RSS

Saturday, October 17, 2009

জাদুর লাঠির ছোঁয়া

আমাদের এবারের রূপচর্চার বিষয় কারেকটিভ মেকআপ এবং ত্বকের রঙ অনুযায়ী মেকআপ। কারেকটিভ মেকআপ-এর সাহায্যে মুখের যেকোনো ত্রুটি ঢাকা যায় এক ধরনের ইলিউশন তৈরি করে। ব্যাপারটা অনেকটা মুখের উপর। একটা জীবন্ত ক্যানভাসের ওপর ছবি আঁকার মতো। কারেকটিভ মেকআপ-এর সাহায্যে ধাপে ধাপে মুখের খুঁত ঢেকে ফেলা যায়।

প্রথমেই আসা যাক মুখের আদল প্রসঙ্গে। সাধারণত ওভাল বা ডিম্বাকৃতি ফেস স্ট্রাকচার-আদর্শ বলে ধরে নেয়া হয়। কিন্তু, সবারতো আর আদর্শ মুখ হয় না। কিন্তু, মেকআপের সাহায্যে মুখের আদলে ডিম্বাকৃতি ধাঁচ আনা যায়। মুখের আকৃতিতে বদল আনতে দরকার গাঢ় আর হালকা রং-এর ফাউন্ডেশনের। মনে রাখতে হবে হালকা শেড সবসময়ে বেশি আলো ফেলে সেই অংশটি তুলে ধরে আর গাঢ় শেড লুকিয়ে ফেলে সেই জায়গা যা আপনি দেখাতে চান না। তাই মুখের যে অংশ আপনার মনে হয় ভালো, আপনি দেখাতে চান সেখানে হালকা রঙের শেড লাগাবেন। আর মুখের যে অংশ আপনার মনে হয় আপনি একদমই দেখাতে চান না সেখানে আপনি গাঢ় শেড লাগাবেন। ধরুন একজনের চোয়াল খুব চওড়া-সেক্ষেত্রে চোয়ালে গাঢ় শেডের ফাউন্ডেশন লাগানো জরুরি যাতে চোয়াল সরু দেখায়। ঠিক একইভাবে যাদের কপাল খুব চওড়া তারা হেয়ারলাইন বরাবর গাঢ় শেডের ফাউন্ডেশন লাগান। এতে কাপাল চওড়া কম দেখাবে।

চোখ ঃ সাধারণত আমন্ড বাদামের মতো চোখ আদর্শ মনে করা হয়। কিন্তু, বেসই একই ব্যাপার সবার চোখ একরকম হয় না। তবে যেকোনো চোখের ত্রুটি অবশ্যই ঢাকা যায় মেকআপ দিয়ে। অনেক সময় দুটো চোখের মাঝখানে অংশ বেশি চওড়া হয়। সেক্ষেত্রে যেকোনো ডার্ক শ্যাডো লাগান চোখের ভেতরের দিকে কোণে আর হালকা শ্যাডো লাগান চোখের পাতায় বাইরের দিকের কোণে। যখন ক্লোজসেট আই হয় অর্থাৎ চোখের মাঝের অংশ খুব ছোট হয় তখন উল্টোটা করতে হবে। অর্থাৎ, চোখের বাইরের দিকে ডার্ক আর ভেতরের দিকে লাইট শ্যাডো লাগাতে হবে। যাদের চোখ খুব ছোট-তারা চোখের নিচে সাদা পেন্সিলের রেখা টানুন। এতে চোখ বড় দেখাবে। সাদার বদলে হালকা রং-এর কালার পেন্সিলও ব্যবহার করতে পারেন। আই লাইনার আঁকার সময় ওপরের ও নিচের লাইন ছেড়ে রাখবেন, জোড়া দেবেন না। যাদের বালজিং আইজ তারা চোখের উপরের পাতায় ডার্ক রঙের শ্যাডো লাগান। উপরে আর নিচে আইলাইনার লাগিয়ে লাইনটা জুড়ে দেবেন। অনেকের চোখের ওপরের পাতা অনেক সময় ছোট হয়। এক্ষেত্রে সাকটের বাইরের দিকের কোণে ডার্ক শ্যাডো বা পেন্সিল দিয়ে লাইন টানুন। এতে চোখটা বড় দেখাবে।

গাল ঃ মুখের খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো গাবলর হাড়। খুব কম লোকেরই প্রমিন্যান্ট চিক বোন থাকে। যাদের নেই তারা গালের হাড়ের নিচে ডার্ক রঙের ব্রাশার লাগাবেন। যাদের মুখের হাড় খুব প্রমিন্যান্ট তারা হালকা রঙের ব্লাশার লাগাবেন।

নাক ঃ নাকে কোনো খুঁত থাকলেও তা ঠিক করা যায় মেকআপের সাহায্যে। যাদের নাক খুব মোটা তারা নাকের দুধারে গাঢ় শেডের ফাউন্ডেশন লাগান। নাকের হাড় বা নোজ ব্রিজের উপর লাগান। যদি নাক খুব টিকলো হয় তা হলে দু’ধারে লাইট ও মাঝখানে ডার্ক লাগাবেন। অনেকের নাক খুব লম্বা তারা নাকের ডগায় যেকোনো ডার্ক ফাউন্ডেশন লাগান। এতে নাক ছোট দেখাবে।

ঠোঁট ঃ ঠোঁট খুব সরু হলে লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁটের চারপাশে রেখা টেনে নিন কিছুটা বাইরে দিয়ে। ভেতরটা ভরে দিন লিপস্টিক দিয়ে। ঠোঁট খুব মোটা হলে ঠোঁটের বাইরের অংশ ছেড়ে ভেতরের দিকে আউটলাইন আঁকুন। এর আগে ঠোঁটে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিবেন। এবার লাইনের ভেতরের অংশ ভরে দিন লিপস্টিক দিয়ে।

প্রসাধন সামগ্রীর তালিকা

সামগ্রী কী দিয়ে লাগাবেন কী জন্য ব্যবহার করা হয়

ক্লিনজার তুলো, আঙ্গুল ক্লিনজিং করার জন্য। ৩ রকম পাওয়া যায়-মিল্ক, ক্রীম ও লোশন গায়ে মাখা সাবানও ক্লিনজার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

ফ্রেশনার তুলো ক্লিনজিং করার পর ফ্রেশনার হিসেবে। স্বাভাবিক, মিশ্র ও শুষ্ক ত্বকের জন্য স্কিন টনিক, স্কিন ফ্রেশনার বা টোনার আর তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অ্যাস্ট্রিনজেন্ট লোশন।

ময়েশ্চারাইজার আঙ্গুল ত্বকের আর্দ্রতা বা জলীয় ভাব ধরে রাখার জন্য। ২ রকম পাওয়া যায়। ময়েশ্চারাইজিং, ক্রীম ও লোশন।

কনসিলার আঙ্গুল মেকআপ শুরু করার প্রথমে মুখমন্ডলে বিশেষ করে চোখের আশপাশে, ছোটখাট খুঁত আড়াল করার জন্য। ৫/৬ রঙে পাওয়া যায়।

ফাউন্ডেশন আঙ্গুল ময়েশ্চারাইজার লাগানোর ১০ মিনিট পর মেকআপের বেস হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ২ রকমে পাওয়া যায় - ক্রীম ও লিকুইড। ৭/৮ রঙের পাওয়া যায়।

প্যানকেক ব্রাশ, স্পঞ্জ বা তুলো ফাউন্ডেশন লাগানোর পর প্যানকেক ব্যবহার করা হয়। ফাউন্ডেশন না লাগিয়ে শুধু প্যানকেকও ব্যবহার করা যায়।

ব্লাশার পাফ, ব্রাশ, তুলো ব্লাশার মুখমন্ডলে সৃষ্টি করে নরম, সতেজ আভা। ব্লাশার ২ রকমের পাওয়া যায়- পাউডার ও লিকুইড ক্রীম। ব্লাশার ৫/৬ রকম শেডে পাওয়া যায়।

আইশ্যাডো ব্রাশ, তুলো চোখের বাড়তি সৌন্দর্যের জন্য আইশ্যাডোর তুলনা নেই। এটিও পাউডার এবং লিকুইড আকারে পাওয়া যায়। এর প্রচুর শেড আছে।

আইলাইনার সরু তুলি আইলাইনার তরল এবং পেন্সিল আকারে পাওয়া যায়। চোখকে ছোট-বড় দেখানোর ক্ষেত্রে আই লাইনার ভূমিকা রাখে। পাতার কোলে লাগালে চোখজোড়া লক্ষ্যণীয়ভাবে ফুটে ওঠে।

মাশকারা ব্রাশ চোখের পাতার লোমে লাগালে লোম আরও ঘন, কালো ও দীর্ঘ দেখায়। ২ রকমে পাওয়া যায় কেক, ক্রীম বা লিকুইড।

আইব্রাউ পেন্সিল সরাসরি ভ্রƒতে লাগালে ভ্রƒ ঘন, কালো ও উজ্জ্বল দেখায়। ছোট ও বড় ২ মাপে পাওয়া যায়।

লিপস্টিক লিপব্রাশ বা সরাসরি মেকআপে পরিপূর্ণতা আনতে লিপস্টিকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ঠোঁটে লাগালে ঠোঁট চকচকে ও উজ্জ্বল দেখায়। প্রায় ৫০ রকম শেডে পাওয়া যায়।

লিপগ্লস তুলি বা সরাসরি ঠোঁটকে চকচকে ও উজ্জ্বল দেখাতে লিপগ্লস ব্যবহৃত হয়। স্টিক ও লিকুইড ২ রকমে পাওয়া যায়।

গ্লিমার তুলি বা সরাসরি মেকআপ শেষে সারা মুখমণ্ডলে চকচকে ভাব সৃষ্টি করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

0 comments:

Post a Comment