RSS

Saturday, October 24, 2009

ছটফটে শিশুর জন্য


অনিমা রায়হানের একটি মাত্র সন্তান, মাত্র ছয় বছরের ছেলে রাজিন। কিন্তু এই ছয় বছরের ছেলেকে নিয়েই যত যন্ত্রণা অনিমার। কারণ রাজিন খুবই ছটফটে। সবকিছুতেই তার দুষ্টুমি করা চাই। এক জায়গায় বেশি সময় তাকে কিছুতেই বসিয়ে রাখা যায় না। আবার কোনো কিছুতে তার খুব বেশিক্ষণ মনোযোগও থাকে না। অনিমা ও রায়হানের মতো একই ঝামেলা পোহাতে হয় আরো হাজার হাজার মা-বাবাকে। রাজিনের মতো এরকম হাজার হাজার শিশুর জন্য প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মা-বাবা দিন কাটাচ্ছে অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে। রাজিনের যে সমস্যা বৈজ্ঞানিক ভাষায় একে বলে অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভ ডিজঅর্ডার।

আসুন জেনে নিই অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভ ডিজঅর্ডার সম্বন্ধে-

এটা যে শুধু শিশুদের আচরণগত সমস্যা তা নয়। বরং এটা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অনেক বাবা-মা’র ধারণা শিশুরা একটু চঞ্চল হয়েই থাকবে। কিন্তু একাধিক পরিস্থিতি যদি বাচ্চার আচরণ একইরকম পরিলক্ষিত হয় তবে পরীক্ষা করে দেখতে হবে তা অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভ ডিজঅর্ডার কিনা?

লক্ষণ

০ ছোট ছোট কাজে শিশুর না বসা।

০ একাডেমিক কাজে সামান্য ভুল করা।

০ বেশি সময় কোন কিছু মনে রাখতে না পারা।

০ রুটিন ওয়ার্ক ভুলে যাওয়া।

০ অল্পতেই বিরক্ত হওয়া।

০ স্থির হয়ে না বসা।

০ অতিরিক্ত চঞ্চলতা।

০ বেশি কথা বলা।

০ অল্পতে ইমোশনাল হয়ে যাওয়া।

ইফেক্ট

পড়াশোনার ক্ষতি : যেহেতু এক্ষেত্রে বাচ্চারা কোনো কাজে বেশি সময় মনোনিবেশ করতে পারে না তাই তাদের পড়াশোনায় ক্ষতি হয়। একাডেমিক কাজে প্রচুর ভুল করে এবং রেজাল্ট খারাপ হয়।

আচরণগত সমস্যা : এ ধরনের শিশুরা প্রবলেমেটিক হয়। তারা সহজে কথা শুনতে চায় না এবং অন্যদের বিরক্ত করে।

আত্মসম্মানবোধ : অনেক সময় বাবা-মা বা শিক্ষকেরা যখন শিশুদের এই প্রবলেমটি বুঝতে পারে না তখন শিশুদের উপরই তারা এমন কিছু আচরণ করেন যা শিশুদের আত্মসম্মানবোধে চরম আঘাত আনে।

সমাধান

এ ধরনের সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য প্রথমেই বাবা-মা’কেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেই হবে। তাদেরই প্রথমে বুঝতে হবে যে শিশুটি অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভ ডিজঅর্ডারে ভুগছে কিনা? এই অনুযায়ী তাকে পজেটিভ ফিডব্যাক বাবা-মাকেই দিতে হবে। এর পরবর্তী কিছু দায়িত্ব শিক্ষকদের উপরও বর্তায়। যেহেতু বাচ্চারা দিনের অনেক বড় একটা সময় স্কুলে কাটায় তাই তাদের স্কুলে বিশেষ যতœ নেয়া উচিত। বাচ্চাদের মানসিকতা না বুঝে তাদের অযথাই বাজে মন্তব্য করা উচিত নয়। এছাড়া ভুক্তভোগী শিশুদের জন্য বিশেষ কেয়ারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কারণ নিয়মিত ক্লাসগুলোতে তাদের অনেক সময় গ্যাপ থেকে যায় তাই তাদের জন্য এক্সট্রা ক্লাসের ব্যবস্থা করেও এই গ্যাপ পূরণ করা যেতে পারে।

0 comments:

Post a Comment