণ বিয়ারের গন্ধ এমনি এমনিই চলে যাবে।
০ ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান। বিশেষ করে ফল, শাকসবজি।
০ ডিম, বাঁধা কপিতে ভিটামিন বি’র সঙ্গে সঙ্গে সালফারও থাকে যা খুশকি দূর করার জন্য উত্তম।
০ মাঝে মাঝে শ্যাম্পুর সঙ্গে দু’টো ভিটামিন-ই ক্যাপসুল মিশিয়ে নিন।
০ মাথা ম্যাসেজ করার সময় নখ দেবেন না।

ও বন্ধু আমার

বন্ধুত্বের কি আর শেষ আছে! শিশুকাল থেকে বুড়ো কাল পর্যন্ত সববয়সেই মানুষের বন্ধুত্ব হয়ে থাকে। রাস্তায় চলতে কিংবা নতুন কোনো আড্ডায় নতুন নতুন মুখের সাথে আমাদের পরিচয় ঘটছেই। এরই মধ্যে কারো সাথে আমাদের মনের মিল কথার মিল ঘটলেই তার সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। তার সাথে কথা বলতে মন ব্যাকুল হয়। হয়তো এটাকেই বন্ধুত্ব বলে। কারো বন্ধু কম থাকে কারো বন্ধু বেশি থাকে। গম্ভীর প্রকৃতির মানুষের বন্ধু একটু কম হয়। আর কেউ কেউ আছে যারা যেচে মানুষের সাথে কথা বলতে পছন্দ করে। তাদের বন্ধুর সংখ্যাও বেশি হয়। নতুন বন্ধুত্বের সংখ্যা তাদের বাড়তেই থাকে। তবে আমাদের সমাজে মেয়েদের মেয়ে বন্ধু আর ছেলেদের ছেলে বন্ধুত্বের ঘটনা সাধারণত বেশি দেখা যায়। খুব কম মেয়েদের ছেলে বন্ধু থাকে। মেয়েদের বন্ধুত্বের বিষয়টা আমাদের সমাজে বিশেষ করে ভাল চোখে দেখে না। আর বিয়ের পর যদি থাকে ছেলে বন্ধু আর তাদের সাথে মিশলে তো কথায় নেই। অন্য ছেলের সাথে বন্ধুত্বকে মেনে নেয়ার প্রশ্নই আসে না পরিবারের কাছে। ঘটতে পারে নানা সমস্যা। এতে নানা ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন বা অপবাদের মধ্যে পড়তে হতে পারে।

এই যেমন তনিমা। বাচ্চাকে নিয়ে প্রতিদিন সকালে স্কুলে গিয়ে স্কুল ছুটি হওয়ার পর আবার বাচ্চাকে নিয়ে ফিরতে হতো। এই তিন ঘন্টা বাইরে অপেক্ষা করাটা তার কাছে বেশ অস্বস্থিকর লাগতো। মহিলাদের আড্ডায় বসলে সেখানে আবার মহিলারা অন্যের সমালোচনা ছাড়া আর কোনো গল্পই যেনো জানতো না। তনিমার এসব ভাল লাগতো না। তনিমা লক্ষ্য করল প্রতিদিন একটা লোক একাকী বসে বই কিংবা পত্রিকা পড়ে। স্কুল ছুটির পর বাচ্চাকে নিয়ে চলে যায়। তনিমা একদিন যেচে তার সাথে আলাপ করতে গেল। লোকটা একটা পত্রিকার সাব এডিটর। তার স্ত্রী ব্যাংকার। তাই ছেলেকে প্রতিদিন তিনিই স্কুলে নিয়ে আসেন। এভাবে সেই লোকটার সাথে প্রতিদিন বসে আড্ডা দিত তনিমা। লোকটা অনেক পড়াশোনা করতো। তার কাছ থেকে বই পড়ার অভ্যাসটাও হয়ে গেল তনিমার। সে অনেক বই পড়ে ফেলেছে তার কাছ থেকে নিয়ে। সেই তিন ঘন্টা সময় তাদের গল্পের ভিতর কীভাবে কেটে যায় তা বুঝতেই পারত না তনিমা। মাঝে মাঝে যখন দাঁড়িয়ে থেকে বোর হত তখন তারা রাস্তায় হাটত। রাস্তার ওপাশে কফিশপে গিয়ে গল্পগুজব করত। তবে রাজনীতি, সিনেমা, নাটক, ফ্যাশন, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, ছেলের ভবিষ্যত এসব নিয়েই বেশি আলোচনা হতো তাদের। তাদের মধ্যে খুব সুন্দর একটা বোঝাপড়া গড়ে উঠতে থাকলো। কোনো দিন তাদের একে অপরের সাথে দেখা না হলে বেশ মিস করত একে অপরকে। মাঝে মাঝে টেলিফোনে কথাও হতো টুকটাক। কিন্তু তারা এটাকে প্রেমের প্রথম অধ্যায় বা অন্য কোনো সম্পর্ক বলতে নারাজ। তনিমার ভাষায় এটা স্রেফ বন্ধুত্ব, প্রেম নয়। কারণ আমার স্বামীর প্রতি আমার আকর্ষণ বা ভালোবাসা তো কমেনি। সন্তান, সংসার বা কেরিয়ার কোনও ব্যাপারেই অবহেলা করতে মন চায় না কখনোই। সেই ভাবে দেখতে গেলে আমি আগেও যা ছিলাম এখনও তাই আছি। আমার সংসারের প্রতি আমার টান এতটুকুও কমেনি। শুধু আমার একজন নতুন বন্ধু হয়েছে যে নানা দিক থেকে আমাকে ভাল পরামর্শ, সহযোগিতা করে চলছে। কথাটা যদিও তনিমা তার স্বামীকে এখনো বলতে পারেনি। কারণ তার ভয় এ সম্পর্ককে যদি তার স্বামী মেনে না নেয় বা খারাপ ধারণা পোষণ করে। তনিমা বলে জানিনা এ সম্পর্ক আমার স্বামী কেমন ভাবে নিবে। তবে একদিন হয়তো বলেই দিব। কারণ আমাদের সম্পর্কের মধ্যে তো তিলমাত্র অপরাধবোধ নেই।

নতুন ভাবনা
০ বন্ধুত্ব নানারকম হতে পারে। বন্ধুর সাথে আপনি ঠিক কতটা অন্তরঙ্গ হবেন, সেটা নিজের বুদ্ধি বিবেচনা দিয়ে ঠিক করে নিন। তবে এই কাজগুলো এমনভাবে করবেন যাতে বন্ধুত্বের সম্পর্ক কোনও ভাবে নষ্ট না হয়।
০ আপনার বন্ধুদের সাথে নিজের ব্যক্তিগত সমস্যা (বিশেষ করে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক) নিয়ে যত কম আলোচনা করবেন, ততই ভাল। কারণ এসব নিয়ে পরে দাম্পত্য সমস্যা হতে পারে।
০ বন্ধুত্ব একটা চিরন্তন সম্পর্ক। বয়স, অবস্থান, বা লিঙ্গ কখনও বন্ধুত্বের পথে কোনো বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। মনের ক্লান্তিকে ঝেরে ফেলতে বন্ধত্বের কোনো বিকল্প নেই। সেই জন্য কারো সাথে মনের মিল হলে তার সাথে বন্ধুত্ব করতেই পারেন।

মনে রাখুন
০ আপনার নতুন বন্ধুর ব্যাপারে আপনার স্বামীকে যত দ্রুত সম্ভব অবশ্যই জানাবেন। এতে ভবিষ্যতে ভুল বোঝাবুঝির সম্ভাবনা থাকবে না। দরকার হলে তাকে তার পরিবার সহ নিমন্ত্রণ জানাতে পারেন। এতে তিনি হয়তো আপনাদের ফ্যামিলি ফ্রেন্ডও হয়ে উঠতে পারেন।
০ বন্ধুর সঙ্গে গল্প, আড্ডার সব বিষয়ের বিবরণ বাড়িতে ফিরে না বলাই ভাল। সবার সম্পর্কের একটা ব্যক্তিগত দিক আছে, সেটাকে সম্মান দিয়ে চলাই মঙ্গলজনক। এতে অসম্মানজনক কিছু না হবার সম্ভাবনাই বেশি।

অফিসের সাজ পোশাক

অফিসে কাজটাই মূখ্য, সেখানে পোশাকের দিকে অতটা নজর না দিলেও চলে-এমন ধারণা বর্তমান যুগে অচল। স্মার্ট, পরিচ্ছন্ন গেট-আপ আপনাকে করবে আত্মবিশ্বাসী যা অফিসের কাজেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাই আপনার সাজ পোশাকও যখন ব্যক্তিত্বের মাপকাঠি হয়ে ওঠে তখন প্রয়োজন এ সম্পর্কে সঠিক ধারণা।
চাকরির প্রথম দিন। কী পোশাক পরে প্রথম দিন কাজে যোগ দিবেন, আপনার অফিসের ধরন বুঝুন এবং তারপর সিদ্ধান্ত নিন। শাড়িতে স্বচ্ছন্দবোধ না করলে ফরমাল ফুল ি ভ সালোয়ার কামিজ পড়তে পারেন অথবা বিজনেস স্যুটেও মেয়েদের বেশ মানিয়ে যায়। কী ধরনের গহনা, জুতা বা ব্যাগ ব্যবহার করবেন তা নিয়েও ভাবনা চিন্তার প্রয়োজন আছে। কর্মক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করার জন্য কর্মদক্ষতার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন এক সুন্দর পরিশীলিত ব্যক্তিত্ব। মিলেমিশে কাজ করার ক্ষমতা, সমস্যা হ্যান্ডল করতে পারা। কম সময়ে নিখুঁত কাজ করার ক্ষমতা ছাড়াও আরও যে জিনিসটা সবাই লক্ষ করেন তা হল আপনার ড্রেস সেন্স। তাই ড্রেস সেন্স নিয়ে কিছু পরামর্শ-
০ অফিসে জয়েন করার আগে দেখে নিন বেশির ভাগ কর্মচারী কী ধরনের পোশাক পরে অফিসে আসেন। যেমন স্কুল বা কলেজে শিক্ষকরা সাধারণত বাঙালী পোশাক (শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ) পরেন। আবার কর্পোরেট অফিসের লোকজন বিজনেস স্যুটেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
০ আপনার প্রাথমিক পোশাক বাছাইপর্ব এই ভিত্তিতে করুন।
০ খেয়াল রাখবেন অফিসের পোশাক যেন রং, ডিজাইন বা কাটের দিক দিয়ে উগ্র বা লাউড না হয়।
০ শীতের দিনে গাঢ় রঙের পোশাক পরুন। সঙ্গে নিন মানানসই শাল, কার্ডিগ্যান বা ব্লেজার। পরনের পোশাকের সাথে শীতের পোশাকের রঙের মধ্যে যেন অবশ্যই সামঞ্জস্যতা থাকে।
০ গরমের দিনে অফিসের পোশাকের জন্য প্যাস্টেল শেড বাছাই করুন। যারা এয়ারকন্ডিশনড এনভায়রনমেন্টে কাজ করেন না, তাঁদের জন্য সুতি পোশাকই ভাল। কারণ সুতি কাপড় সহজেই ঘাম শুষে নেয়।
০ অফিসে অলংকার পরার ব্যাপারে, সংযত থাকুন। চওড়া নেকলেস, ঝুলন্ত দুল, বড় আংটি অফিসে একেবারেই মানায়না। ছোট পাথর বা হিরে বসানো প্লেন আংটি অনেক বেশি শোভনীয়।
০ জুতা এবং ব্যাগের রং কাছাকাছি শেডের মধ্যে বাছুন। ল্যাপটপ ক্যারি করতে হলে এমন ব্যাগ বাছুন, যাতে ল্যাপটপের সঙ্গে অন্যান্য জিনিস নিতে পারেন। বেশি পকেট বিশিষ্ট ব্যাগ ব্যবহার করুন। বিভিন্ন পকেটে জিনিস রাখার অভ্যেস করলে জিনিস খুঁজে পেতে সহজ হবে।
০ অফিসে যাবার সময় হালকা ফাউন্ডেশন এবং কম্প্যাক্ট ব্যবহার করুন। আই মেক-আপের জন্যে কাজল বা আই লাইনারই যথেষ্ট। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক লাগালেই আপনার সাজ কমপ্লিট। তবে বেড়ানোর আগে ভাল করে ডিওডোর‌্যান্ট বা পারফিউম লাগাতে ভুলবেন না।

বই গুছাবেন যখন

০ যখন বই গুছাবেন, তখন বিষয় অনুযায়ী গুছিয়ে রাখুন। এতে বই খুঁজে পেতে সুবিধা হবে।
০ বিষয় অনুযায়ী আলমারীতে সাবজেক্টের লেবেল লাগিয়ে দিন।
০ সহজেই যাতে বই খুঁজে পাওয়া যায় সেজন্য বইয়ে লেবেলিং ও ট্যাগ লাগিয়ে নিতে পারেন।
০ যদি স্যাঁত স্যাঁতে ভিজে ঘরে বই রাখেন, তাহলে বইয়ে ড্যাম্প লেগে যেতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক হোন।
০ বই গুছানোর সময় খেয়াল করুন বই ছেঁড়া কিংবা পাতা আলগা আছে কিনা, থাকলে বাঁধিয়ে নিন। সম্ভব হলে পেশাদার বাঁধাইকারীর সাহায্য নিন।
০ বইয়ে যাতে পোকামাকড় না ধরে, সেজন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন। এক্ষেত্রে বইয়ের পাতার ফাঁকে ফাঁকে নিমের পাতা রেখে দেয়া যেতে পারে।
০ বই কখনো সরাসরি রোদে রাখবেন না। এতে বইয়ের ঝকঝকে পাতাও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
০ বই গুছানোর সময় লক্ষ্য করুন র‌্যাক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আছে কিনা। কারণ র‌্যাকে ধুলোবালি থাকলে সেটা বইয়ে লেগে বই অপরিচ্ছন্ন হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক।
০ গাদাগাদি করে বই রাখবেন না। বই সোজা ভাবে রাখুন। আর বুক শেল্ফের মাপ অনুযায়ী বই রাখতে চেষ্টা করুন।
০ শেলফ থেকে বই নেওয়ার সময় পুরো স্পাইনটা ধরে বই বের করুন। শুধু উপরের অংশটা ধরে যদি বই বের করেন, তাহলে বই ড্যামেজ হয়ে যাবে।
০ শেলফ থেকে বই নিয়ে ঠিক জায়গায় রাখুন। তা না হলে ভারী বইগুলো পড়ে গিয়ে র‌্যাক অগোছালো হয়ে যাবে। নষ্ট হবে আপনার ঘরের সৌন্দর্য।
০ বই বাঁধার প্রয়োজন হলে রাবার ব্যান্ড বা শক্ত দড়ি ব্যবহার না করাই ভাল। এতে বইয়ের পাতা, কাভার ছিঁড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে না।
০ যদি দূরে কোথাও বই পাঠাতে চান, তাহলে বক্স বা বড় খামের মধ্যে ভরে পাঠান। দড়ি দিয়ে বেঁধে নয়।

মেদ ভুঁড়ি কি করি?

‘মেদ ভুঁড়ি কি করি’- এ সমস্যায় যারা ভুগছেন বা এ সমস্যার সম্মুখীন হতে যারা একেবারেই চান না উভয়ের জন্যই কিছু সাবধানতা অবলম্বন প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে একটি লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে অধিকাংশ সময়ই দেখা যায় মেদ জমে সবার আগে পেটে। তাই মেদ জমার এ উৎস স্থলের প্রতি সাবধানতা বেশি অবলম্বন করা প্রয়োজন। একটু সচেতনতা আর এর সাথে কিছু চেষ্টার সংমিশ্রণ ঘটাতে পারলেই মেদহীন সুন্দর একটি দেহের অধিকারী হয়ে উঠতে পারেন যে কেউ। আমাদের এবারের হেলথ ফিউশনের পর্বটি সাজিয়েছি মেদহীন পেট তৈরির কিছু কৌশল নিয়ে। মেদহীন পেট তৈরির জন্য খাদ্যাভ্যাসে যেমন কিছু বিষয় মেনে চলা প্রয়োজন

খাদ্যাভ্যাস
০ মেদহীন পেটের জন্য প্রথম দৃষ্টি দিতে হবে খাদ্যের দিকে। তেল-চর্বিযুক্ত খাবার যতোটুকু সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। এক্ষেত্রে যে সব খাদ্যে পুষ্টি বেশি কিন্তু স্নেহ পদার্থ কম সে ধরনের খাবার বেছে নেয়া প্রয়োজন। প্রোটিন যুক্ত খাবারের ক্ষেত্রে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন যুক্ত খাবার গুলো যেমন- ডাল, সিমের বীচি, মটরশুঁটি ইতাদি খাবারগুলো খেতে হবে।
০ মেদ কমানোর ক্ষেত্রে শশা বা ক্ষিরা জাদুর মতো কাজ করে। তাই মেদ কাটানোর অন্যতম উপায় হচ্ছে বেশি বেশি শসা বা ক্ষিরা খাওয়া।
০ মধু ও লেবুর রস এক সঙ্গে মিশিয়ে খেলেও মেদ কমে। রাতে ঘুমুবার আগে এক চামচ মধু ও এর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিলিয়ে খেতে পারেন।
০ চর্বিযুক্ত খাবার কম খাওয়ার পাশাপাশি মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতাও কমানো প্রয়োজন।
০ ভুঁড়ির পরিধি যদি দেখেন অত্যধিক বেড়ে যাচ্ছে তাহলে কয়েকদিন ভাত-রুটি খাওয়া কমিয়ে দেখতে পারেন। ভাত-রুটির পরিবর্তে খাদ্য তালিকায় শাক-সবজি ও ফলমূল সংযোজন করুন।

মাসাজ অয়েল

অলিভ অয়েল : শুষ্ক তালু প্রাণ ফিরে পায় অলিভ অয়েলের গুণে। তবে চুলে লাগানো যাবে না। অলিভ অয়েল অতিরিক্ত শুষ্ক ও ছোপ ছোপ ত্বক কোমল ও মসৃণ করে তোলে।
নারকেল তেল : ত্বকের ব্লিচ হিসেবে নারকেল তেল যে ব্যবহৃত হতে পারে তা আমরা অনেকেই জানি না। নারকেল তেল দিয়ে নিয়মিত মাসাজ করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়। পিগমেন্টেশনের সমস্যা দূর করে। এছাড়া চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায়।
ক্যাস্টর অয়েল : চোখ ও ভ্রু ঘন করতে নিয়মিত দু/তিন ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল ধৈর্য ধরে লাগান।
আমন্ড অয়েল : চোখের নীচে কালি দূর করতে ও ব্যথা, ফোলা ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করে এ তেলটি।
সরষে তেল : গরম করে তালুতে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন। দেখবেন খুশকি একেবারেই সেরে যাবে।
এপ্রিকট অয়েল : ময়েশ্চারাইজার ও ত্বকের পুষ্টির জন্য এপ্রিকট অয়েল খুবই উপকারী।
ইভনিং প্রিমরোজ : অ্যাকনে, একজিম, খুশকির ক্ষেত্রে বেশ উপকারী।
ক্যারট অয়েল : বয়সের ছাপ কমানো ও পুড়ে যাওয়া রোধে ব্যবহৃত হতে পারে এ তেল।
অ্যাভোকাডো : নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে।
হ্যাজেলনাট অয়েল : ত্বকের শৈথিল্য দূরু করে কোষ উৎপন্ন করে।

মন ভাল করা ফুলের গল্প

ফুল মানুষের মন ভাল করে, তবে সেই ফুল যদি নিজের ফোটানো হয় তবে তার আনন্দটা নিশ্চয়ই আরও দ্বিগুণ হয়। যে কেউই নিজের বাড়ির উঠোন থেকে শুরু করে বিল্ডিং বাড়ির বারান্দা পর্যন্ত ছোট্ট পরিসরে গড়ে তুলতে পারেন একরাশ চোখ জুড়ানো সতেজ ফুলের ভুবন। যেখানে আপনার নিজস্ব, পছন্দের ফুলগাছগুলো বাতাসে দুলবে। ফুলগাছ লাগানোর শ্রেষ্ঠ সময় হল শীতকাল। শীতকালে অনেকেই ব্যস্ত সময় থেকে কিছুটা সময় বের করে গাছ লাগানো ও এর পরিচর্যা করতে পারেন। তবে সতেজ ফুল পেতে কিছু সঠিক নিয়ম জানতে হবে।

যদি আপনি বীজ ফেলে চারা গজাতে চান, তবে অক্টোবর মাসের শেষের দিকে বীজ ফেলবেন এবং নভেম্বর নাগাদ টব বা বাগানে গাছ লাগাবেন। আর যারা ব্যস্ততার জন্য পারছেন না, তারা নভেম্বরে নার্সারি থেকে চারাগাছ কিনে বাড়ির বারান্দা ও ছাদের টবে বা বাগানে লাগাতে পারেন।

এছাড়া আমাদের দেশের খুব পরিচিত ফুল সরিষা। আপনি যদি বারান্দার টবে নতুনত্ব আনতে চান তবে ১৬ ইঞ্চি চবে খুব কাছাকাছি করে সরিষা গাছগুলো লাগাতে পারেন, যা সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি খাওয়ার কাজে লাগে।

ফুল গাছ রোপন করা থেকে যাবতীয় পরিচর্যা সম্পর্কে কিছু কথা-
০ ফুল গাছের ধরন বুঝে টবের আকার নির্বাচন করতে হবে। শীতকালের যেসব ফুলের গাছে চিকন সেগুলো ১০ ইঞ্চি টবে আর মোটা ও বড় ধরনের গাছ যেমন ডালিয়া, কসমস, সূর্যমূখী যেগুলো ১২ থেকে ১৪ ইঞ্চি টবে লাগাতে হবে।
০ টবে মাটি ভরার আগে কিছু নুড়িপাথর দিলে পানির সঙ্গে মাটি পড়ে যাবে না, টবে ২/৩টি ছিদ্র রাখলে চারা ভাল থাকবে।
০ টবের গাছের ক্ষেত্রে দোআঁশ বেলে এবং ভিটেমাটি ব্যবহার করতে হবে।
০ চারাগাছ লাগানোর আগে খেয়াল রাখতে হবে নার্সারির পলিব্যাগ যেন অবশ্যই খুলে ফেলা হয় এবং মাটি হালকা ভেজা থাকতে হবে।
০ চারা গাছে কখনই কাঁচা গোবর ব্যবহার করবেন না, এতে গাছ ঝলসে যাবে। তবে শুকনো গোবর, পঁচা পাতা, হাড়, চা পাতার পানি এক্ষেত্রে ভাল ফল দিতে পারে।
০ গাছে অতিরিক্ত পানি এবং কম পানি উভয়ই ক্ষতিকর। পরিমিত পানি দিতে হবে।
০ চারাগাছ লাগানোর পর এক-দুই দিন ছায়ায় রেখে ধীরে ধীরে আধো-আলো থেকে রোদে আনতে হবে।
০ যেসব গাছ বেড়ে উঠতে কাঠি লাগবে, সেগুলোতে কাঠি বেঁধে দিতে হবে।
০ মাটিতে চটা ধরলে অক্সিজেন যাওয়ার জন্য মাঝে মধ্যে চটা ভেঙে মাটি নিড়াতে হবে।

গাছের সৌন্দর্য বাড়াতে
০ গাছ ঘন ঝোপালো হলে দেখতে ভাল লাগবে। তাই গাছের অগ্রমুকুল নখ দিয়ে ভেঙে দিলে গাছ ঝোপালো হবে।
০ গাছের পুরোনো ডালপালা ছাঁটাই করলে নতুন ডালে বড় ফুল আসবে।
০ নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করে গাছের শক্তি বাড়াতে হবে। মাঝে মধ্যে গোবর ও ভিটেমাটির সার বানিয়ে গাছের গোড়ায় দিতে হবে।

পোকামাকড় দমন
বড় নার্সারিগুলোতে গাছের কীট পতঙ্গ রোধের কীটনাশক পাওয়া যায়। পোকার হাত থেকে গাছ রক্ষার জন্য নিমপাতা ভেজানো পানি গাছের পাতায় ছিটিয়ে দিতে পারেন। তাই এখন আর বাজারে কেনা ফুলে নয় নিজের বাগান থেকেই ফুল তুলে, ঘরের ফুলদানির শোভা বাড়ান আর সুবাস নিন সতেজ ফুলের।

খুশকি’কে চুটকি মারুন

রূপ সচেতন মানুষের রূপ নিয়ে ভাবনার শেষ নেই। আর এই শীতের সময় তো কপালে ভাঁজ পড়ে শুষ্ক আবহাওয়ার খোঁচায় ত্বকের বারোটা বেজে যাবার ভয়ে। তাই এই শীতে ত্বক সুরক্ষায় আমরা কত না প্রসাধনী আর টেকনিক প্রয়োগ করছি ত্বকে। তারপরও ভুল টেকনিক আর ভুল প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে ত্বকের উপকারের বদলে ত্বকের ক্ষতি হয় অনেকক্ষেত্রে। আর আজ রূপ সমস্যায় শীতের সবচেয়ে বেশি জটিলতা খুশকি নিয়ে থাকছে কিছু টিপস্। শীতে মাথার ত্বকে এবং চুলে সমস্যা দেখা দেয় বেশী। আর হাত-পা, মুখমন্ডলের যতœ করতে গিয়ে আমরা মাথার ত্বকের বিষয়টি অবহেলায় ফেলে রাখি। আবার এই শীতে অনেকে ঠান্ডা পানির ভয়ে শ্যাম্পু করতে চান না। এতে খুশকি জমে বসে মাথার ত্বকে। মাথার ত্বক পরিচর্যা করতে মাসে অন্তত দুইদিন হেয়ার ট্রিটমেন্ট করতে হবে। হেয়ার ট্রিটমেন্ট বাসাতে বসে কিংবা পার্লারে গিয়ে করাতে পারেন। বাসায় হেয়ার ট্রিটমেন্ট করাটাও অবশ্য খুব সহজ। বাড়িতে করতে পারলে অনেক ঝক্কি-ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন। বাড়িতে হেয়ার ট্রিটমেন্ট করার সহজ নিয়ম হচ্ছে, কুসুম গরম তেলে তুলো চুবিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করতে হবে। চুলের প্রতিটা গোড়ায় ভালমতো তেল ম্যাসাজ করা হয়ে গেলে হালকা গরম পানিতে তোয়ালে চুবিয়ে মাথায় ১০ মিনিট গরম ভাপটা নিতে হবে। এভাবে দুবার করার পর ধীরে ধীরে চুল ভাল মতো আঁচড়াতে হবে। এতে গরম ভাপের কারণে মাথার ত্বকের খুশকি নরম হয়ে যাওয়ার ফলে ঝরে পড়বে। ব্যাস এরপর ভাল মানের একটা অ্যান্টি ড্যানড্রফ শ্যাম্পু দিয়ে মাথাটা ভাল করে ধুয়ে নিন। আর মনে রাখবেন শ্যাম্পু করার পর চুল ভাল করে ধুয়ে নিবেন। যাতে শ্যাম্পু মাথায় লেগে না থাকে।

তৈলাক্ত চুলের জন্য পাতি লেবুর রস, টক দই দিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করুন। আর স্বাভাবিক চুলের জন্য ডিম, পাকা কলা, মধু, দুধের স্বর দিয়ে বিভিন্ন রকম প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। এসবের পরও কিছু বিষয়ে সতর্কতা মেনে চলুন।
০ বাইরে যেতে মাথায় ক্যাপ, স্কার্ফ বা ওড়না দিয়ে চুল ঢেকে নিতে হবে।
০ নিজের চিরুনি ও তোয়ালে, অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দিবেন না বা অন্যেরটা ব্যবহার করবেন না।
০ বালিশের কভার, বিছানার চাদর, নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
০ সপ্তাহে কমপক্ষে তিনদিন অ্যান্টি ড্যানড্রফ শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
০ প্রতিদিন দশ থেকে বারো গ্লাস পানি খেতে হবে।

এছাড়া শাকসবজি,ফলমুল এবং পুষ্টিকর খাবার প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। ব্যাস পেয়ে যাবে আপনার ঝলমলে উজ্জ্বল খুশকি মুক্ত চুল।

টেবিল ল্যাম্পের খোঁজ খবর


রাত জেগে পড়াশোনায় কিংবা ঘরের এক কোণ থেকে একটা হালকা নরম আলো সারা ঘরে ছড়িয়ে দেবার জন্য আজকাল অনেকেরই প্রয়োজন পড়ে একটা যুতসই টেবিল ল্যাম্পের। তাছাড়া হাল আমলের ইন্টেরিয়রে যখন ঘরের আর সবকিছুর মতো আলোর উৎসকেও বিবেচনা করা হয় সমান গুরুত্ব দিয়ে তখন বৈচিত্র্যপূর্ণ টেবিল ল্যাম্প বা ল্যাম্প শেডের গুরুত্বটাকেও হেলাফেলা করা যায় না কিছুতেই। আর এ কারণেই বর্তমান সময়ের টেবিল ল্যাম্প বা ল্যাম্পশেডগুলোকে শুধু গুণবিচারী হলেই চলে না, বরং একই সাথে হতে হয় দর্শনধারীও।

আজকাল নানা রকমের ধাতব উপাদানের পাশাপাশি বাঁশ, বেত, কাগজ, কাঠ, গাছের গুড়ি, চীনামাটি, কাপড় প্রভৃতি বহুবিধ উপকরণের তৈরি টেবিল ল্যাম্প ও ল্যাম্পশেড দেখতে পাওয়া যায়। তবে এসব টেবিল ল্যাম্প বা ল্যাম্পশেড দোকানের পরিবেশে যতই ভাল লাগুক না কেন ঘরের অন্যান্য আসবাবের সাথে তা মানাবে কিনা এটা ভাবতে হবে কেনার আগেই। অন্যদিকে যারা রাত জেগে পড়াশোনার জন্য টেবিল ল্যাম্প কিনতে চান তাদেরকে টেবিল ল্যাম্পের ‘আউটলুকে’র পাশাপাশি ভাবতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলোর কথাও। তাছাড়া আলোটি যেন সাদা বা সোডিয়ামের আলো ছাড়া অন্যকোনো বর্ণের না হয় সেটিও নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।

টেবিল ল্যাম্পের প্রয়োজন যদি হয় ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য তাহলে প্রথমেই জেনে নিতে হবে আপনি এই টেবিল ল্যাম্পটি ঘরের কোন অংশে রাখবেন। যদি শোবার ঘরের বেডসাইড টেবিলের ওপর রাখার জন্য টেবিল ল্যাম্পের প্রয়োজন পড়ে তাহলে যথাসম্ভব ছোট আকৃতির টেবিল ল্যাম্প কিনতে হবে। আর এর আলো হতে হবে মৃদু ও স্নিগ্ধ। আবার বেডসাইড টেবিলের পরিবর্তে যদি শুধুমাত্র শোবার ঘরের এককোণে বা খাটের মাথার দিকে একটি স্ট্যান্ডিং টেবিল ল্যাম্প রাখতে হয় তাহলে এমন আকৃতির ল্যাম্পশেড খুঁজে বের করতে হবে যেটি খাটের উচ্চতার সাথে মানানসই।

বৈচিত্র্যপূর্ণ ল্যাম্পশেড বা টেবিল ল্যাম্প রাখবার জন্য সবচেয়ে উপয্ক্তু স্থান হলো বসার ঘর বা ড্রয়িং রুম। সাধারণত ড্রয়িং রুমের কোনো একটি কোণে নান্দনিক ডিজাইনের কোনো টেবিল ল্যাম্প রাখতে পারলে তা দেখতে অনেক বেশি ভাল দেখায়। এছাড়া যাদের বসার ঘর খানিকটা খোলামেলা এবং বড় তারা চাইলে দু’টি সিঙ্গেল সোফার মাঝখানেও রাখতে পারেন খানিকটা লম্বা আকৃতির কোনো ল্যাম্পশেড। তবে সোফার পাশে থাকা সাইড টেবিলের উপর রাখবার জন্য টেবিল ল্যাম্পের প্রয়োজন পড়লে সেটি খানিকটা ছোট আকৃতির হওয়াই ভাল। আর বসার ঘরে যেহেতু কম আলো থাকা বাঞ্চনীয় নয় তাই এ ঘরের ল্যাম্প শেড থেকে খানিকটা উজ্জ্বল আলো ছড়ানোই ভাল। এজন্য বাজারে যেসব উজ্জ্বল আলোর টেবিল ল্যাম্প কিনতে পাওয়া যায় সেখান থেকে লাল, নীল, ম্যাজেন্টা, সবুজ, লেমন বা ধবধবে সাদা রঙের ল্যাম্প বেছে নেয়া যেতে পারে।

বর্তমানে বাজারে যেসব টেবিল ল্যাম্প বা ল্যাম্প শেড কিনতে পাওয়া যায় সেগুলোর দাম উপকরণ ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এর মধ্যে কাঠের তৈরি ল্যাম্প শেড এর দাম পড়বে ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা, বাঁশের টেবিল ল্যাম্প ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা, রট আয়রনের টেবিল ল্যাম্প ৮০০ থেকে ২০০০ টাকা এবং প্লাস্টিকের টেবিল ল্যাম্প ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা। এছাড়া নান্দনিক ডিজাইনের এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ উপাদানে তৈরি ল্যাম্প ও ল্যাম্প শেডের খোঁজ পাওয়া যাবে ইটিসি, কিনরী এবং আড়ং এর মতো দোকানগুলোতে। আর এগুলোর দাম পড়বে ৫০০ থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে।

আধুনিক রসুইঘর

সেকেলের রান্নাঘর আর আজকের রান্নাঘরের সাজ-সজ্জার তুলনা আকাশ পাতাল। নানী-দাদীরা আগে মাটির চুলার উপর সাদামাটির প্রলেপ আর রান্নাঘরের মাঝে লালমাটির প্রলেপ দিয়ে তকতকে করে রাখতেন। রান্নার কাজে ব্যবহার্য জিনিসপত্র কোনো উঁচু জায়গায় অথবা পেরেকে ঝুলিয়ে রাখতেন। আর হাঁড়ি পাতিল রাখা হত পাটের তৈরি শিকায় করে। সুতারাং দেখা যায় রাঁধুনীরা কিন্তু তখনকার দিনেও তার রসুই ঘরটিকে কম সাজিয়ে রাখতেন না। আর আধুনিক সময়ে তো বাজারে এসেছে নতুন সব তাক লাগানো জিনিসপত্র। নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব সরঞ্জাম পাল্টে দিয়েছে আধুনিকার রসুইঘরের চেহারা।

রান্নাঘরের সৌন্দর্য নিয়ে কিছু কথা-
পরিকল্পিত গোছানো রান্নাঘরই রান্নাঘরের সৌন্দর্যের প্রধান চাবিকাঠি। রান্নার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মধ্যে প্রথমেই দরকার পড়ে কাটাকুটির যন্ত্রপাতির ও ধোয়া মোছার জায়গা, দ্বিতীয়ত মেশানোর উপকরণ অর্থাৎ মশলা এবং সবশেষে রান্না। তাই রান্নাঘর সাজানোর ও বাড়ি তৈরির সময় এই কাঠামোর দিকে লক্ষ রাখতে হবে। এতে রাধুনীর সময়ের অপচয় ও কষ্ট উভয়ই কম হবে। এবার জানা যাক রান্নাঘরের সুরক্ষা এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কৌশল ও উপকারিতা সম্পর্কে কিছু টিপস্।

কাটার ও কাটিং বোর্ড
এখন অনেকেই রান্নার কাটাকুটি দাঁড়িয়েই করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তাই ক্যাবিনেটে কাটিং বোর্ড রাখা দরকার হয়। কাটিং বোর্ডে মাছ, মাংস, যেকোনো সবজি, ফল ও অন্যান্য খাবার দাঁড়িয়ে কম সময়ে কাটা যায়। বাজারে এখন বিভিন্ন কাটার পাওয়া যায়। যেমন- ফ্রুট কাটার, পিৎজা কাটার, বাটার ও সালাদ তৈরিতে কাটার বেশ সহায়ক।

ভেজিটেবল পিলার: বিভিন্ন ধরনের সবজি ফলের খোসা নিখুঁতভাবে ছাড়াতে ভেজিটেবল পিলার ব্যবহার করা হয়।
গ্রেটার: সবজি বা অন্য খাবার খুব দ্রুত কুচিকুচি করতে ব্যবহৃত হয় গ্রেটার।
কিচেন হুড: রান্নাঘরে চুলার উপরে হুডের মত এটা লাগানো হয়। কিচেন হুড রান্নাঘরের বাড়তি তাপ, চুলা থেকে জামা ময়লা ও তেল চিটচিটে হওয়া ভাব দূর করে। কিছুদিন পর পর এই কিচেন হুড পরিষ্কার করবেন। এটি বিদ্যুতে চলে।
কিচেন ক্যাবিনেট: রান্নাঘরের প্রশস্ততা অনুযায়ী কিচেন ক্যাবিনেট বানাতে হবে। যা একই সঙ্গে রান্নাঘরের সৌন্দর্য রক্ষা করবে। জায়গার অপচয় কম করবে ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সুনির্দিষ্ট জায়গায় রাখতে সহায়ক হবে। বাজারে ‘এল’ ও ‘ইউ’ আকৃতির ক্যাবিনেট রয়েছে। এসব ক্যাবিনেট আলাদা বা পুরো সেটসহ পাওয়া যায়।
কিচেন গ্লাভস: আগুন থেকে নিরাপদ থাকতে কিচেন গ্লাভস ব্যবহার করুন। চুলা থেকে গরম পাতিল ও ওভেন থেকে গরম খাবার বের করতে গ্লাভস ব্যবহার করলে হাতের ত্বকের সুরক্ষাও হয়। আবার হাতে কালি ঝুলিও লাগে কম।
ননস্টিক ফ্রাইপ্যান: ননস্টিক ফ্রাইপ্যান ব্যবহার সাধারণ কড়াই থেকে সুবিধাজনক ও সাশ্রয়ী। কারণ, ননস্টিক ফ্রাইপ্যান রান্না করলে খাবার সহজে পুড়ে বা লেগে যায় না। তেল পরিমাণে কম লাগে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।
কিচেন অ্যাপ্রন: আধুনিক রাঁধুনীদের জন্য কিচেন অ্যাপ্রন ব্যবহার জরুরী, কারণ ব্যস্ত কর্মজীবী মহিলারা অনেক সময় হাতে নিয়ে রান্না করতে পারে না। হয়ত বাচ্চাকে স্কুলে দেয়া নেয়ার ফাঁকেই সারতে হয় দুপুরের রান্নার কাজ তাই বারবার কাপড় বদলানোর ঝামেলা না করে এ্যাপ্রন ব্যবহার করলে তরকারির ঝোল, মসলার দাগ এবং শরীর তাপের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকে।

রান্নাঘরের টুকিটাকি

যেভাবে রাখবেন
ব্লেন্ডার, এগবিটার, জুসার, মিক্সচার, স্যান্ডউইচ মেকার, কফি মেকার, টোস্টার, প্রেসার কুকার, রাইস কুকার, মাল্টি নাইফ ইত্যাদি ইলেট্রনিক সরঞ্জাম চুলা থেকে দূরে ক্যাবিনেটের একটি সুরক্ষিত জায়গায় রাখবেন। আর বেসিনের কাছাকাছি শেলফে ফিট করবেন কাটার বোর্ড।
ডোর ম্যাট: প্রয়োজনে চট জলদি কাজে লাগাতে হাতের কাছে টুকটাক জিনিসপত্র রাখা যায়। এজন্য ডোর ম্যাটে স্যাভলন ক্রিম, পোড়ার ওষুধ, ব্যান্ডেজ, কাঁচি, তুলা, চামচ, টিস্যু ইত্যাদি রাখা যায়। যা হঠাৎ প্রয়োজনে আপনাকে সাহায্য করবে তৎক্ষণাৎ।

ভাবনা যখন স্নানঘরের

অনেকেই বলেন, একটি পরিবারের স্নানঘর এর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা আর উপকরণ দেখেই নাকি বাড়ির কর্তাব্যক্তির রুচি সম্পর্কে আঁচ করা যায়। কাজেই যারা সুন্দর থাকতে ভালোবাসেন তারা বাড়ির অন্য সব দিকের মতো নজর দেন স্নানঘরের দিকেও। আর একটি স্নানঘরকে পরিপাটি করে গড়ে তুলতে হলে বাড়ি বানানোর শুরু থেকেই এগোতে হয় সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে। অন্যদিকে যারা ভাড়া বাড়িতে অন্যের রুচিতে তৈরি স্নানঘরে তাদের প্রয়োজন মেটান তারাও কিন্তু বাহ্যিক কিছু পরিবর্তন এনে খানিকটা হলেও পাল্টে দিতে পারেন স্নানঘরের আদল।

স্নানঘর তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রথমেই যে বিষয়টি ভাবতে হবে তাহলো এর আকার-আয়তন। অনেকেই তাদের বেডরুমটিকে খানিকটা বড় দেখানোর আয়োজন করতে যেয়ে স্নানঘরের জায়গাটিকে করে তোলেন অপ্রতুল। অথচ এটি দেখতে যেমন দৃষ্টিকটু দেখায় তেমনি প্রয়োজনীয় কাজে নানা অসুবিধারও সৃষ্টি হয়। উদাহরণস্বরূপ স্নানঘরে কমোড বা প্যান বসানোর পর যদি গোসলের জায়গাটি অপরিসর হয়ে পড়ে তবে সেটা পরবর্তীতে অনেকের জন্যই অস্বস্তির কারণ হয়। তাছাড়া যেসব গৃহিনী স্নানঘরে কাপড় ধোয়ার কাজটিও সারেন তাদের জন্যও খানিকটা বাড়তি স্থানের প্রয়োজন হয়। এছাড়া নিরাপত্তার ঝুঁকি না থাকলে স্নানঘরের দেয়াল তোলার সময় আলো-বাতাস প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় জানালাটি খানিকটা বড় রাখাই ভাল।

স্নানঘরের আয়তনের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এর দেয়াল এবং মেঝের বিষয়টি। এক্ষেত্রে স্নানঘরের মেঝে নেট ফিনিশিং, মোজাইক বা টাইলস যেটি দিয়েই করা হোক না কেন খেয়াল রাখতে হবে যেন তা পিচ্ছিল বা মসৃণ হবার পরিবর্তে খানিকটা খসখসে হয়। তা নাহলে ভেজা স্নানঘরে পিছলে গিয়ে অকারণ বিপত্তির মুখোমুখি হতে হবে। এছাড়া স্নানঘরের ঢাল যেন একদিকে থাকে এবং এতে যেন কোনোমতেই পানি জমাট বাঁধতে না পারে সেদিকেও বাড়তি লক্ষ্য রাখতে হবে। অন্যদিকে বাথরুমের অংশটিতে যারা কমোডের পরিবর্তে প্যান বসান তারা সামান্য উঁচু একটি ভিত্তির উপর প্যান বসালে তা দেখতে যেমন ভাল লাগে তেমনি অকারণ অস্বস্তি থেকেও রেহাই পাওয়া যায়। আর স্নানঘরের দেয়ালে টাইলস বা মোজাইকের পরিবর্তে রঙ ব্যবহার করলে তা অবশ্যই নীচ থেকে তিন-চার ফিট ছেড়ে উপরের অংশ রঙ করাতে হবে। আর রঙ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে এমন ধরনের প্লাস্টিক বা এনামেল পেইন্ট যেগুলো পানির সংস্পর্শে সহজে নষ্ট না হয়।

স্নানঘরে যারা মুখ ধোয়া বা অন্যান্য ছোটখাটো কাজের জন্য বেসিন রাখতে চান তারা যেকোনো একটি কোণে এটা রাখলেই ভাল করবেন। সেই সাথে বেসিনের ওপর প্রয়োজনীয় জিনিস রাখার জন্য একটি স্ট্যান্ড ও লুকিং গ্লাসও লাগানো যেতে পারে। এছাড়া একটি পরিপূর্ণ স্নানঘরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ‘হার্ডওয়্যার’ এর মধ্যে রয়েছে পানির কল, ফ্ল্যাশ এক্সেসরিজ, কমোডের জন্য হ্যান্ড শাওয়ার ও গোসলের জন্য পৃথক শাওয়ার, তোয়ালে রাখার স্ট্যান্ড, টিস্যু পেপার হোল্ডার, সাবান রাখার স্ট্যান্ড প্রভৃতি। তবে যারা সাধারণ মানের চাইতে অনেক বেশি অভিজাতভাবে তাদের স্নানঘরকে সাজিয়ে তুলতে চান তাদের জন্য বাথটাব, গিজার থেকে শুরু করে শাওয়ার কার্টেন এর মতো আরো অনেক এক্সেসরিজেরই প্রয়োজন পড়বে। অন্যদিকে যারা মধ্যবিত্ত হলেও একটু শৌখিনভাবে তাদের স্নানঘরটিকে সাজিয়ে তুলতে চান তারা চাইলে কৃত্রিম বা সত্যিকারের গাছ, সাবান-টুথপেস্ট রাখার রকমারী সেট, ছোট্ট কাবার্ড, ম্যাগাজিন স্ট্যান্ড ইত্যাদি অনেক কিছুই যোগ করে নিতে পারেন তাদের স্নানঘরের উপকরণের তালিকায়।

প্রয়োজনীয় জিনিসের দরদাম

যারা ভাড়াবাড়িতে থাকেন না তাদের জন্য স্নানঘরের প্রথম উল্লেখযোগ্য খরচ শুরু হয় টাইলস বা মোজাইক থেকে। বর্তমানে বাজারে যেসব টাইলস পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে মোটামুটি ভাল মানের টাইলস বসাতে হলে আপনার খরচ পড়বে ফ্লোর টাইলস্ এর ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুট ২৯-৩৫ টাকা এবং ওয়াল টাইলস এর ক্ষেত্রে ২৬-৩৩ টাকার মতো। আর মোজাইকের ক্ষেত্রে গড়পরতা প্রতি বর্গফুট সাধারণ মোজাইকের জন্য প্রয়োজন পড়বে ৫০-৮০টাকা।

ফ্লোর টাইলস বা মোজাইকের পর ভাবতে হবে প্যান বা কমোড এবং বেসিনের কথা। আমাদের দেশে বর্তমানে যেসব প্যান পাওয়া যায় সেগুলোর গড়পড়তা দাম ১৫০০-৩০০০টাকা। অন্যদিকে দেশীয় কমোডগুলোর দাম পড়ে ২০০০ থেকে ৬০০০ টাকার মতো। তবে যারা বিদেশী কমোড এবং বিদেশী ফিটিংস ব্যবহার করতে চান তাদের ক্ষেত্রে এসব খরচ দ্বিগুন থেকে শুরু করে তিন-চারগুন পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত কমোডের সাথে ফ্ল্যাশ সংযুক্ত থাকলেও প্যান বসালে এটি আলাদাভাবে কিনতে হয় এবং এক্ষেত্রে প্রতিটি ফ্ল্যাশের দাম পড়তে পারে ১২০০-৩০০০টাকার মতো। এছাড়া বাথরুমের অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দরদাম হলো বেসিন ৮০০ থেকে ৬০০০টাকা, লুকিং গ্লাস ২৫০ থেকে ৫০০০টাকা, গ্লাস সেলফ ১২০ থেকে ৮০০ টাকা, সাবান-টুথপেস্ট রাখার সেট ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা, টিস্যু পেপার হোল্ডার ১০০ থেকে ৮০০ টাকা, তোয়ালে রাখার স্ট্যান্ড ১৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, হ্যান্ড শাওয়ার ২৫০ থেকে ১৫০০ টাকা, গোসলের শাওয়ার ২০০-৮০০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের কল ২৫০-৩০০০ টাকা এবং টবসহ ছোট কিংবা মাঝারি মাপের গাছ ১৫০ থেকে ১০০০ টাকা।

রূপ সমস্যার সমাধান

নারীর স্বাভাবিক সৌন্দর্যকে আরও কিভাবে বাড়িয়ে তোলা যায় অথবা প্রসাধনীর সঠিক ব্যবহার করে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠা যায় এইসব তথ্য এবং তত্ত্ব তখনই মূখ্য হয়ে উঠবে যখন দৈহিক সৌন্দর্য বজায় থাকবে। শারীরিক কিছু সাধারণ সমস্যা যা প্রতিনিয়ত দেখা যায় তার জন্য কিছু টিপস্ রইল-

সানস্পট
০ রোদ থেকে সানস্পটের সৃষ্টি হয়। সানস্পটের সমস্যা কমাতে রেটিনয়েড সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
০ প্রতিদিন ঠান্ডা দুধে তুলো ভিজিয়ে সানবার্নের উপর লাগান। এতে করে ত্বক ঠান্ডা থাকবে ত্বকের জেল্লা বাড়বে এবং সানবার্নে উপকারী ভূমিকা পালন করবে।
০ এক মুঠো তিল গুড়ো করে আধাকাপ পানিতে ২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে সেই পানি ছেঁকে মুখ ধোয়ার জন্য ব্যবহার করুন। তিলের তেল সানবার্নের জন্য খুবই উপকারী।

ব্ল্যাকহেডস
০ সাধারণত লোমকূপে ময়লা জমে ব্ল্যাকহেডসের সূত্রপাত ঘটে। এজন্য নিয়মিত বাইরে থেকে ফিরে এসে সঠিকভাবে মুখ পরিষ্কার করতে হবে।
০ কর্ণফ্লাওয়ার, গুড়ো চিনি এবং কয়েক ফোঁটা ভিনেগার একসঙ্গে মিশিয়ে আধাঘন্টা রেখে হালকা মাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন।
০ ৩ ভাগ বেকিং সোডা, ১ ভাগ পানি মিশিয়ে ত্বকে লাগান। এ ছাড়া ওটমিল, ডিমের সাদা অংশ ও মধু মিশিয়ে ১০ মিনিট ব্ল্যাকহেডসের উপর লাগিয়ে রেখে কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

বলিরেখা
০ বলিরেখার জন্য বাঁধাকপির রস ১ চামচ মধু মিশিয়ে লাগান উপকার পাবেন।
০ প্রতিদিন শোবার আগে ১ চামচ আমন্ড ওয়েল চোখের পাতার এবং চোখের চারধারে মাসাজ করুন।
০ অ্যালোভেরা জেল রাতে শোবার আগে লাগান। অ্যাপেল সিডার, ভিনেগার ও অরেঞ্জ জুস মিশিয়ে স্টোর করে রাখতে পারেন।
০ নিয়মিত ব্যবহার করুন যা বয়সের ছাপ কমাতে টনিক হিসেবে কাজ করবে।
০ ক্লিনজিং, টোনিং, ময়শ্চারাইজিং-এর প্রাথমিক নিয়ম মেনে চলুন। প্রতিদিন সকালে ও রাতে মুখের সঙ্গে গলা মাইল্ড সোপ দিয়ে পরিষ্কার করবেন। বাইরে বের হবার সময় সানস্ক্রিন এবং রাতে শোবার সময় ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম অবশ্যই লাগাবেন।

পাফি আইজ
০ চোখের কোল ফুলে যাওয়াকে বলে পাফি আইজ। পাফি আইজ থেকে রক্ষা পেতে চোখে ঠান্ডা বরফ পানির সেঁক দিন।
০ শসার রস ঠান্ডা করে তুলোতে ভিজিয়ে চোখের উপর লাগিয়ে রাখুন। চোখের অনেক আরাম হবে।
০ আইজেল আধঘন্টা ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে সেই জেল চোখে লাগান। সমস্যা কমে যাবে।
০ সল্ট ইনটেক বেশী হলে চোখের চারপাশের টিস্যুতে পানি জমে যায়। এ থেকে রক্ষা পেতে বেশী করে পানি পান করবেন। এতে জমে থাকা সল্ট ফ্লাশ আউট হয়ে যাবে।

নিস্তেজ চুল
পাতলা, নেতিয়ে পড়া চুলে নিয়মিত হালকা শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন। মাথার ত্বকের তেল পরিষ্কার হয়ে চুলের তেলতেলভাব দূর হবে।
০ প্রোটিন সমৃদ্ধ বা ওয়াটার বেসড কন্ডিশনার ব্যবহার করুন চুলের ভলিউম বাড়বে।
০ শ্যাম্পুর পর বাড়িতে তৈরি করে নিতে পারেন হেয়ার রিন্স। ভিনেগার ও পানি মিশিয়ে তৈরি করে নিন হেয়ার রিন্স। চুল চকচকে থাকবে।
অতিরিক্ত শুষ্ক বা তৈলাক্ত ভাব কমাতে
০ ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক লাগলে কমলালেবুর জুস তুলায় ভিজিয়ে হালকা হাতে লাগান। ত্বক নরম ও মসৃণ হবে।
০ ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করতে আটা পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট করে ত্বকের উপর লাগান।
০ টমেটো জুসের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে স্কিন টনিক হিসেবে ব্যবহার করুন। ত্বক উজ্জ¦ল থাকবে।

রুক্ষ ঠোঁটে আদ্রতা আনতে
০ ঠোঁটের ডেড স্কিন তুলতে লিপ বাম লাগিয়ে বেশী টুথ ব্রাশ দিয়ে আস্তে আস্তে ঘষে তুলে ফেলুন।
০ ঠোঁট নরম করতে এক সপ্তাহ নারকেল তেল, চন্দন বাটা ও গোলাপজল পেস্ট করে রাতে ঘুমানোর সময় লাগাবেন। ঘুম থেকে উঠে ধুয়ে ফেলবেন।
০ মেকআপের সময় লিপস্টিক লাগানোর আগে সবসময় কোনও কোল্ড ক্রিম বা লিপ কম লাগিয়ে নিবেন।

আপনার গাড়ির যত্ন

হুটহাট করে আপনাকে বেরিয়ে যেতে হতে পারে কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে। আর সেজন্য আপনার দরকারী বাহন গাড়িটিকে প্রস্তুত থাকা চাই প্রতি মুহূর্তে। সবসময় ত্রুটি মুক্ত অবস্থায় আপনার গাড়ি রাখতে হলে প্রয়োজন নিয়মিত সঠিক পরিচর্যা। সেজন্যই কিছু টিপস্ দেয়া হলো-

রেডিয়েটরের পানির স্তর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন। স্তর নিচে নেমে গেলে পরিষ্কার পানি দিয়ে ভরে দিন। ইঞ্জিনে তেলের পরিমাণ কমে গেলে প্রয়োজন মতো তেল দিয়ে পূরণ করুন। মাস্টার সিলিন্ডারে ব্রেক অয়েল পটের লেভেল দেখুন। কমে গেলে ভর্তি করুন। একইভাবে ব্যাটারির এসিড লেভেল কমে গেলে পাতিত পানি দিয়ে ভরে দিন। গাড়ির হেড লাইট, ইন্ডিকেটর লাইটসহ সব ধরনের লাইট ভালভাবে জ্বলছে কিনা পরখ করুন। গাড়ির চাকার হাওয়া চেক করুন। হাওয়া কম থাকা অবস্থায় বেশিক্ষণ গাড়ি চালাবেন না। এরকম সময়ে চাকায় হাওয়া ভরে নিন। গাড়ির হর্ণ ভালভাবে বাজছে কিনা দেখুন। চাকার নাটগুলো ঢিল থাকলে টাইট দিয়ে নিন। ব্রেক কাজ করে কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন। সর্বোপরি গাড়ির আউটলুক বজায় রাখতে সবসময় গাড়ির ধুয়ে মুছে রাখুন।

নাকফুলের নানাদিক

মেয়েদের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলতে বা নিজেকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে উপস্থাপনের জন্য সেই আদিকাল থেকে শুরু করে বর্তমান যুগের আধুনিক মেয়েরাও অলংকার ব্যবহার করে। সময়ের সাথে সাথে ফ্যাশনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। পরিবর্তন এসেছে অলংকারের ডিজাইনেও। কিন্তু রমনীর সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে অলংকারের ভূমিকা আজও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

এশিয়া মহাদেশে বিশেষ করে আমাদের দেশ এবং পার্শ্ববর্তী কয়েকটি প্রতিবেশী দেশের মেয়েদের অলংকারের একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তেমনি এক অলংকার হল নাকফুল। বিশেষ করে মুসলিম মেয়েদের নাকফুল বেশি ব্যবহার করতে দেখা যায়। নাকফুল মুসলিম মেয়েদের বিয়ের নিদর্শন হিসেবে বেশি পরিচিত। কিন্তু এখন শুধু মুসলিম মেয়েরাই নয় বরং এখন কিশোরী, তরুণী সবার প্রিয় ফ্যাশন অনুষঙ্গ হল নাকফুল। শুধু নাকফুল পরার ইচ্ছা থাকলেই হবে না, তার জন্য প্রথমে নাক ফুটাতে হবে। আগে বাড়ির বয়স্ক নানী-দাদিরা তাদের নাতনীদের সোনামুখী সুঁই-সুতো দিয়ে নাক ফুটিয়ে দিত। এতে অবশ্য ব্যথা একটু বেশি হত এবং অনেক সময় সঠিকস্থানে ফুটো না হওয়ার কারণে নাক পেঁকে যেত। এথেকে অবশ্য কিছু ভোগান্তিরও সৃষ্টি হতো। বর্তমান যুগে অবশ্য নাক ফুটো করা একদমই মামুলি ব্যাপার। ডাক্তার বা পার্লারে গিয়ে নাক ফুটানো যায় সহজেই। যারা একটু ভয় বেশি পান তারা অবশ্য ডাক্তারের কাছে গিয়ে নাক ফুটো করতে পারেন। কারণ ডাক্তাররা নাক ফুটো করার আগে নাকে অ্যানেসথেটিক ক্রিম ব্যবহার করেন। ফলে ক্রিম লাগানো ওই স্থানটি কিছুক্ষণের জন্য অবশ হয়ে যায় বলে নাক ফুটানোর ব্যথা টের পাওয়া যায় না। অনেক সময় নাক ফুটো করার পর ঘা, ইনফেকশন, গোটা, ফুলে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে ব্যাকট্রোব্যান, ট্রেগো, জেনটিন ইত্যাদি অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। আর তাড়াতাড়ি ফুটো শুকানোর জন্য ডাক্তারের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে।

ফুটো করা জায়গা থেকে অনেক সময় ব্লিডিং হতে পারে। এতে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। ব্লিডিং ডিজ-অর্ডার রগ বা ব্লাড সেলের উপর ফুটো হলে ব্লিডিং হতে পারে। তখন ঠিকমত ওষুধ খেলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। একটা কথা প্রচলিত আছে যে নাক ফুটো করলে টক খাওয়া যাবে না। এই ধারণা একেবারেই ভুল, বরং টক খাবারের ভিটামিন সি ইনফেকশন তাড়াতাড়ি শুকাতে সাহায্য করে। তবে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তারা যেসব খাবার খেলে অ্যালার্জি দেখা দেয় সেসব খাবার এ্যাভোয়েট করতে পারেন।

কেমন নাকে কেমন নাকফুল
০ যাদের নাক লম্বা বা খাড়া তাদের নাকে বড় পাথর বা সাত পাথরের নাকফুল ভাল লাগবে।
০ এই ধরনের নাকে ছোট এক পাথরের নাকফুল অথবা নাকের নথ বা বালি ভাল মানাবে।
০ লম্বা বা খাড়া নাকে, খাঁজের একটু ওপরের দিকে ফুটো করলে দেখতে ভাল লাগবে।
০ খাটো বা চাপা নাকে খাঁজের একটু উপরে ফুটো করা উচিত।
০ আগে বাক দিয়ে ফুটো করার প্রচলন থাকরেও ইদানিং ডান-বাম দুদিকেই নাক ফুটো করা যায়।
০ চেহারা, ব্যক্তিত্ব এবং নামের সঙ্গে মিলিয়ে তাই বেছে নিন সঠিক নাকফুল।

ওয়েস্টার্ন ড্রেসের সাজগোজ

আপনি যখন লাল-সাদা শাড়ি পরে চিরায়ত বাঙালি সাজে সাজবেন তখন আপনার খোপায় হয়তো শোভা পাবে একগোছা সাদা বেলী ফুল। কপালে থাকবে লাল টিপ, হাতে প্রতিনিয়ত রিনিঝিনি বাজবে রেশমী চুড়ি। কিন্তু যদি শাড়ির বদলে জিন্স-টপস পরেন তখন কি বেলী ফুল, টিপ কিংবা রেশমী চুড়ি মানাবে? বোধহয় না। তাহলে মানে দাঁড়াল, আপনি আপনার ইচ্ছামতো পোশাক পরতে পারেন, কিন্তু সাজটা হওয়া চাই মানানসই। আপনার পশ্চিমা পোশাকের সাথে সাজটা কেমন হবে, তা জানাতেই এই আয়োজন-

পোশাক বা ড্রেস যাই বলি না কেন ফ্যাশনে এর গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমান স্টাইল ট্রেন্ডে দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক থেকে শুরু করে পশ্চিমা পোশাকও আছে তরুণ-তরুণীদের পছন্দের তালিকায়। এই পশ্চিমা পোশাক ফ্যাশনের আধুনিকতার জন্যই জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বব্যাপী। যারা ফ্যাশন সচেতন, তাদের কাছে দেশীয় পোশাক যেমন পছন্দের একই সাথে তারা পছন্দ করেন পশ্চিমা পোশাক। কলেজ, ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া তরুণী থেকে শুরু করে এক্সিকিউটিভ লেভেলের নারীরাও আজকাল পশ্চিমা পোশাক পড়ছেন অহরহ। কিন্তু অনেকেই জানেন না পশ্চিমা পোশাক পরলেই কেবল ফ্যাশন সচেতন হওয়া যায় না। তার সাথে রূপসজ্জাটাও হওয়া চাই মানানসই।

পশ্চিমা বা ওয়েস্টার্ন ডেসের সাথে রূপসজ্জা হতে হবে একদমই বুঝেশুনে। কিন্তু সাজের আগে ওয়েস্টার্ন ড্রেস সম্পর্কে জানা দরকার। ওয়েস্টার্ন ড্রেস দুই ধরনের হয়। ক্যাজুয়াল ও ফর্মাল। ফ্যাজুয়াল ড্রেস আর ফর্মাল ড্রেসের সাজ অবশ্যই ভিন্নধরনের হবে। ফর্মাল প্যান্ট শার্ট পরলে সাজগোজ হবে একদমই সীমিত। হালকা মেকআপের সাথে হালকা অর্নামেন্টস। ক্যাজুয়াল প্যান্টের সাথে ফতুয়া বা টপস পরলে বড় কানের দুল হাতে মোটা চুড়ি পরতে পারেন। ক্যাজুয়াল শার্টের সাথে বড় মালা ভাল লাগবে। এ ধরনের ড্রেসে ছোট গয়না ভাল লাগবে না। সবচেয়ে মানানসই হলো মাটির গয়না। প্যান্টের সাথে টি-শার্ট পরলে কানে ও গলার গয়না নির্ভর করে টিশার্টের গলার ধরনের ওপর। হাই নেক টি শার্টে গলা আড়ালে থাকে বলে গয়না পরা যায় না। লো নেক টি শার্টে গলায় লকেট পরতে পারেন। কিন্তু টি-শার্টে অনেক কাজ করা থাকলে গলায় কিছু না পরাই ভাল। এর সাথে টিপ পরতে পারেন কালার দিয়ে। তবে ড্রেসের রঙয়ের সাথে মানানসই টিপ পরা উচিত। ফর্মাল ড্রেস রাতে পরলে প্যান্ট শার্টের ক্ষেত্রে চুল খোলা রাখাটাই বাঞ্চনীয়। ওয়েস্টার্ন ড্রেসের সাথে ফুল কোনোভাবেই যায় না।

ফর্মাল বা ক্যাজুয়াল, ড্রেস যাই হোক না কেন, ড্রেসের ধরনের পাশাপাশি মেকআপ হতে হবে দিন-রাতের ওপর নির্ভর করে। দিনের বেলায় ক্যাজুয়াল ড্রেসের মেকআপ খুব সাদামাটা হওয়া চাই। তাই বলে ফ্যাকাশে ধরনের নয়। হালকা সাজের মধ্যে পাউডার-কাজল ব্যবহার করতে পারেন। ঠোঁটে হালকা গোলাপি বা বাদামি গ্লস লাগাতে পারেন। ম্যাট লিপস্টিকও লাগাতে পারেন।

ফর্মাল পোশাক পরলে মেকআপে একটা মিশ্রভাব থাকতে হবে। প্রথমে ফাউন্ডেশন দিন। তৈলাক্ত ত্বকে ম্যাট আর শুষ্ক ত্বকে অয়েল বেজড ফাউন্ডেশন দিন। আইশ্যাডো ব্যবহার করতে হলে মোটা করে আই লাইনার দিতে পারেন। তবে এটা রাতের বেলায় করবেন। আর দিনের বেলায় চুল খোলা রাখলে ভাল লাগবে। জুতা না স্যান্ডেল পরবেন তা নির্ভর করবে ড্রেসের ধরনের ওপর।

দুশ্চিন্তা যখন ব্রণের

রূপচর্চার আর দশটা বিষয়ের চাইতে ব্রণের বিষয়টি সবসময়ই রূপসচেতন মানুষের কাছে একটু বাড়তি গুরুত্ব পেয়ে আসছে। কেননা এমনিতে কারো ত্বক উজ্জ্বল হোক কিংবা অনুজ্জ্বল যাই হোক না কেন ব্রণের সমস্যা যখন সেই ত্বকে যোগ হয় তখন রূপচর্চার চাইতে রূপের স্বাভাবিকতা ধরে রাখাটাই হয়ে ওঠে বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এ কারণে রূপ বিশেষজ্ঞের চেম্বার থেকে শুরু করে পত্রিকার পাতা অবদি সবখানেই ব্রণ মোকাবেলার নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। এর ফলে ব্রণ কেন হয় এবং কিভাবে কিছু কৌশল অবলম্বন করে ব্রণের সমস্যা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা যায় সেটি নিয়ে অনেকেই কমবেশি জানেন। তবে যারা এতোকাল জেনেও মানেননি কিংবা মানলেও সুফল পাননি তাদের জন্যই রূপবিশেষজ্ঞদের পরামর্শের আলোকে আরো কিছু বিষয় এখানে তুলে ধরা হলো।
সাধারণত শুষ্ক এবং তৈলাক্ত দু’ধরনের ত্বকেই কমবেশি ব্রণের দেখা মেলে। তবে আনুপাতিক হারে তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরাই ব্রণ সমস্যায় বেশি ভোগেন। এছাড়া ব্রণের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে সহজ-স্বাভাবিক আরো যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে সেগুলো হলো-
০ বেশি করে পানি খাওয়া
০ চুলে খুশকী থাকলে তা দূর করা
০ খাবারের তালিকায় শাকসবজির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া
০ ভাজা-পোড়া খাবার এড়িয়ে চলা
০ নিয়মিত গোসল করা
০ পেটের সমস্যা থাকলে পেট পরিষ্কার রাখার উদ্যোগ নেয়া
০ ভিটামিন ও মিনারেল যুক্ত খাবার খাওয়া
০ পরিধেয় বস্ত্র ও তোয়ালে পরিষ্কার রাখা
০ দুশ্চিন্তা না করা
০ সম্ভব হলে মাসে একবার ফেসিয়াল এর মাধ্যমে ত্বকের উপরিভাগ পরিষ্কার রাখা এবং
০ তৈলাক্ত ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করতে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট লোশন ব্যবহার করা।

সাধারণত তৈলাক্ত বা অন্য যেকোনো ত্বকে লোমকূপ যখন ময়লা পড়ে বন্ধ হয়ে যায় তখন ত্বকের স্বাভাবিক নিঃসরণ বন্ধ হয়ে ব্রণের জন্ম হয়। এ কারণে ত্বকের উপরিভাগে যেন কোনো ধরনের ময়লা জমে লোমকূপ বন্ধ হয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সম্ভব হলে ফেসওয়াশ বা ময়েশ্চারাইজার যুক্ত সাবান দিয়ে দিনে কয়েকবার মুখ ধুতে হবে। বিশেষ করে যারা কাজের প্রয়োজনে বাইরে ঘোরাঘুরি করেন তারা অবশ্যই বাইরে থেকে এসে ভাল করে মুখ ধুয়ে ফেলবেন। এছাড়া গরমের সময় যারা অতিরিক্ত ঘামেন তারা সে সময়টায় একটু পর পর মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলতে পারেন। এতে করে অতিরিক্ত ঘাম এবং ঘামবাহিত ময়লা জমে লোমকূপ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। অন্যদিকে যাদের ত্বক অতিমাত্রায় তৈলাক্ত তারা মুখ ভাল করে ধুয়ে তাতে বেট ক্রিম ও পাউডার লাগিয়ে বাইরে যেতে পারেন। এতে করে ত্বকের উপরিভাগে যে প্রলেপ সৃষ্টি হয় তা বাইরের ধূলো-ময়লা লোমকূপে ঢুকতে বাধার সৃষ্টি করে। অন্যদিকে যাদের ত্বক শুস্ক তারা সাবানের পরিবর্তে ফেসওয়াশ ব্যবহার করবেন এবং অবশ্যই মুখ ধোবার পর ত্বকের সাথে মানানসই ময়েশ্চারাইজিং লোশন ব্যবহার করবেন। এছাড়া যারা মেকআপ করে বাইরে যান তারা অবশ্যই বাইরে থেকে ফিরবার পর ক্লিনজার বা মেকাপ রিমুভার দিয়ে ভাল করে ত্বক পরিষ্কার করবেন। একইভাবে যাদের ত্বকে ঘুম থেকে ওঠার পর সকালে অনেক তেল জমে থাকতে দেখা যায় তারাও সকালে ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে নেবেন। তবে এইসব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার পরেও যারা ব্রণের সমস্যায় ভোগেন তাদেরকে অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ফেসিয়াল বা উপটান এর দ্বারস্থ হতে হবে।

Monday, June 15, 2009

স্টাইলিশ টিন


বন্ধু মহলে সোহানার নিজেকে সাজিয়ে তোলার রুচি বেশ প্রশংসিত। ১৬ বছরের মেয়েটির পোশাক-আশাক এখনো অনেকটাই ঠিক করে দেন মা। তবে ইদানীং সাজসজ্জাটা সে নিজেই করতে চায়। মায়ের সঙ্গে এ নিয়ে একটা গৃহযুদ্ধ বেঁধে যায় মাঝেমধ্যেই। বিরক্ত হয়ে মা নিয়ন্ত্রণটা ছেড়েই দিলেন। বিপত্তি ঘটল তখনই। পরবর্তী অনুষ্ঠানগুলোয় সোহানাকে নিয়ে চলল হাসাহাসি, ফিসফাস। কারণ কড়া মেক-আপ, চুলের বাহারি সাজ আর পোশাকের অসামঞ্জস্যতা, কিশোরী বয়সের সঙ্গে যা পুরোপুরি বেমানান।
ফ্যাশনের চাহিদা ও কৌতুহল অনেক সময়ই কিশোরী বয়সটিতে নিয়ে আসে দ্বন্দ্ব। সালোয়ার-কামিজ বা শাড়ি তেমন পরা হয় না এ বয়সে। বন্ধুর বাসা বা কেনাকাটায় বেরিয়ে যে পোশাকটা পরা যায়, তা অনেকটাই বেমানান দেখায় বিয়ে বা কোনো জমকালো পার্টিতে। কিন্তু দেশি বা বিদেশি দুটো পোশাকই হয়ে উঠতে পারে চমৎকার মানানসই, যদি তা পরা হয় বয়সের কথা মাথায় রেখে।

বিদেশি পোশাকে স্বদেশি মেয়েরা
আরামপ্রিয় কিশোরীদের কাছে জনপ্রিয়তার শিখরে এখন প্যান্ট, টপ, স্কার্ট, টিউনিকসহ নানা পাশ্চাত্য পোশাক। কিছুদিন আগে পর্যন্ত কোচিং, শপিং মলে অথবা বন্ধুদের আড্ডায়ই ছিল এর সীমানা। কিন্তু ধীরে হলেও গুটি গুটি পায়ে ঝলক দেখাচ্ছে এখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও। প্যান্টের মধ্যে ডেনিমই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে বলে জানান ফ্যাশন ডিজাইনার মায়াসিরের কর্ণধার ও মাহিন খান। সাধারণ সময়ে হালকা নকশার টি-শার্ট বা শার্ট পরলেও দাওয়াতে এটি একেবারেই মানায় না। ফতুয়ায় থাকা উচিত উৎসবের ছোঁয়া। এ সম্বন্ধে মাহিন খান জানান, সুতোর জমকালো কাজ, পাথর বা চুমকি বসানো ফতুয়া পরলে ভালো লাগবে। খারাপ লাগবে না কাচের একটু ঝিলিকমিলিক।
একঘেয়েমি কাটাতে ফতুয়ার সঙ্গে টি-শার্টের অদল-বদল করে নেওয়া হয় মাঝেমধ্যেই। কী রকম হওয়া উচিত দাওয়াতমুখী শার্ট বা টপ? ‘শার্ট পরলে তা হওয়া উচিত অবশ্যই একদম মাপমতো। কোথাও একটুও ঢিলেঢালা বাঞ্ছনীয় নয়।’ এমনটি জানান ক্যাটস আইয়ের পরিচালক ও ডিজাইনার দলের সদস্য রুম্মায়লা সিদ্দিকী। ফ্রিলের বাহার অথবা পিন টাক শার্ট বা টপ সাধারণ ভাবটা কাটিয়ে আনুষ্ঠানিক আমেজ দেবে। পাশ্চাত্য পোশাক পরা উচিত ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়েই। তাই ফ্যাশন অনুযায়ী এখন একটু লম্বা ফতুয়া বা শার্টই বেশি মানানসই বলে তিনি মনে করেন। আর প্যান্টটা যদি হয় চুড়িদার পায়জামার মতো নিচের দিকে চাপা, তাহলে তো কথাই নেই।
তবে সব কথার ওপরে সবচেয়ে বড় কথা নিজের স্বাচ্ছন্দ্য ও আরাম। রুম্মায়লা সিদ্দিকীর মতে, কেউ যদি স্বচ্ছন্দবোধ না করে, তাহলে কখনোই এমন পোশাক পরা উচিত নয়; বরং মাঝেমধ্যে এটি এ বয়সী মেয়েদের মধ্যে জড়তা এনে দেয়। আর যাই হোক, উচ্ছলতার ঈর্ষণীয় সময়ে জড়সড় হয়ে থাকাটা মোটেই কাম্য নয়।
লেহেঙ্গা এখন আমাদের দেশে খুব একটা জনপ্রিয় নয়। মাহিন খান জানান, এর পরিপূরক হিসেবে অনায়াসে পরা যেতে পারে লং স্কার্ট। খাটো স্কার্টগুলো এসব অনুষ্ঠানে না পরাটাই বাঞ্ছনীয়। উৎসবমুখর পরিবেশে এটা খুব একটা মানায় না। বায়াজড কাট, মারমেইড কাট, ফিশ কাট, নি লেংথ কাট ও কলির ঘের দেওয়া লম্বা স্কার্টগুলো ঘাগরার একটা প্রতিফলন নিয়ে আসে। পাশাপাশি হালকা হওয়ায় কৈশোরের দুরন্তপনায় ভালোই খাপ খেয়ে যায়। পরা যেতে পারে চোলি কাটের ব্লাউজ, শর্ট ব্লাউজ বা ফতুয়া।
তবে এ ক্ষেত্রে স্কার্টটা এক রঙের হলেই বেশি ভালো দেখাবে বলে মনে করছেন রুম্মায়লা সিদ্দিকী। টপটাই বরং বর্ণিল হোক বাহারি রঙে।

দেশি ছাঁটে কৈশোরের ঢং
‘১৬-১৭ বছর বয়সে নিজেকে বড় ভাবার প্রবণতা মাঝেমধ্যে হয়েই থাকে। দেশীয় অনুষ্ঠান বা জমকালো নিমন্ত্রণে এ জন্য শাড়ি পড়ার ভাবনাটা আসতেই পারে। শাড়ির ক্ষেত্রে এ বয়সটা একটু অপরিপক্ব। সে ক্ষেত্রে শিফন, জর্জেট ও নেটের শাড়িগুলোই বেশি মানানসই হবে এ বয়সে।’ এমনটি মনে করছেন মাহিন খান। স্বাচ্ছন্দ্যও আসবে আবার ভারিਆি ভাবও লাগবে না। তবে উৎসবমুখর অনুষ্ঠানে এখন পর্যন্ত সালোয়ার-কামিজই জয়ী। চুড়িদারের সঙ্গে কলির ছাঁটে অথবা হাঁটু পর্যন্ত কামিজগুলোই বেশি মানানসই। এ ছাড়া শর্ট কামিজের সঙ্গে ধুতি সালোয়ার কৈশোরের উচ্ছলতার সঙ্গেই তাল মেলাবে।

রঙের বাহার
কৈশোর মানেই রঙিন। নিজের রঙে চারদিক রাঙানো। তাহলে পোশাকের রং বাছাইয়ে কেন থাকবে সীমারেখা। যেমন খুশি রং করব, ভাবনাটি থাকা উচিত এমনই এ বয়সে। তবে দিনের বেলায় গাঢ় রংটি না পরাই ভালো। খুব ম্রিয়মাণ রংও যেন সঙ্গী না হয় এ বয়সে। বরং হালকা কিন্তু উজ্জ্বল রংই প্রকাশ করুক আপনার উচ্ছলতা। আকাশি, হালকা সবুজ, জলপাই, নীল, চাপা সাদা, সাদা অথবা বিভিন্ন পেস্টেল রং পরার পরামর্শ দিলেন মাহিন খান। কাপড়ের রঙে বেশি সাদামাটা ভাব চলে এলে ওড়নাটি উজ্জ্বল রঙের পরা উচিত।
দিনের মতো রাতেও কিছু রং পরার কথা জানালেন রুম্মায়লা সিদ্দিকী। লাল, কালো ও সাদার পাশাপাশি পরা যেতে পারে গাঢ় নীল, লালচে সোনালি, গাঢ় বেগুনি ইত্যাদি রং। আলমারি থেকে বের করে আনা হোক প্রিয় গাঢ় রঙের পোশাকগুলো রাতের জমকালো অনুষ্ঠানের জন্য।

প্রসাধনীর ব্যবহারে অনাড়ম্বরতা
মা কিংবা বড় বোন এখন ঘরে নেই। টুক করে একটু লিপস্টিক বা নতুন কেনা কাজলটা লাগিয়ে দেখা যাক। প্রসাধনীর প্রতি আগ্রহটা বাড়তে থাকে এভাবেই এ বয়স থেকে। তবে তা থাকা উচিত নির্দিষ্ট একটা সীমারেখার মধ্যেই। কারণ শৈশবের মজা তো এখানেই। বয়সের উচ্ছলতা, ঈর্ষণীয় ত্বকের জৌলুশ ও সৌন্দর্য যে প্রকাশ পায় অনাড়ম্বরতার মধ্য দিয়েই। অনুষ্ঠানগুলোতে পাকামি করে তাই একগাদা প্রসাধনীর ব্যবহারকে আজ থেকেই ‘না’ বলা হোক। পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে দেওয়া হোক হালকা প্রসাধনীর ছোঁয়া। ‘এখনকার প্রসাধনীর ব্যবহারটা হচ্ছে হালকা। খুব একটা চোখে লাগবে না।’ বললেন এলিগেন্স বিউটি স্যালনের কর্ণধার নীপা মাহবুব।
পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গে মেলাতে চোখে একটু মোটা করে কাজল লাগালে ভালো লাগবে। জিনসের সঙ্গে আই শ্যাডো খুব একটা ভালো হয় না। তাই এটা না ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন তিনি। ব্লাশ অন একদম হালকা। লিপ গ্লসটাও খুব কড়া করে না লাগানোই ভালো।
প্রসাধনী ব্যবহার করার মনের যে বাসনা, তা পূরণ করে নিন দেশীয় পোশাকের সঙ্গে। একটু জমকালোভাবে সাজার স্বাধীনতা এখানে পাওয়া যাবে। গ্লিটার দেওয়া আই লাইনার, হালকা আই শ্যাডো ও ব্লাশ অন ব্যবহারে সাজানো যাবে নিজেকে। তবে অবশ্যই পরিমিত আকারে। দিনের চেয়ে রাতের অনুষ্ঠানে লিপ গ্লসটা বেশি ভালো লাগবে।
অনুষ্ঠান ও পরিবেশের কথা মাথায় রেখে চুলের স্টাইলটা করতে হবে। এই বয়সের সঙ্গে খুব ভারিਆি স্টাইল কখনোই মানাবে না। সে ক্ষেত্রে খোঁপা না করাই ভালো, বরং পনিটেল করা যেতে পারে। চুলটাকে একটু কোঁকড়া করে খোলা রাখা যায়। চুলে ব্যাংসের স্টাইলও মন্দ লাগবে না একেবারে।

হালকা গয়নায় প্রাণবন্ততা
ভারী ভারী গয়না পরে কৈশোরের প্রাণবন্ততা ঢেকে দেওয়ার কোনো মানে হয় না। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সোনার গয়না বাদ দিয়ে একটু মজার গয়নাগুলো পরা যেতে পারে। পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গে এক পায়ে নুপূর বা আংটি পরা যেতে পারে। এতে ভালো লাগবে বলে জানালেন মাহিন খান। তিনি বলেন, কানে ছোট দুল, হাতে একটা বড় বালাই এ বয়সের উপযোগী। খুব বেশি অলংকার ব্যবহারের জন্য কৈশোরটা মোটেও উপযুক্ত নয়।
রুম্মায়লা সিদ্দিকী জানান, চেহারার গড়ন অনুযায়ী দুল পরা উচিত। কানে বা হাতে কাঠের, হাড়ের, মাটির তৈরি গয়নাগুলো পরা যেতে পারে। বৈপরীত্য আনতে চাইলে শুধু গলায় লম্বা, ভারী মালা অভিনবত্ব আনবে পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গে।

পায়ের তালে নজর কাড়ুন
‘ছোট ছোট পা মায়ের ছোট হিল দেওয়া স্যান্ডেলের দিকেই বারবার দৌড়ে যায়। নিষেধ করার পরও যায় না আকর্ষণ। দু-তিন বছরের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটি হরহামেশাই দেখা যায়। ফ্যাশনটা একটু বুঝে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১৫-১৬ বছর বয়সে এ চাহিদাটা বেড়ে যায় আরও। ফলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যায় পায়ে হাই হিলের বাহার। কিন্তু এই বয়সে হাই হিল একদমই পরা উচিত নয়।’ বললেন মাহিন খান। জিনসের সঙ্গে ক্লোজ জুতো, ফ্ল্যাট বা ব্যালেরিনা জুতোগুলোই মানানসই। দেশীয় পোশাকে নাগরা, দুই ফিতাওয়ালা, ছোট একটু হিল দেওয়া স্যান্ডেলগুলোই ভালো ছন্দ মেলাবে বলে তিনি মনে করেন। বাদ যাবে কেন ব্যাগটি। রিস্ট পার্স বা ক্লাচ ব্যাগে হয়ে উঠুন ফ্যাশনেবল কিশোরী।

পরিচ্ছন্নতাই সৌন্দর্য
কৈশোরে ত্বকের যত্ন নেওয়ার একটাই উপায় জানালেন নীপা মাহবুব। তা হলো ত্বক পরিষ্ককার রাখা। দিনে দুবার ক্লিনজার দিয়ে মুখ নিয়মিত ধোয়া উচিত। সাবান দিয়ে মুখ পরিষ্ককার না করাই ভালো।
পানির পরিমাণ বেশি এমন একটি ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। মুখ, গলা ও হাতে ভালোভাবে ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। শুষ্কক ত্বক প্রায় প্রতিদিন স্ক্রাব দ্বারা পরিষ্ককার রাখতে হবে। তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীদের কষ্ট একটু কম হবে এ ক্ষেত্রে। সপ্তাহে এক দিন ধুলেই হবে। কৈশোরের এ বয়সটি থেকেই ম্যানিকিওর পেডিকিওর নিয়মিত করানো উচিত বলে মনে করছেন নীপা। তবে ফেসিয়াল নয়। এর জন্য কৈশোর পেরোতে হবে। যাদের ত্বকে ব্ল্যাকহেডস বেশি, তারা শুধু সেটুকু উঠিয়ে ফেলুন।

ডিমের ঝুড়ি

ডিমের নানান রান্নার সাথে যদি ডিমের একটা সাজানো ডিশ থাকে তাহলে পুরো ডাইনিংটা সেজে উঠবে ডিম আয়োজনে। ডিমের এমনই একটি ডিশ হচ্ছে ডিমের বাস্কেট। রেসিপি প্লাসে থাকছে তারই প্রস্তুত প্রণালী।

১) ডিম সিদ্ধ করে নিন। সাদা ডিমগুলো একটু রাঙ্গিন করে নিতে পারেন খাবার রঙ মিশিয়ে। এবার ধারালো ছুড়ি দিয়ে ডিম কাটতে হবে।
২) ডিমের তলা একটু খানি কেটে ডিমটাকে দাড়িয়ে থাকার উপযোগী করে নিন। এবার উপর থেকে ছবির মতো করে এপাশ ওপাশ কেটে ফেলুন।
৩) এবার ডিমের ভেতর থেকে কুসুমটা বের করে ফেলুন। ভেতরে জায়গা তৈরি করে নিন যেন পুর ভরা যায়।
৪) কুচি করা কিছু সবজি আগেই একটু ভেজে তৈরি করে রাখুন। মনে রাখবেন এখানে রান্না করা কিছু সবজি ব্যবহার করতে হবে। আর সবজিগুলো নানান রঙের হলে দেখতে ভাল লাগবে।
৫) পুর ভরা এই বাস্কেট পেয়াজ কলি, টমেট কুচি দিয়ে গার্নিশ করে পরিবেশন করুন। ভাত কিংবা পেলাওয়ের সাথে এটি খেতে দারুণ লাগবে।

ফিটনেসের জন্য মনোসংযোগ

প্রতিদিন আয়নায় তাকালে একবার বোধদয় হয় নিজের শরীরের ফিটনেস লেভেল আর বাড়তি মেদের প্রতি। কিন্তু সেই বোধদয় আবার আয়নার প্রতিবিম্ব থেকে সরে গেলে কোথায় যেন হারিয়ে যায়। খাবার টেবিলে কিংবা ফাস্টফুড শপে যখন খুব ভারি ভারি খাবারের স্বাদ নিতে হয় তখন মনে পড়ে না। কিন্তু বাসায় ফিরে শরীরের ভেতর যখন অবসাদ বাসা বাঁধে তখন মনে হয় একটু এক্সারসাইজ করলে কি এমন হয়? আসলে আপনি নিজেও জানেন না, প্রতিদিন চেতনার ভেতরে এরকম বার বার অনুভূতি তৈরি হলেও কোন এক অজানা কারণে ফিটনেস লেভেল বাড়ানোর চেষ্টা আর শুরু করা হয় না। অথচ আপনি নিজেই পারেন আপনার মোটিভেশন লেভেল গড়ে তুলতে। অনেক সময় মনে হয় জিম থাকলে বোধহয় আপনার বর্তমান অবস্থা হতো না, কখনো কখনো ভাবেন বাসায় ট্রেডমিল থাকলে হতো। কখনো আবার একগাদা ফিটনেসের বই, ভিডিও টেপ কিংবা এক্সারসাইজের জন্য রিদমিক অডিও সিডি কিনে নিয়ে আসেন। কিন্তু শুরু আর করা হয় না। অথচ আপনার চারপাশে এরকম অনেক উপায় ছড়িয়ে আছে। শুধুমাত্র মনোসংযোগ বাড়ানোর মাধ্যমেই আপনি নিজের প্রত্যয়কে একটি সুনির্দিষ্ট অবস্থানে নিয়ে যেতে পারেন। প্রথমেই ভেবে নিন, কেন আপনি এক্সারসাইজ করবেন? মনে রাখবেন, যেকোনো কাজ করার জন্য যেমন একটা কারণ নির্দিষ্ট হিসেবে পেছন থেকে কাজ করে তেমনি আপনার ফিটনেস লেভেল বাড়ানোর জন্য এক্সারসাইজ অলওয়েজ ওয়ান এন্ড অনলি ওয়ে। কেন আপনি সেই উপায়টি গ্রহণ করছেন না, তা নিজেকেই প্রশ্ন করুন। প্রতিদিন কোনো বাজে অজুহাতে আপনি কী তা এড়িয়ে যাচ্ছেন, না সময় পাননি বলে নিজেকেই তাড়িৎ করছেন। আসলে এর কোনোটিই আপনার সমাধান দেবে না। বরং এক্সারসাইজের জন্য আপনার মনোসংযোগ বাড়াতে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি কাজ করবে তা হচ্ছে এর ফলে আপনি কী পাবেন তা ভেবে নিন। মনে রাখবেন, আয়নায় প্রতিদিন নিজের প্রতিবিম্বকে আর উপহাস করতে হবে না। সুনির্দিষ্ট কারণ বের করার পর নিজের কাছেই কমিটমেন্ট করতে শিখুন। মনে রাখবেন, প্রতিশ্রুতি দেয়া যত সহজ রক্ষা করা ততোটা নয়। তবে হতাশ হবেন না, প্রথমেই যে আশিভাগ ফল পাবেন তা কিন্তু নয়। সপ্তাহের শুরুতেই আপনার এই সপ্তাহের ফিটনেস চার্ট ঠিক করে নিন। প্রতিদিন কী কী এক্সারসাইজ করবেন এবং কতক্ষণ করবেন তা আগে থেকেই ঠিক করে নিন। লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন এমন টার্গেটই ঠিক করুন। কেননা, এই সপ্তাহে টার্গেটে পৌঁছাতে পারলে আগামী সপ্তাহে নতুন টার্গেট নির্ধারণে আপনার সহজ মনভঙ্গি প্রতিশ্রুতিশীল হয়ে উঠবে। সম্ভব হলে একটি ডায়েরি রাখুন। কি লক্ষ্য ঠিক করলেন আর কি বাস্তবায়িত হলো তার একটি তুলনামূলক চিত্র গ্রহণ করুন। এভাবেই লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছে প্রতিনিয়ত আপনার মনোসংযোগ বাড়তে থাকবে। একটা সময় গিয়ে দেখবেন, দীর্ঘক্ষণ এক্সারসাইজ করা আপনার জন্য আর কঠিন কিছু নয়। বরং আপনার উন্নতি অন্যদের জন্য উদাহরণ হতে পারে।

এ সময়ের হাতঘড়ি

সাদিফ প্লে-গ্রুপে ভর্তি হতে না হতেই হাত ঘড়ি কিনেছে। আর সাদিফের বাবা যখন এসএসসি পরীক্ষা দেয় তখন প্রথম ঘড়ি পরা শুরু করে। এ সময়ের সবাই সময় সচেতন। সময় সচেতনতার পাশাপাশি ফ্যাশনকেও প্রাধান্য দিয়ে ঘড়ি কিনছে ছোট-বড়, ছেলে-মেয়ে সবাই। এ সময়ের ফ্যাশনেবল তরুণ/তরুণীরা চওড়া স্টেইনলেস স্টিল, চেইন এবং ক্রিস্টাল পাথরের বেল্টের ঘড়ি পরে। দেখতে কিছুটা ব্রেসলেটের মতও লাগে। ছোটদের ঘড়িতে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় খেলা থাকে। ঘড়ির কাজও হবে এবং শিশুদের একটা খেলার উপকরণও হয়। এ সময়ের মানুষের ব্র্যান্ড সচেতনতাও বেড়েছে। বিশ্বের নামকরা সব ব্র্যান্ডের ঘড়িই পাওয়া যাচ্ছে এদেশের ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে। যেসব ব্র্যান্ডের ঘড়ির চল রয়েছে তার মধ্যে পিরেরে ডুরাল্ড, ফিনিপ পাটেক, পিরেরে কার্ডিন, লনজিন্স, সিটিজেন, ক্যাসাব্লাঙ্কা, সিকো, ফাস্ট ট্র্যাক, টাইটন, ওমেগা, রোমানসন, রোলেক্স, টিসট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ব্র্যান্ড এবং মানের উপর নির্ভর করে হাতঘড়ির দাম পড়তে পারে ১ হাজার/দেড় হাজার থেকে ২০/২২ লাখ টাকা পর্যন্ত। তবে যারা কম দামে দেশীয় ব্র্যান্ডের ভাল ঘড়ি কিনতে চান তারাও কিনতে পারেন ২০০/২৫০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে। সবচেয়ে কম দামে ভাল মানের বিভিন্ন ধরনের ঘড়ি কিনতে পাওয়া যায় পাটুয়াটুলিতে। এছাড়া বিভিন্ন মার্কেটে আপনার পছন্দমত ঘড়ি কিনতে পারেন। ছোট বড় সব বয়সের মানুষের রুচির সাথে মানানসই ঘড়ি কিনতে পাওয়া যায় বিভিন্ন জেলা শহর, বিভাগীয় শহরের বিভিন্ন মার্কেটের হাতের ধরন, গড়ন বুঝে ঘড়ি পরুন। আপনার হাত মোটা হলে চিকন বেল্টের ঘড়ি মানাবে। হাত যদি চিকন হয় সেক্ষেত্রে চওড়া বেল্টের ঘড়ি মানাবে। যারা পোশাকের সাথে ম্যাচিং করে ঘড়ি পরতে চান তারা ঘড়ির ডায়ালের রঙটা এমনভাবে নির্বাচন করুন যাতে কমবেশি সব পোশাকের সাথে মানিয়ে যায়।

মধ্যবয়সী মেয়েরা অফিসে, পার্টিতে চিকন বেল্টের এবং ডায়ালের ঘড়ি পড়তে পারেন।

হাতঘড়ির স্টাইল
০ ঘড়ির ডায়ালটা হাতের পিঠের দিকে ঘুরিয়ে পরতে পারেন। হাতের কব্জির কাছাকাছি এনে ঢিলেঢালাভাবে ঘড়ি পড়াটাই অনেকের কাছে আধুনিকতা।
০ হাতের আঙ্গুলে রিং ঘড়ি পাওয়া যায়। আপনার আঙ্গুলের সেপ সুন্দর হলে কিংবা ব্যবহারের সুবিধার্থে আঙ্গুলে রিং ঘড়ি পরতে পারেন।
০ হাতের কব্জি বা রিস্ক যদি চিকন হয় তাহলে মেটাল বেল্টের পরিবর্তে লেদার টাইপ বেল্ড বেশি মানিয়ে যায়।
০ অফিস বা পার্টিতে মেটাল বেল্টের ঘড়ি মধ্যবয়সীদের কাছে আভিজাত্যের প্রতীক।
০ মেয়েদের হাতে চিকন বেল্ট কিংবা ছোট ডায়ালের ঘড়ি বেশি মানানসই।
০ যাদের লাইফস্টাইলের কারণে হাতঘড়ির রাফ ইউজের সম্ভাবনা রয়েছে তারা সম্ভব হলে সাফায়ার ক্রিস্টালের হাতঘড়ি কিনতে পারেন।

ঠোঁটের মেক-আপ

ঠোঁটের সৌন্দর্যে

মুখের সৌন্দর্যের অন্যতম আকর্ষণ একজোড়া ঠোঁট। শুধু ঠোঁট নয়, সুন্দর আকর্ষণীয় ঠোঁট। ঠোঁট খুব সেনসেটিভ, গরমে এবং শীতে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায় তাড়াতাড়ি। ঠোঁটের সৌন্দর্য বজায় রাখতে একটু বেশি সচেতন হতে হবে। ঠোঁট সুন্দর, আকর্ষণীয় করতে হলে নিয়মিত ঠোঁটের যত্ন নিতে হবে। ঠোঁটের সৌন্দর্যে করণীয়-
লিপস্টিক : মুখমন্ডলের প্রয়োজনীয় মেক-আপের শেষ পর্যায়ে লিপস্টিক লাগাতে হবে। পোশাক ও মেক-আপের সাথে সাথে মানিয়ে লিপস্টিকের রঙ বেছে নিবেন। যে-রঙই ব্যবহার করুন না কেন ঠিকমত লাগাতে না পারলে মুখমন্ডলের সৌন্দর্য ঠিকমত ফোটানো যাবে না। রঙ বেছে নেবার পর ঠোঁটের আকার ঠিক করুন। মুখের গড়নের সাথে মিলিয়ে দরকার মতো ঠোঁটের আকার ছোট বড় করুন। যারা ঠোঁটের আকার বাড়াতে বা কমাতে চান তারা আসল সীমারেখার কিছুটা বাইরে বা ভেতর দিয়ে ঠোঁটের মানানসই আউট লাইন এঁকে নেবেন। আউট লাইন আঁকতে হবে লিপ ব্রাশ দিয়ে। যে লিপস্টিক ব্যবহার করবেন তার থেকে এক শেড গাঢ় বা হালকা লিপস্টিক দিয়ে আউট লাইন করতে হবে। আউট লাইন আঁকা শেষ হলে মূল রঙের লিপস্টিক বুলিয়ে বুলিয়ে বা ব্রাশ দিয়ে লিপস্টিক লাগিয়ে প্রথমে উপরের ঠোঁটে ও পরে নিচের ঠোঁটে ভরাট করুন। এমনভাবে ভরাট করবেন যাতে মূল রঙ আউট লাইনের সাথে মসৃণভাবে মিশে যায়। লক্ষ্য রাখবেন লিপস্টিকের রঙ যাতে আউট লাইনের বাইরে না লেগে যায়।
লিপগ্লস : আগের মতো লিপলাইনারের সাথে লিপগ্লসের ব্যবহার এখন নেই। লিপগ্লস হালকা ন্যাচারাল কালারের হয়ে থাকে কিংবা অন্যান্য সব কালারের আছে কিন্তু লিপস্টিকের মত গাঢ় না। এখন লিপগ্লাসের ব্যবহার বেশি হচ্ছে। গরমের দিনে দিনের বেলা হালকা লিপগ্লসের আবেদন বেশি। গাঢ় রঙের লিপগ্লস রাতে ব্যবহার করা ভাল। লিপগ্লসের রঙ বেছে নেবেন মূল লিপস্টিকের রঙের কাছাকাছি শেডে। বর্ণহীন লিপগ্লস সব রঙের লিপস্টিকের ওপর লাগানো যায়। লিপগ্লস দুই রকমের পাওয়া যায়। স্টিক লিপগ্লস ও লিক্যুইড লিপগ্লস। স্টিক লিপগ্লস সরাসরি লিপস্টিক লাগানো ঠোঁটে লাগানো যায়। আর তুলির সাহায্যে লিক্যুইড লিপগ্লস ঠোঁটে লাগাতে হয়।
ঠোঁটের আকার পরিবর্তন করা : সকল ঠোঁটের আকার মানানসই হয় না। ঠোঁটের আকার মানানসই না হলে লিপস্টিক ব্যবহার করলেও দেখতে ভাল লাগে না। তখন প্রয়োজন হয় গাঢ়, মাঝারি বা হালকা রঙের লিপস্টিক লাগিয়ে ঠোঁটের আকার মানানসই করে নেয়া। ঠোঁটের আকার পরিবর্তন করতে চাইলে প্রথমেই যে রঙের ফাউন্ডেশন বেছে নেবেন সে ফাউন্ডেশন আঙুলে নিয়ে ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। এভাবে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিলে ঠোঁটের আউট লাইন বাড়িয়ে বা কমিয়ে লিপস্টিক লাগালে লিপস্টিকের রঙ ফেঁটে যাবে না। ১০ মিনিট পর লিপ ব্রাশে লিপস্টিক লাগিয়ে সে ব্রাশ খুব সরু করে প্রয়োজনমত সীমারেখা বাড়িয়ে বা কমিয়ে মানানসই আউট লাইন এঁকে নিন। খুব সতর্ক হয়ে আউট লাইন আঁকবেন যাতে এ আউটলাইন ঠোঁটের মূল সীমারেখা থেকে খুব বেশি ভেতরের বা বাইরে না যায়।
পাতলা ঠোঁট: পাতলা ঠোঁট ভরাট দেখানোর জন্য ঠোঁটের প্রকৃত সীমারেখার ঠিক বাইরে আউট লাইন এঁকে নিন হালকা রঙের লিপস্টিক দিয়ে লিপ ব্রাশের সাহায্যে। এখন গাঢ় রঙের লিপস্টিক আউটলাইন বরাবর সারা ঠোঁটে লাগালে ঠোঁট অনেক ভরাট দেখাবে।
পাতলা ছোট ঠোঁট : আউট লাইন এঁকে নিন হালকা রঙের লিপস্টিক দিয়ে লিপ-ব্রাশের সাহায্যে। এখন গাঢ় হালকা রঙের লিপস্টিক লিপ ব্রাশে নিয়ে আউট লাইন এঁকে নিন। এবার গাঢ় বা হালকা রঙের লিপস্টিকে ঠোঁট ভরাট করে নিন। সবশেষে লিপগ্লস লাগিয়ে ঠোঁট চকচকে উজ্জ্বল করে নিলে ঠোঁট মানানসই দেখাবে।
দুইকোণা চাপা ভরাট ঠোঁট : যাদের ঠোঁট এরকম তারা সব-সময় হালকা রঙের লিপস্টিক লাগাবেন। এছাড়া যে রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করতে চান সেই লিপস্টিক লিপব্রাশে দুইকোণ বাড়িয়ে মানানসই আউট লাইন আঁকুন। এবার মাঝারি বা হালকা রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করে ঠোঁট ভরাট করুন। এভাবে করলে উজ্জ্বল গাঢ় রঙের লিপস্টিক ও লিপগ্লস লাগাবেন।
ফোলা ঠোঁট : যাদের ঠোঁট ফোলা ধরনের তারা ঠোঁট মানানসই করার জন্যে ঠোঁটের প্রকৃত সীমারেখা বরাবর বা সামান্য কমিয়ে আউট লাইন আঁকুন। ঠোঁটের দু’কোণায় আউট লাইন মেলাবে না, সামান্য ফাঁক রাখবেন। এবার গাঢ় বা মাঝারি রঙের লিপস্টিকে ঠোঁট ভরাট করুন। ভরাট ঠোঁটে কখনো লিপগ্লস ব্যবহার করবেন না।
প্রসারিত ঠোঁট : প্রসারিত ঠোঁটের জন্য আউট লাইন আঁকুন হালকা রঙের লিপস্টিক লিপ ব্রাশ দিয়ে। দুই কোণায় সামান্য ফাঁক রাখবেন। যে রঙের লিপস্টিক দিয়ে ঠোঁট ভরাট করুন না কেন, তা ঠোঁটের মাঝের অংশে লাগান গভীর করে ও দুই পাশে লাগান অপেক্ষাকৃত হালকা করে।

ঠোঁটের যত্নে করণীয়
০ বিভিন্ন ঋতুতে আবহাওয়ার অত্যাচার থেকে ঠোঁটকে রক্ষা করতে হলে সবুজ শাক-সবজি, ফল প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। প্রচুর পানি খেতে হবে।
০ ঠোঁট শুষ্ক হলে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করবেন। এতে ঠোঁট নরম এবং সজীব হবে। লিপ বাম, লিপ গ্লস ব্যবহার করবেন যা শুষ্কতা থেকে ঠোঁটকে রক্ষা করবে এবং ঠোঁটে এনে দিবে আলাদা সৌন্দর্য।
০ সানস্ক্রিন লিপ গ্লস ব্যবহার করবেন সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ঠোঁটকে রক্ষা করতে।
০ ধূমপানমুক্ত থাকুন। ধূমপান করলে ঠোঁট শুষ্ক এবং মলিন হয়ে যায়। ঠোঁটের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মরে যায়। ঠোঁট কালো হয়ে যায়। ধূমপান করার ফলে রক্ত কালো হয়ে যায়। যার প্রভাব ঠোঁটের উপর পড়ে।
০ ঠোঁটের যত্নে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করুন। দাঁত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকলে ঠোঁটের সব সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যাবে। দাঁতে খাদ্য কণা লেগে থাকলে অসংখ্য জীবাণুর জন্ম হয় যা ঠোঁটের জন্যও ক্ষতিকর। তাই নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করুন এবং ব্রেথ স্প্রে অথবা মাউথ ওয়াস ব্যবহার করুন।

Sunday, June 14, 2009

চুলের যত্নেও স্পা

জীবনানন্দ দাশ- ‘বনলতা সেন’ কবিতায় এমন এক বাক্য লিখেছেন চুল নিয়ে কোনো লেখা লিখতে গেলই কলমের ডগায় চলে আসে ‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশাঃ’। সুস্থ সুন্দর চুল কে না চায়? তবে সে জন্য চাই নিয়মিত পরিচর্যা।

রূপচর্চার অনন্য এক পদ্ধতি স্পা। শুধু ত্বক নয় চুলের যতেœও এই স্পা সমান কার্যকরী। ‘হেয়ার স্পা’ নামেই এর পরিচিতি। হেয়ার স্পা করাতে প্রথমে আপনার চুল কী ধরনের, মাথার ত্বকে কোনো সমস্যা আছে কি-না এসব পরীক্ষা করাতে হয়। এরপর অয়েল মাসাজ, শ্যাম্পু, হেয়ার মাস্ক, কন্ডিশনার ব্যবহার করে মাথার তালু ও চুল নরম ও মসৃণ করে তোলা হয়। শ্যাম্পু করার সময় অন্তত দশ মিনিট ধরে মাসাজ করতে হয়। শ্যাম্পু করার সময় অন্তত দশ মিনিট ধরে মাসাজ করতে হয়। শ্যাম্পুর পর নিবিড় কন্ডিশনিং মাস্ক লগিয়ে আরো ২০-২৫ মিনিট মাসাজ করা হয়। হেয়ার স্পাতে চুলের প্রকৃতি অনুযায়ী ক্রিম ব্যবহার করে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগানো হয়। পুরো স্পা করতে প্রায় একঘন্টা সময় লাগে। সাধারণত এক্সপার্ট বিউটিশিয়ানরা স্পা করিয়ে থাকে। তবে বাড়িতেও হেয়ার স্পা করতে পারেন।

হেয়ার স্পা করলে চুলের অনেক উপকার হয়। অয়েল মাসাজের ফলে মাথার তালুতে ও ত্বকে রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধি পায়। চুল নরম ও মসৃণ হয়। ত্বকে চুলকানোর সমস্যা থাকলে অর্থাৎ স্পর্শকাতর ত¦কে হেয়ার স্পা করতে পারেন। তৈলাক্ত চুলের সমস্যা কমাতেও হেয়ার স্পা সমানভাবে কার্যকরী। অতিরিক্ত শুষ্ক চুল, ভাঙ্গা চুল, খুশকির মতো সমস্যায় স্পা খুব উপকারী। অতিরিক্ত দূষণের কারণে বেশি আয়রনযুক্ত পানিতে চুল ধোঁয়ার ফলে চুলের অবস্থা খারাপ হলেও স্পা করতে পারেন, চুল পড়া বন্ধে স্পা খুব কার্যকরী। হেয়ার স্পা শুধু চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না। স্ট্রেস কমাতেও সাহায্য করে।

চুলের ধরন অনুযায়ী কন্ডিশনিং
আপনার চুল যদি রুক্ষ, নিস্তেজ, অতিরিক্ত ঘন, কোঁচকানো হয় তাহলে বেছে নিন ময়শ্চারাইজিং বা হাইড্রেটিং ট্রিটমেন্ট। ঘন ক্রিমের মতো কন্ডিশনার চুলের ময়শ্চার বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাতে চুলও নরম হবে, চুলে জট পড়াও কমবে। বিভিন্নভাবে চুলের স্টাইল করা সহজ হবে। শুষ্ক ত্বকের জন্যও এই ধরনের ময়শ্চারাইজিং ট্রিটমেন্ট খুব উপকারী। ভাল করে চুলে কন্ডিশনার লাগিয়ে একবার ব্রাশ করে নিন। এতে প্রতিটি চুলের গোড়ায় কন্ডিশনার পৌঁছাবে। চুলে কালার করা থাকলে, রোদে চুল নষ্ট হয়ে গেলে কিংবা চুল পাম করা থাকলে বেঁছে নিন প্রোটিন রিকনস্ট্রাকটিং কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট। এই ধরনের কন্ডিশনার লিক্যুইড হয়। ময়শ্চারাইজিং প্রোটিন কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুল মজবুত হয়। ড্যামেজ চুলের জন্য নিয়মিত এই প্রোটিন কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট জরুরি।

স্পা করুন বাড়িতে
বাড়িতে হেয়ার স্পা করার জন্য প্রয়োজন মাইল্ড হার্বাল শ্যাম্পু ও প্লাস্টিকের শাওয়ার ক্যাপ। এছাড়া লাগবে তোয়ালে, বড় দাঁতের চিরুনি, হেয়ার কন্ডিশনিংয়ের উপকরণ ইত্যাদি। স্পা করার আগে অবশ্যই চুল শ্যাম্পু করে নিন। এতে চুল পরিষ্কার হবে। চুল পরিষ্কার থাকলে হেয়ার কন্ডিশনিংয়ের উপকরণগুলো সহজে চুলের গোড়ায় প্রবেশ করবে। অল্প পরিমাণে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। ভালো করে পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নেবেন। তারপর মাথায় তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন। চুলের ভেজা ভাব কমে গেলে চুল আঁচড়ান। চুলের ডগা থেকে জট ছাড়াতে শুরু করুন। প্রথমেই চুলের ওপরের অংশ থেকে জোরে বা টেনে চুল আঁচড়াবেন না। স্পা’র জন্য প্রয়োজনীয় হেয়ার মাস্ক বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন। ১টা ডিম, ১ টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল, ১টা লেবুর রস, ১ চা-চামচ গ্লিসারিন বা মধু ভাল করে মিশিয়ে নিন। এগ বিটার দিয়ে ফেটে মিশিয়ে নিন। চুল ও তালুতে মিশ্রণটি ভাল করে লাগান। এরপর প্লাস্টিক শাওয়ার ক্যাপ পরে থাকুন একঘন্টা। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।

অন্যরকম উপহার

০ যেকোনো মানুষই তার নিজেকে নিয়ে ভাবতে ভালোবাসে। তার সম্পর্কে অন্য মানুষের যে মূল্যায়ন সেটিও জানবার আগ্রহ থাকে অনেকের মনে। কাজেই আপনার প্রিয় মানুষটির অজান্তে এবং তাকে বুঝতে না দিয়ে তার কাছের মানুষদের মন্তব্য বা জন্মদিন হলে জন্মদিনের শুভেচ্ছা একটি সুদৃশ্য ডায়রীতে লিখে নিন। তারপর সুন্দর ভাবে প্যাক করে তার সাথে নিজের মন্তব্যটি আলাদা করে জুড়ে দিন। দেখবেন আপনার প্রিয় মানুষ কি ভীষণ রকম চমকে যাবে আপনার এই উপহারে।
০ আপনি যাকে গিফট দিচ্ছেন সে যদি আপনার খুব পরিচিত কেউ যেমন ভাই-বোন, মা-বাবা, বন্ধু বা প্রিয় কেউ হয় তাহলে তার কি প্রয়োজন সে বিষয়টিও আপনার জানা থাকতে পারে। এক্ষেত্রে আগে থেকে জানা অথচ প্রয়োজনীয় কিছু গিফট করেও বাহবা কুড়ানো যেতে পারে।
০ উপহার দেয়ার মানে দামী কিছু দিয়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করা নয়। বরং আপনার উপহার আপনার আন্তরিকতা কতটা প্রকাশ করে সেটিই মুখ্য বিষয়। কাজেই বাজার থেকে কেনা উপহারই হোক কিংবা নিজের বানানো কোনো উপহার তাতে যেনো আন্তরিকতার ছোঁয়া থাকে সেটি নিশ্চিত করুন। উদাহরণস্বরূপ কেনা কোনো উপহারের সাথে যোগ করে দিন আপনার নিজের লেখা চিঠি বা হাতে বানানো ছোট একটা কিছু। অন্যদিকে যারা রান্না-বান্নায় সিদ্ধহস্ত তারা প্রিয় মানুষের জন্মদিন বা বিবাহবার্ষিকীতে তার প্রিয় কোনো খাবার রান্না করে দিতে পারেন।
০ চমক দেয়া গিফট এর জন্য যারা খানিকটা ঝুঁকি নিতে রাজী তারা চাইলে প্রিয় মানুষটিকে না জানিয়ে তার জন্য বিশেষ কোনো আয়োজন করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ প্রিয় কারো জন্মদিন বা আপনার বিবহবার্ষিকীতে সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে না জানিয়েই আপনাদের নিকটজনকে একটি রেস্তোরাঁয় দাওয়াত করতে পারেন। তারপর আপনি শুধু আপনার প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে খেতে যাচ্ছেন এমন একটি ভাব করে সেই রেস্তোরাঁয় যান। নিজের অজান্তে এতো বড় একটা আয়োজন দেখে প্রিয় মানুষটি অবশ্যই চমকাবেন।
০ বিয়ে বা জন্মদিনে প্রথাগত গিফট না দিয়ে প্রিয় মানুষটির পছন্দের প্রতি লক্ষ্য রাখার চেষ্টা করুন। উদাহরণস্বরূপ সে যদি বই পড়তে বা মুভি দেখতে ভালোবাসে তাহলে তাকে ভাল কিছু বই বা মুভি’র ডিভিডি উপহার দেয়া যেতে পারে।
ফ যাকে উপহার দেয়া হচ্ছে সে যদি এ বিষয়ে ভীষণরকম খুঁতখুঁতে স্বভাবের হয় তাহলে তার হাতে সরাসরি টাকা দেয়ার চাইতে কোনো একটা নামী দোকানে গিফট্ ভাউচার ধরিয়ে দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
০ বন্ধুর জন্মদিনে যদি সম্ভব হয় তাহলে রাত ১২টা ০১ মিনিটে তার বাসায় কেক ও গিফট সহ উপস্থিত হয়েও তাকে চমকে দেয়া যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে নিজের নিরাপত্তা এবং বন্ধুর সুবিধা-অসুবিধার কথাও মাথায় রাখতে হবে।
০ নানা সময়ে তোলা প্রিয় মানুষের ছবি গুলো যদি তার কাছে দূর্লভ হয় তাহলে অন্য উপহারের সাথে এই ছবিগুলোর প্রিন্টও গিফট করতে পারেন।

ফল খান, সুস্থ থাকুন

স্বাস্থ্য রক্ষায় ফলের কোন বিকল্প নেই। সারাদিনে ফল খাওয়া খুব জরুরি। এনভায়রনমেন্টাল টক্সিন ডিটক্সিফাই করার জন্যে অতিরিক্ত পুষ্টির প্রয়োজন। আর ফল সেই প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করে। সপ্তাহে ১ দিন সারাদিন ফল খেয়ে থাকতে পারেন। একে বলে ফ্রুট ফাস্টিং। সারাদিন শুধু ফল খেয়ে থাকলে আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেম কিছুটা রেস্ট পায়। ফলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা অ্যাসিডিটিকে নিউট্রালাইজ করে টক্সিন রিমুভ করে, ফ্যাট বার্ণ করতে সাহায্য করে।
বেশি করে ফল খান। বেশি উপকার পাবেন। কারণ ফলে রয়েছে ফাইবার, যা খাবার হজমে সাহায্য করে। কনস্টিপেশনের সমস্যা থেকে রেহাই দেয় ফল । ফল সহজে হজম হয় আর ব্লাড ও ডাইজেস্টিভ ট্র্যাক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
ফলের মধ্যে প্রোটিন ও ফ্যাটের পরিমাণ কম। ফলে যথেষ্ট পরিমাণে পানি রয়েছে। ব্রেস্টমিল্ক খাওয়া বন্ধ করার পরে বাচ্চাকে প্রথম ফল খেতে দিতে পারলে কারণু ফল অ্যান্টি-অ্যাসিডিক। ফলে উপস্থিত অর্গ্যানিক অ্যাসিড ও ন্যাচারেল হাই সুগার শরীর সুস্থ ও তাজা রাখে, সঙ্গে সঙ্গে এনার্জি দেয়। অথচ এতে ব্লাড সুগার লেভেল বেড়ে যায় না। ভিটামিন, মিনারেল ও এনজাইমে সমৃদ্ধ ফল রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এক্সারসাইজ করার জন্যে বেশি এনার্জি পাওয়া যায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। হাই ব্লাড প্রেশার ও কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে হার্টের সমস্যা প্রতিরোধ করে। নিয়মিত ফল খেলে টাইপ-টঙ ডায়বেটিস হওয়ার আশঙ্কা কম। বার্ধক্য প্রতিরোধ করে।
সিজনাল ফ্রুট খেতে পারলে সবচেয়ে ভাল। সিজনের ফল খেলে ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস থেকে বেশি পরিমাণে উপকার পাওয়া যায়। কৃত্রিম পদ্ধতিতে ফল না পাকিয়ে তার বদলে মৌসুমী ফল খান। এতে বেশি পরিমাণে পুষ্টিকর উপাদান থাকে এবং খেতে বেশি সুস্বাদু হয়। কেমিক্যাল ও কীটনাশক থাকার সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম। ওবেসিটি, ডায়াবিটিস, হাইপারেশন, ক্যানসার, হার্টের সমস্যার মতো ক্রনিক ডিজিজ প্রতিরোধ করতে মৌসুমী ফল অনেকটা সাহায্য করে। এ ছাড়া ড্রাই ফ্রুটস যেমন কিশমিশ, শুকনো খেজুর, ডুমুর খেতে পারেন।
খাবারের সঙ্গে একসঙ্গে না খেয়ে আলাদা ফল চেষ্টা করুন। যেমন ব্রেকফাস্টে বা মিড ইভনিং স্ন্যাকস হিসেবে ফল খেতে পারেন।এক সময়ে যে কোনও এক ধরণের ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। পাকা ফল খান। রান্না করলে ফলের মধ্যের কার্বোহাইড্রেটও নিউট্রিয়েন্ট সল্ট নষ্ট হয়ে যায়। ব্রেকফাস্টে ড্রাই ফ্রুটস খান। ফ্রুট সালাদ খেতে পারেন। কাজে বেরনোর আগে একটা ফল খান।হালকা ওয়র্কআউট করার ৩০ মিনিট আগে বা পরে ফল খান। টিভি দেখতে দেখতে চিপস খেতে অভ্যস্ত্য হলে টিভির সামনে একবাটি ফল রাখুন।ফ্রেস ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন।

পাত্র-পাত্রী দেখার ম্যানার্স

সময়ের সাথে সাথে যেমন অনেক কিছুই পাল্টে গেছে তেমনি পাল্টেছে বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী দেখার ধরন-ধারণও। বিশেষ করে হাল জমানায় যারা নিজেদের খানিকটা ‘স্মার্ট’ অথবা কেতাদুরস্থ বলে ভাবেন তারা এখন আর বাড়ি গিয়ে পাত্রীর চলন-বলন কিংবা আপাদমস্তক দেখে বিয়ের সম্বন্ধ খোঁজেন না। বরং মা-বাবা অথবা বয়োজ্যোষ্ঠ কারো মধ্যস্থতায় বাড়ির বাইরে কোনো শপিং মল বা ফাস্টফুডের দোকানে পাত্রীর সাথে খানিকটা কথা-বার্তাই পাত্র-পাত্রীর যোগাযোগের আধুনিক একটি পন্থা হিসেবে অধিক চর্চিত হচ্ছে। তবে যারা প্রথম দেখাতেই সবকিছু জাহির করতে চান কিংবা এর উল্টো পিঠে কম কথা বলতে গিয়ে কাজের কথাটিও জেনে নিতে ভুলে যান তাদের অনেককেই পরে এ নিয়ে পস্তাতে হয়। কাজেই আপনারও যদি বিয়ের ফুল ফোটাতে এমনতর দেখাদেখির মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাহলে পাত্র কিংবা পাত্রীর সাথে কিভাবে কথা বলবেন আর কতটা বলবেন তা নিয়ে কিছু ধারণা থাকা প্রয়োজন। আর এজন্য নিচের টিপস্গুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন।

০ সেলফোন এবং যোগাযোগের নানা মাধ্যমের এই যুগে দেখা হবার আগে এক-আধটু আলাপ হওয়াটা দোষের কিছু নয়। কাজেই কোনো ধরনের আলাপচারিতা না করে হুট করে পাত্র-পাত্রীর মুখোমুখি না হয়ে আগে থেকে একটু কথা বলে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। এক্ষেত্রে খুব বেশি কিছু না হলেও অন্তত দেখা হওয়ার আগে একদিন কথা বলে কোথায়, কখন দেখা করবেন ইত্যাদি ঠিক করে নিন।
০ অনেকেই পাত্র-পাত্রী দেখতে যাবার সময় তাদের দু’একজন আত্মীয় বা বন্ধুকেও সাথে নেন। তবে পারিবারিক কোনো সমস্যা না থাকলে এক্ষেত্রে বেশি মানুষ এড়িয়ে চলাটাই মঙ্গলজনক। কেননা অন্য অনেকের সামনে যে কথাগুলো মনখুলে বলা সম্ভব হয় না দু’জনের একান্ত আলাপনে এমন অনেক বিষয়ই উঠে আসতে পারে। তাছাড়া যারা একটু আত্মকেন্দ্রিক স্বভাবের তারা অন্যের উপস্থিতিতে কথা বলতেও সংকোচ বোধ করতে পারেন। তবে কোনো কারণে যদি আত্মীয় বা বন্ধুদের উপস্থিতি প্রয়োজনীয় হয় তাহলে আলাপের সময়টিতে তাদের একটু দূরে থাকা বা কম কথা বলা বাঞ্চনীয়।
০ মার্কেট কিংবা ফাস্টফুড শপ, পাত্রী দেখার জন্য যে স্থানেই যান না কেন অবশ্যই পাত্র বা পাত্রীকে জানিয়েই সেটা করুন। কারো অজান্তে তাকে দেখে আসার মধ্যে কোনো বাহাদুরী নেই। যদি বিয়ের সব আলাপই আনুষ্ঠানিক ভাবে এগিয়ে থাকে তাহলে এভাবে দেখাদেখির প্রয়োজন পড়ে না।
০ বিয়ের জন্য যাকে দেখতে গেলেন তাকে কোনো একটি কারণে প্রথম দেখাতে আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। তবে তাৎক্ষণিক ভাবে এর প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে সৌজন্যতাবোধ বজায় রাখুন এবং কোনো রকম তাড়াহুড়ো না করে আলোচনা শেষ করে তবেই উঠুন। এছাড়া আপনি যে তাকে পছন্দ করেননি কথার মাঝে এটি বুঝতে না দেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এছাড়া যদি কোনো শপিং মলে তাকে দেখতে যান তবে পছন্দ না হলে কাউকে না জানিয়ে চলে আসাটাও একটি অপরাধের কাজ।
০ যে স্থানটিতে দেখা করবেন বলে মনস্থ করেছেন সেটি যেন দু’জনের জন্যই সুবিধাজনক দূরত্বে হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
০ আলোচনার শুরুতেই ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা না বলে হালকা কোনো বিষয় দিয়ে আলাপ শুরু করুন।
০ নিজের সম্পর্কে অহেতুক বাড়িয়ে বলবেন না। এমনকি প্রসঙ্গের বাইরে কোনো একটি বিষয় ধরে নিজেকে জাহির করার চেষ্টাটাও দৃষ্টিকটু।
০ আপনি যেমন সংক্ষেপে আপনার দৃষ্টিভঙ্গিটা শেয়ার করবেন তেমনি সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনীর দৃষ্টিভঙ্গিটিও কথাচ্ছলে জেনে নেয়ার চেষ্টা করুন। বিপরীত লিঙ্গের মানুষটি যদি খানিকটা সংকোচ বোধ করেন তাহলে তাকেও মনখুলে কথা বলতে সাহায্য করুন।
০ নিজের পরিবার, পরিজন, সামর্থ্য আর পছন্দ-অপছন্দের কথা সংক্ষেপে অন্যের সামনে তুলে ধরুন।
০ খাবার দোকানে কথা হলে মেন্যু নির্বাচনের ক্ষেত্রে দু’জনের মতামতকেই গুরুত্ব দিন।
০ যেসব বিষয় পরে বয়োজ্যোষ্ঠরা আলাপ করে ঠিক করে নিতে পারবেন সেগুলো নিয়ে নিজেরা অহেতুক কথা বলে সময় নষ্ট করবেন না।
ফ সম্ভব হলে একে অন্যের জন্য ছোটখাটো কোনো উপহারও নিয়ে যেতে পারেন।

মেকআপের ভুলভ্রান্তি

০ শরীরের রং অনুযায়ী সাবধানে ফাউন্ডেশন বেছে নিন। ভুল করে শেডের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে শুধু যে মেকআপ অস্বাভাবিক লাগে, তাই নয় আপনার মুখের অন্য কোনো দাগ থাকলে তা আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে। ফাউন্ডেশনের শেড বাছাই করার সময় অল্প একটু নিজের গালে আর চোয়ালের কাছে লাগিয়ে প্রাকৃতিক আলোয় দেখে নিন, কেমন লাগছে।
০ ফাউন্ডেশন ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুব ঘন বা মোটা ধরনের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন না। বেছে নিন আপনার ত্বকের প্রকৃতির সঙ্গে মানানসই কোনও হালকা লিক্যুইড ফাউন্ডেশন। ময়শ্চারাইজার লাগানোর পর সেটা মেকআপ স্পঞ্জ দিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন।
০ আপনার মুখের ব্রণ, দাগ বা ডার্ক সার্কল ঢাকার জন্য একগাদা ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন না। ওই কাজটা কনসিলার দিয়ে করা উচিত।
০ ত্বকে ফাউন্ডেশন লাগানোর পর খুব ভাল করে ব্লেন্ড করতে ভুলবেন না। আর শুধু ফাউন্ডেশনই নয়, আই শ্যাডোর সঙ্গে আই লাইনার, লিপ লাইনারের সঙ্গে লিপস্টিক যেন ভালভাবে মিশে যায়।
০ ময়শ্চারাইজার বা ক্রিমের আগে ফেসপাউডার বা ফাউন্ডেশন লাগাবেন না।
০ আই লাইনার ব্যবহার করার সময়, কখনোই চোখের পাতা বাদ দিয়ে শুধু চোখের নীচে আই লাইনার লাগাবেন না। কারণ, এতে দু’চোখে নেমে আসে একরাশ ক্লান্তির ছাপ।
০ ভ্রু’র শেপ বজায় রাখা জরুরি, কিন্তু অনেকেই ভুল করে ভ্রু বেশি প্লাক করে ফেলেন। বেশি পাতলা ভুরু কিন্তু দেখতে ভাল লাগে না।
০ বেশি ডার্ক শেডের মাসকারা ব্যবহার না করে কোনও ব্রাউন শেড বেছে নিন। খুব পাতলা করে মাসকারা লগিয়ে সেটা শুকাতে দিন। তারপর মাসকারার দ্বিতীয় কোট লাগান।
০ ব্লাশার লাগানোর পর যেন আপনার গালে জোকারের গালের মতো দু’টো লাল স্পট না দেখা যায়। সাধারণত পি-পিঙ্ক শেডের ব্লাশার বেশিরভাগ গায়ের রঙেই ভাল লাগে।
০ ফেস পাউডারের উপর কখনও ক্রিম ব্লাশ ব্যবহার করবেন না। ফেস পাইডারের উপর সব সময়ই পাউডার ব্লাশ করা ভাল।
০ মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার না থাকলে প্রথমত মেকআপ করার পর সেটা মসৃণ দেখাবে না। দ্বিতীয়ত, ব্রাশে ব্যাক্টেরিয়াও হতে পারে। তাই নিয়মিত কোনও কোমল সাবান দিয়ে মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার করে নিন।
০ ঘুমাতে যাওয়ার আগে মেকআপ অবশ্যই তুলে ফেলবেন।
০ তেলতেলে ত্বকের জন্য দুই চা-চমচ মুলতানি মাটি এবং দুই চা-চামচ ঠান্ডা গোলাপজল মেশান। ঘন পেস্ট একটা ব্রাশ দিয়ে চোখের চারপাশের অংশ বাদ দিয়ে বাকি মুখে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত লাগিয়ে রাখে ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
০ ফর্সা হতে কমলালেবুর খোসা রোদে শুকিয়ে পাউডার করে নিয়ে দুধের সঙ্গে মেশান। ২৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটা প্রাকৃতিক ব্লিচের কাজ করবে।