RSS

Wednesday, October 28, 2009

 ফিতায় ফিতায় পাদুকা

ফ্যাশন আর স্টাইলের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের মেয়েরা এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে আরামের বিষয়টি। আর তাই কয়েক বছর ধরে যেমন চলছে চটি স্যান্ডেল, তেমনি দেখা যাচ্ছে ফিতার মহাসমারোহ।দুই ফিতার স্লিপার স্যান্ডেলের পাশাপশি এখন চলছে অনেক ফিতার স্যান্ডেল। কখনো কখনো হিলও থাকে সেসবে। এসব স্যান্ডেল বেশি পরিচিত গ্ল্যাডিয়েটর স্যান্ডেল হিসেবে।
ফ্যাশন ডিজাইনার মাহিন খান জানালেন, বেশি ফিতার এ স্যান্ডেল এখন জনপ্রিয় সব মেয়ের কাছেই।
দুই বা এরও বেশি ফিতার বিভিন্ন ধরনের স্যান্ডেল চলছে ফ্যাশনে। চামড়া, স্পঞ্জ, রবার, কাঠসহ বিভিন্ন ধরনের উপাদানে তৈরি এসব স্যান্ডেল বেশি পরছে কিশোরী আর তরুণীরা। তবে ফিতাটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চামড়ার দেখা যায়।

মাহিন খান জানালেন, এসব স্যান্ডেলে কখনো ছাপা নকশা থাকে আবার কখনো বসানো থাকে পুঁতি, চুমকি বা জারদৌসি কারচুপি করা বুটি। ফিতা সরু হতে পারে আবার মোটাও হতে পারে। অনেক ফিতা ও দুই ফিতা—দুই ধরনের স্যান্ডেলই জনপ্রিয়।
বাংলাদেশের মেয়েদের উচ্চতা পাঁচ ফুটের কাছাকাছি থাকে বলে তারা চটি স্যান্ডেল পরতে চায় না—এমন ধারণা যে পুরোপুরি সত্যি নয়, তারই প্রমাণ হালের ফ্যাশন গ্ল্যাডিয়েটর স্যান্ডেল। আড়ংয়ের বিপণন নির্বাহী সাদিয়া হক মনে করেন, এ ধরনের স্যান্ডেলের জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে যে বিষয়টি কাজ করে, তা হলো নকশার বৈচিত্র্য। চুড়িদার সালোয়ারের ব্যাপক ব্যবহারও ফিতার এই গ্ল্যাডিয়েটর স্যান্ডেলের জনপ্রিয়তার কারণ। সেই সঙ্গে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ভবন থেকে আরেক ভবনে দৌড়াদৌড়িতে এ ধরনের স্যান্ডেল যেমন আরামদায়ক তেমনি ফ্যাশনেবল।
একটু পার্টি লুকের স্যান্ডেলগুলো সাধারণত পাওয়া যায় ফ্যাশন হাউসগুলোতে। আড়ং, মায়াসীর, বিবিয়ানা, কাভা কাভা, রাখী সুজ ইত্যাদি দোকানে পাওয়া যায় দেশি উত্সব—আমেজের ফিতা লাগানো স্যান্ডেল। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর থেকে আসা এ ধরনের স্যান্ডেল পাওয়া যায় নামীদামি শপিং মলের জুতোর দোকানগুলোয়।
চামড়ার জুতা বিদেশে রপ্তানি করে এবং বাংলাদেশেও বিক্রয়কেন্দ্র আছে—এমনই একটি প্রতিষ্ঠান সো ফোর্ট। ঢাকায় তাদের শোরুমেও এখন তরুণীদের কাছে সবচেয়ে পছন্দ এসব স্যান্ডেল। লাল, নীল, বাদামি, ম্যাজেন্টা, পারপল ইত্যাদি রঙের চামড়ার ফিতায় মোড়ানো স্যান্ডেল বেশ জনপ্রিয়। সো ফোর্টের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হোসেন জানান, এসব চটির দাম ৬৫০ থেকে ৯০০ টাকা। বাটা যদিও ফরমাল জুতোতেই বেশি মনোযোগী, তারাও এখন তৈরি করছে আকর্ষণীয় ডিজাইনের স্যান্ডেল। আর জুতো ফেলে মেয়েরা যে এই গ্ল্যাডিয়েটর স্যান্ডেল বেছে নিচ্ছেন তা জানালেন বাটার একটি শোরুমের বিক্রেতা আল আমিন।
বিশ্বজুড়ে বেশ জনপ্রিয় গ্ল্যাডিয়েটর স্যান্ডেল। এ গ্ল্যাডিয়েটর স্যান্ডেলের বৈশিষ্ট্য হলো, অনেক ফিতা থাকে এসবে।আঙুল থেকে পায়ের গোড়ালি হয়ে উঠে গেছে প্রায় হাঁটু পর্যন্ত। বিশ্বজুড়ে ফ্ল্যাট স্যান্ডেলে জনপ্রিয় এ ডিজাইন বাংলাদেশে জনপ্রিয় হতেও বেশি সময় লাগেনি। তবে আমাদের দেশে তরুণীরা এ স্যান্ডেলের ফিতা বাঁধছে কখনো পায়ের গোড়ালিতে, কখনো খানিকটা তুলে। তবে ক্যাপ্রি বা স্কার্টের সঙ্গেই এ ধরনের স্যান্ডেল বেশি পরতে দেখা যাচ্ছে।
ঢাকার নিউমার্কেট, মেট্রো শপিং, রাপা প্লাজার ওয়ান স্টপ মল, প্রিয়, আলমাসের মতো সুপারশপগুলোতে এসব স্যান্ডেলের পসরা বেশ জমজমাট। গ্ল্যাডিয়েটর স্যান্ডেল ৮০০ থেকে ৩০০০ টাকায় পাওয়া যাবে।তবে দুই ফিতার স্যান্ডেলগুলোর দাম আরও কম।
এ ধরনের স্যান্ডেল ব্যবহার করলে পায়ের যত্নও ভালোমতো নেওয়া দরকার বলে মনে করেন মাহিন খান। তাঁর মতে, সুন্দর পেডিকিউর ও ওয়াক্স করে তবেই এ স্যান্ডেল ব্যবহার করতে হবে, তা না হলে স্যান্ডেলের সৌন্দর্য ফুটবে না।

0 comments:

Post a Comment