RSS

Tuesday, October 20, 2009

কেশবতী কন্যা

চুলের ফ্যাশন বদলে যায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। আর তাই কখনো দেখা যায়, মেয়েদের চুল কাঁধ পর্যন্ত, কখনো পিঠ ছাপিয়ে নেমে গেছে কোমর পর্যন্ত; আবার কখনো একদম বব কাট। তবে সবকিছু ছাপিয়ে চুলের ফ্যাশনে বরাবরই রাজত্ব লম্বা চুলের। পিঠ ছাপানো দীঘল চুলেই যেন খুঁজে পাওয়া যায় সৌন্দর্যের দিশা। এখন লম্বা চুলের চলটা বেশ দেখা যাচ্ছে।তবে লম্বা চুলের জন্য চাই সঠিক যত্ন-আত্তি।

তেলে চুল তাজা
সুন্দর ঝলমলে মসৃণ চুলের জন্য প্রয়োজন যত্ন। আর লম্বা চুলে চাই আরও বেশি যত্ন। এ ব্যাপারে রূপবিশেষজ্ঞ নাহিন বলেন, ‘সপ্তাহে অন্তত দুই দিন জলপাই ও নারিকেল তেল সমপরিমাণ নিয়ে হালকা গরম করে তার সঙ্গে দুটি ভিটামিন ই-ক্যাপসুল মিশিয়ে মাথায় ম্যাসাজ করতে পারেন।’ আর খুশকির সমস্যা থাকলে এই দুই ধরনের তেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে তারপর চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করতে হবে। তারপর গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে সেই পানি ঝরিয়ে তোয়ালে মাথায় পেঁচিয়ে পাঁচ মিনিট গরম ভাপটা নিতে হবে। এরপর চুলে যেকোনো ধরনের প্যাক লাগিয়ে শ্যাম্পু করতে হবে।

চুলের যত্নে শ্যাম্পু
চুলের যত্নে শ্যাম্পু করা অবশ্যই দরকার। তবে নিয়ম অনুসারে চুলের ধরন বুঝে শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। আবার সপ্তাহে অন্তত এক দিন শ্যাম্পু করার আগে চুলের ধরন বুঝে প্যাক লাগিয়ে নিতে পারেন। নাহিন পরামর্শ দিয়েছেন ঘরোয়া প্রোটিন প্যাকের। ডিম, পাকা কলা ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে ঘণ্টাখানেক পর শ্যাম্পু করতে হবে। খুশকি থাকলে মুসুরের ডালবাটার সঙ্গে টক দই মিশিয়ে একইভাবে চুলে লাগিয়ে এক ঘণ্টা রাখতে হবে। তারপর কোনো একটি হারবাল শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। নাহিন বলেন, ‘রিঠা সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে ভালো করে কচলিয়ে সেই পানি দিয়ে চুল ধোয়া যেতে পারে। কারণ রিঠা প্রাকৃতিক শ্যাম্পু হিসেবে কাজ করে।’

ঘুমানোর সময় লম্বা চুলের যত্ন
যাঁদের লম্বা চুল রাতে ঘুমানোর সময় তাঁদের বিশেষভাবে চুলের যত্ন নিতে হবে। এ বিষয়ে নাহিন বলেন, ‘ঘুমানোর আগে ভালো করে মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়িয়ে বেণি করে ঘুমাতে হবে। যাঁরা বেণি করে ঘুমাতে পারেন না, তাঁরা একটি পাতলা কাপড়ে চুল পেঁচিয়ে ঘুমাতে পারেন। এতে চুল ফাটবে না, পড়বেও না এবং চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে উজ্জ্বল।

লম্বা চুলের নানা ঢং
লম্বা চুলের জন্যও চাই কাটা ও বাঁধার ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য। লম্বা চুল কাটার ক্ষেত্রে নাহিনের টিপস হলো, পেছনে স্ট্রেইট কাট করে সামনে লেয়ার কাট করা। আবার সামনে ও পেছনে লেয়ার করলেও ভালো দেখাবে। কাঁধ পর্যন্ত ভলিউম লেয়ার করে পেছনের নিচের অংশে লেয়ার কাটও করানো যায়। এ ধরনের কাটই এখন বেশ চলছে বলে জানালেন নাহিন।
একই সঙ্গে জেনে নেওয়া যায় চুল বাঁধার ঢংটা কেমন, সে বিষয়টিও। অনুষ্ঠানে যেতে চুল বাঁধা নিয়ে অনেকেই সমস্যায় পড়েন। লম্বা চুলে সামনের অংশ ষাটের দশকের স্টাইলে বেঁধে তারপর পেছনে একটা বেণি করা যেতে পারে। বেণির একপাশে ফুল লাগিয়ে আনতে পারেন উত্সব আমেজ। যাঁরা চুল খুলে রাখতে চান তাঁদের জন্য নাহিনের পরামর্শ হলো, আয়রন করে স্ট্রেইট লুক দেওয়া অথবা স্পাইরাল বা ক্রিম্প করে চুল সেট করা। আবার চাইলে বেণি খোঁপা, ষাটের দশকের খোঁপা, রিং খোঁপা বা বড় ওয়ান বান খোঁপাও করা যেতে পারে। সঙ্গে মানানসই ফুল তো আছেই।

শরত্ শেষে শীত, চুলে চাই বাড়তি যত্ন
সামনে শীত। শীতের সময় বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়। প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চুল ও ত্বকে এর প্রভাব পড়ে। তাই ঋতু বদলের এ সময় চাই লম্বা চুলের বিশেষ যত্ন। নাহিন বলেন, যাঁদের লম্বা চুল তাঁদের সপ্তাহে অন্তত এক দিন চুলে তেল ম্যাসাজ করতে হবে। চুল শুকানোর সমস্যা হলে হালকা করে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করতে পারেন। তবে হেয়ার ড্রায়ার কম ব্যবহার করাই ভালো।’
নিয়মিত তেল তো ব্যবহার করতেই হবে। এ ছাড়া সপ্তাহে অন্তত এক-দুই দিন টক দই, ডিম, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে এই প্যাক মাথায় লাগানো উচিত। এ সময় চুলের রুক্ষভাব দূর করার জন্য পাকা কলা ও মধু মিশিয়ে প্যাক করে চুলে লাগিয়ে ঘণ্টাখানেক রাখার পর শ্যাম্পু করতে হবে। শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার হিসেবে এক মগ পানিতে দুই টেবিল চামচ সিরকা বা চায়ের লিকার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেললে তা কন্ডিশনারের কাজ করবে বলে জানালেন নাহিন।
নিয়মিত চুলের এভাবে যত্ন করলে এবং দুই মাস পরপর চুলের আগা সামান্য ছেঁটে নিলে বা ট্রিম করলে ঝলমলে লম্বা মসৃণ চুল রাখা কোনো ব্যাপারই না!

0 comments:

Post a Comment