RSS

Saturday, October 17, 2009

কাঁচের ভিতর মাছের যতœ

ঘরের এক কোণে রাখা কাঁচের এ্যাকুরিয়ামে হরেক রকম মাছ ঘুরে বেড়াচ্ছে, এ যেন এক মৎস রাজ্য, যে রাজ্যে চোখ রাখলেই আপনি পেতে পারেন প্রকৃতির এক অনন্য ছোঁয়া। তাই সৌখিন মানুষ মাত্রই এমন একটি মৎস রাজ্যের অধিকারী হতে চাইবেন। তবে প্রকৃতির এ সৌন্দর্যকে কেবল ড্রইংরুমে সাজিয়ে রাখার মধ্যেই আপনার দায়িত্ব কিন্তু শেষ নয় বরং এ সৌন্দর্যকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে আপনাকে অবশ্যই নিতে হবে কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। তাই এবারের গৃহস্থালির আয়োজনে আপনাদের জানিয়ে দিচ্ছি একুরিয়ামের মাছের যতœ সম্পর্কে।

কেমন হবে আপনার এ্যাকুরিয়ামের আকার

আপনার ঘরের যে স্থানটিতে এ্যাকুরিয়াম রাখবেন সে স্থানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আপনি এ্যাকুরিয়ামের আকার ঠিক করতে পারেন। সাধারণতঃ আয়তক্ষেত্র বিশিষ্ট একটি এ্যাকুরিয়াম কমপক্ষে লম্বায় দু ফুট হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে একটি এ্যাকুরিয়ামের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের আনুপাতিক হিসাব হবে ২ঃ১ঃ১। কাঠের স্ট্যান্ড ও ছাদসহ একটি আদর্শ এ্যাকুরিয়ামের (৩৬স১৮স১৮) মূল্য পড়বে ৪,০০০ টাকা।

এ্যাকুরিয়ামের প্রয়োজনীয় উপকরণ

০ এ্যাকুরিয়ামে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন ও পানি সরবরাহের জন্য একটি পাম্প প্রয়োজন হবে যার মূল্য পড়বে ৩০০ টাকা।

০ ফিল্টার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপকরণ এ্যাকুরিয়ামের জন্য। পানির পর্যাপ্ত সঞ্চালন ও পানিকে পরিষ্কার রাখার জন্য এ যন্ত্রটির প্রয়োজন। বাজারে দু ধরনের ফিল্টার পাওয়া যায়। তবে এর মধ্যে পাওয়ার ফিল্টারের গ্রহণযোগ্যতাই সবচেয়ে বেশি। সাধারণত একটি পাওয়ার ফিল্টারের মূল্য ৭০০ টাকা। তবে মান ও কাজের ভিত্তিতে এর দাম ভিন্ন হতে পারে। যেমন- যেসব পাওয়ার ফিল্টারে পানির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকে সেসব ফিল্টারের মূল্য- ২৫০০ টাকা। তা না হলে শীতকালে পানি গরম রাখার জন্য আপনাকে বাজার থেকে আলাদা থার্মোমিটার ও পানি তাপক যন্ত্র কিনতে হবে। কারণ এ্যাকুরিয়ামের ভিতরের তাপমাত্রা ৭২ডিগ্রী-৮০ডিগ্রী ফারেনহাইট হওয়া বাঞ্চনীয়।

মাছের খাবার ঃ দিনে কমপক্ষে দু’বার মাছদের খাবার দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে শুকনো খাবার (যা মাছ গুলো দু মিনিটের মধ্যে খেয়ে শেষ

করতে পারবে) দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। সপ্তাহে অন্ততঃ দুদিন পোকা-মাকড় খেতে দিন মাছদের। এক্ষেত্রে পরিষ্কার ও তাজা পোকা খাওয়ানোর জন্য প্লাস্টিকের ফিডার ব্যবহার করতে পারেন।

সামুদ্রিক সৌন্দর্য সামগ্রী ঃ আপনার এ্যাকুরিয়ামে আপনি যদি সামুদ্রিক আবহ সৃষ্টি করতে চান তাহলে বিভিন্ন আকার ও রং এর নুড়ি, পাথর কাঁকর দিয়ে সাজাতে পারেন। এসব উপকরণ কেবল সামুদ্রিক

সৌন্দর্যই সৃষ্টি করবে না তার সাথে সাথে মাছদের ঘুরে-বেড়ানোর জন্য একটি সুন্দর পরিবেশেরও যোগান দিবে। এছাড়া আপনার এ্যাকুরিয়ামটি সাজাতে আপনি সংগ্রহ করতে পারেন জলজ উদ্ভিদ। এসব জলজ উদ্ভিদ মাছকে অক্সিজেন সরবরাহ করার পাশাপাশি মাছের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করবে। এমাসন, সোর্ড, এনুবিয়াস, হাইগ্রফিলিয়াসহ বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদের সমারোহ আপনার এ্যাকুরিয়ামকে সবুজাভ এক প্রাকৃতিক রাজ্যে পরিণত করবে।

আরো কিছু টিপস

০ খুব বেশি জিনিস দিয়ে এ্যাকুরিয়াম ঠাসা যাবে না এতে করে মাছদের নির্বিঘেœ চলাচলে বাধাগ্রস্থ হবে।

০ প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার মাছদের জন্য ক্ষতিকারক তাই অতিরিক্ত খাবার সরবরাহ থেকে বিরত থাকুন।

০ আলো-বাতাস ঢুকে এমন জায়গায় এ্যাকুরিয়ামটি রাখুন। তাই বলে সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে এমন জায়গায় রাখতে যাবেন না।

০ কৃত্রিম অর্থাৎ প্লাস্টিকের উদ্ভিদ এ্যাকুরিয়ামে না রাখাই ভাল। এগুলো অনেক সময়ই মাছের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে থাকে।

0 comments:

Post a Comment