RSS

Monday, January 18, 2010

হালফ্যাশনে হুডি

কনকনে ঠান্ডা বাতাস বইছে। কানের ভেতর দিয়ে পৌঁছে যেন অবশ করে দিচ্ছে মাথা। কানঢাকা টুপি পরা ছাড়া গতি নেই। শীত তাতে মানে। কিন্তু জিনিসটা তো বড্ড সেকেলে। ফ্যাশনেবল না হলে কি আর তা পরা যায়? এর সমাধান হুডি। জ্যাকেট বা সোয়েটারের শুধু হুডটা টেনে মাথা ঢেকে নেওয়া। দেখতেও দারুণ। ব্যস আর কী চাই। হুড পরা তরুণ-তরুণীর সংখ্যা তাই বাড়ছেই।
হুডি কেন পরা হয় এর উত্তর বোধহয়—ফ্যাশন আর শীতে আরাম। অভিনয়শিল্পী সজলও তা-ই মনে করেন, ‘যেকোনো পোশাকের চেহারা বদলে যায় শুধু হুড যোগ করার ফলে। আর শীতে তো এটা দারুণ কার্যকর। এমনকি গরমেও আমি হুডসহ শার্ট পরতে পছন্দ করি। একটু ভিন্ন রকম ক্যাজুয়াল ভাব আসে তাতে।’
‘সাদামাটা কাটের সোয়েটার পরতে ভালো লাগে না। আবার পাশ্চাত্য ধাঁচের পোশাক পরতেও আমি খুব পছন্দ করি। হুড দেওয়া সোয়েটার বা জ্যাকেট তাই ভালো লাগে’ জানালেন অভিনয়শিল্পী বিদ্যা সিনহা মিম। ‘শীতে তো পরিই, গরমেও খাটো হাতার হুডি টপ পরতে ভালো লাগে। ডেনিম প্যান্টের সঙ্গে হুডি টপ দারুণ ফ্যাশনেবল বলে মনে হয়।’
একটা সময় হুডি ব্যবহার হতো শুধু জ্যাকেটেই। জিপারওয়ালা বা জিপার ছাড়া বড় পকেট থাকত পোশাকে। জরুরি জিনিসগুলো বহন করা আবার মাথা ঢাকা দুটো প্রয়োজনই মিটত। তবে এখন রূপ বদলেছে এর। শুধু জ্যাকেট নয়, সোয়েটার, টি-শার্ট নানা ধরনের পোশাকেই হুড জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। মেয়েদের জন্য করা হচ্ছে নানা কাটের টপ। সঙ্গে থাকছে হুড।
একস্ট্যাসি, ক্যাটস আই, ট্রেন্ডজ, ওয়েস্টেকস এসব ব্র্যান্ডের পোশাকের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে নানা ডিজাইনের হুডসহ পোশাক। কোনোটা কৃত্রিম তন্তুর জ্যাকেট, কোনোটা উলের সোয়েটার। আবার সুতি, জর্জেট কাপড়ের টপও আছে। ছাই, কালো, ঘন নীল, মেরুন এই রংগুলো বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে মেয়েদের জন্য অন্যান্য উজ্জ্বল রঙের পোশাকও দেখা যাচ্ছে।
একস্ট্যাসির হেড অব অপারেশন রাফি রহমান জানান, এবার একস্ট্যাসিতে হুডি জ্যাকেটের সঙ্গে মেলানো মাফলার পাওয়া যাচ্ছে। নানা রঙা এসব মাফলার বেশ জনপ্রিয় হয়েছে তরুণদের মধ্যে। চামড়ার তৈরি হুডসহ জ্যাকেটেও আছে। তবে এর দাম তুলনামূলক বেশি। মেয়েদের জন্য আছে নানা রঙের স্ট্রাইপ দেওয়া হুডি টপ। খাটো হাতার এসব টপের সঙ্গে বিপরীত রঙা টি-শার্ট পরা যেতে পারে। ডেনিম প্যান্টের সঙ্গেই হুডি পরা হচ্ছে বেশি। মেয়েরা স্কার্টের সঙ্গেও হুডি পরতে পারেন।
এসব ব্র্যান্ডের হুডি পাওয়া যাবে ৮০০ থেকে ১৪০০ টাকায়।
পোশাকে হুড ব্যবহারের এ ধারণা নিয়ে দেশি ঢঙে পোশাক তৈরি করছে অনেক ফ্যাশন হাউস। গত বছর ঈদে আড়ং পাঞ্জাবিতে হুড ব্যবহার করেছিল। এখন পাট, সুতি কাপড়ে তৈরি ফতুয়ায়ও তা ব্যবহার হচ্ছে।
বিবি প্রোডাকশনেও কয়েক বছর ধরেই হুডসহ পোশাক ডিজাইন করা হচ্ছে। ছেলেমেয়ে সবার জন্যই খাদি, সুতি, চেক কাপড়ে তৈরি জ্যাকেট করা হয়েছিল।
ফ্যাশন হাউস যাত্রায় শিশুদের জন্য হুডসহ পোশাক ডিজাইন করা হয়েছে। মেয়েদের ফ্রক বা ছেলেদের ফতুয়ায় জুড়ে দেওয়া হয়েছে হুড।
তারা মার্কার ডিজাইনার অভিজিত্ চৌধুরী জানান, ‘কয়েক বছর ধরেই আমরা হুডসহ পোশাক তৈরি করছি। আগে পাঞ্জাবি ও ফতুয়া করেছিলাম। এ বছর এনেছি ছেলেমেয়ে সবার জন্যই হুডসহ টি-শার্ট। মুক্তিযুদ্ধের থিম নিয়ে কাজ করেছি এসবে। ডেনিমের সঙ্গে দেশি কাপড়ের মিশেলে তৈরি হয়েছে এসব পোশাক। হুড ও পকেটে ডেনিম কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রকাশিত নানা সংবাদপত্রের কোলাজ ব্যবহার করে নকশা করা হয়েছে এতে। এগুলো বেশির ভাগই গাঢ় রঙের। দাম পড়বে ৩৫০-৫৫০ টাকা।’
তবে কম দামে বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের হুডি কিনতে চাইলে চলে যেতে পারেন বঙ্গবাজার, বদরুদ্দোজা সুপার মার্কেট, নিউমার্কেটে। ২০০ টাকা থেকে দাম শুরু হতে পারে এর।

0 comments:

Post a Comment