RSS

Monday, January 18, 2010

অনিদ্রায় যখন বসবাস

কর্মক্লান্ত দিন শেষ হবে ছয় থেকে আট ঘণ্টার টানা একটি ঘুমের সহায়তায়, এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু স্বাভাবিক এ বিষয়ই অনেকের কাছে অস্বাভাবিক বা দুর্লভ হয়ে পড়েছে আজকাল। দু’চোখের পাতা এক করার ব্যর্থ চেষ্টাতেই যেন কেটে যায় আস্ত রাত। ডাক্তারি ভাষায় এ ধরনের সমস্যাকে বলে ‘ইনসমনিয়া’। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, গোটা পৃথিবীতেই ইনসমনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অনিদ্রা রোগের পেছনের কারণ কী তা নির্দিষ্ট করতে অনেকটাই হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। খালি চোখে কোনো কারণ দেখা না গেলেও ইনসমনিয়া দোষে দুষ্ট অর্থাৎ অনিদ্রায় ভুগছেন অনেকেই। মনোবিজ্ঞানীরা এক্ষেত্রে বলছেন অন্য কথা। তাদের মতে, আমাদের পারিপার্শ্বিক ভুবন যত জটিল হচ্ছে সেই জটিলতা ততই প্রবেশ করছে চেতন বা অবচেতন মনের কুঠরীতে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে নানা সমস্যার। অনিদ্রা এ ধরনের সমস্যারই দৃষ্টান্ত মাত্র। আবার আমাদের অবদমিত প্রেষণা বা জোর করে আটকে রাখা থেকেও সৃষ্টি হচ্ছে ইনসমনিয়ার আবেগ, অনুভূতির মতো রোগ। এ-তো গেল বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ। রোগ হয়েছে বলে কি হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে হবে? মোটেও তা নয়। রোগকে প্রতিরোধ করতে হবে, নিদেনপক্ষে প্রতিকারের চেষ্টা করতে হবে সবার আগে। চলুন একবার চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক ইনসমনিয়াকে কীভাবে প্রতিরোধ করবেন সেই প্রসঙ্গে।

ঘুমের আগে বিশেষ করে ঘণ্টা চারেক আগে চা-কফি মোট কথা ক্যাফিন বা নিকোটিন থেকে দূরে থাকুন।

রাতের খাবার খেয়ে ফেলুন রাত সাড়ে আটটা থেকে সারে নয়টার মধ্যে। খাবার পর হালকা কায়িক পরিশ্রম করুন। যেমন- নিজের প্লেট নিজেই ধুয়ে ফেলুন, খাবার টেবিল পরিষ্কার করুন, সম্ভব হলে একটু হাঁটা-হাঁটির অভ্যাস করতে পারেন, মোট কথা খাবার হজম হয়েছে তা নিশ্চিত হয়ে ঘুমাতে যান।

ঘুমাতে যাবার আগে টিভি দেখা কিংবা কম্পিউটারের স্ক্রিনে চোখ বুলিয়ে নেয়ার অভ্যাস ঘুমের টনিক হিসেবে কাজ করে অনেকের জন্যই। আপাতঃদৃষ্টিতে ক্ষতিকর মনে না হলেও এটি কিন্তু এক ধরনের নেশা। টিভি দেখে নিজেকে ঘুম পারানো থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। ঘুমানোর আগে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করা যেতে পারে। খুব ভালো হয় ট্রেডমিলে হাঁটা-হাঁটি কিংবা সাইকেলিং করতে পারলে।

মনে রাখবেন ঘুমানোর আগে শরীর ও মন রিলাক্স থাকা প্রয়োজন। যতটা সম্ভব কঠিন চিন্তাকে দূরে ঠেলে দিন। মনকে প্রশস্ত করার জন্য হালকা মিউজিক শুনুন। আগামী দিনের কর্ম পরিকল্পনার মধ্যে যে কাজগুলো আপনাকে আনন্দ দিতে পারে সেগুলোর কথা ভাবুন।

দিনের বেলা সময় পেলেও লম্বা ঘুম দিবেন না। এতে করে রাতের ঘুম হারাম হয়ে যেতে পারে।

রাতে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। খটমটে জ্ঞানের বই নয় আপনাকে নিখাদ আনন্দ দিতে পারে (কমিক্স, ফান ম্যাগাজিন, পত্রিকার ফিচার পাতা) এমন বই বেছে নিন।

অনেকে উল্টো কাউন্ট-ডাউন পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকেন। অর্থাৎ একশো থেকে এক পর্যন্ত গুনতে শুরু করেন।

ঘুম আসছে না ব্যস খেয়ে ফেল্লেন ঘুমের ঔষধ, ভুল করেও এ কাজটি করতে যাবেন না।

0 comments:

Post a Comment