RSS

Monday, January 18, 2010

বসতির স্নিগ্ধতা

ঘরের মাঝে এক চিলতে স্নিগ্ধ আলো। জানালা গলে চুইয়ে পড়া রোদ আর স্পট লাইটের দেয়াল ঘেষা আলো। এমন স্নিগ্ধ এক প্রতিরূপ যেনো স্বর্গতুল্য কোনো বসতি। এসপ্তাহে কড়চার মুলফিচারে উঠে এসেছে এমন ঘরেরই আদ্যপান্ত। লিখেছেন ও ছবি তুলেছেন এমএইচ মিশু

সেই গুহায় বসবাস থেকে সব সময়ই মানুষ নিজের বসতবাড়ি তৈরিতে যতœশীল। তাইতো প্রতি নিয়ত তৈরি হচ্ছে নানান রকম আর্কিটেক্ট ফার্ম আর ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং হাউজ। নিজের ঘরটাকে পুরোপুরি পছন্দ আর অভিরুচিতে সাজাতে মানুষ কত রকম প্রচেষ্টাই না চালায়। তবে ঘরকে নিজের মতো করে সাজাতে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ হলো ঘরের রঙ নির্বাচন। এরপর একে একে আসবে ঘরের আসবাব বিন্যাস আর ঘরের বারান্দা, জানালা, দরজার নানান আয়োজন।

চার দেয়ালের কাব্য

ঘরের চার দেয়াল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ এর দেয়ালগুলো। দেয়ালের দুরত্ব আর রঙের খেলা অনেকটাই ঘরকে স্নিগ্ধ করে তোলে। আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষই ঘরের দেয়ালকে একেবারে সাদা রঙের সাজিয়ে থাকে। কিন্তু এখানে বলে রাখা প্রয়োজন ঘরের আয়তন আর মেঝের অবয়বটাও কিন্তু একই ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ধরুন যখন মেঝেতে থাকবে কাঠের টেক্সচার তখন দেয়ালে রাখতে পারেন হালকা বাদামি আভা। যদি পাথর কিংবা টাইলস বসানো থাকে তাহলে দেয়ালে ধুসর সাদা, নীলচে সাদা এসব রঙও অনেকাংশে স্নিগ্ধতা ফুটিয়ে তুলতে পারে। মনে রাখুন দেয়ালে কোনো কটকটে কিংবা উজ্জ্বল রঙ আপনার পুরো ঘরের স্নিগ্ধতাকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে। তবে একটা বিশেষ দেয়ালকে একটু গাঢ় রঙে ঠেকে দেয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে চেষ্টা করুন সে দেয়ালটিকে এমন কোনো জায়গাতে রাঙাতে যেখানে দেয়ালটা কেনো নির্দিষ্ট জোন হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

এতো গেলো দেয়াল রাঙানোর কথা। এরপর আসবে দেয়ালে বিভিন্ন উপকরণ সাজানো প্রসঙ্গে। ঘরে একটা স্নিগ্ধ ভাব রাখতে দেয়ালে পেইন্টিংস বা ফটোগ্রাফির কোনো বিকল্প নেই। তবে অনেকে দেয়ালে নিজের সংগ্রহ করা প্রিয় মুখোশগুলো ঝোলাতেও পছন্দ করে থাকে। এটা অনেকটা নির্ভর করছে ঘরের মানুষগুলোর উপরে। তবে দেয়ালে যেভাবেই যা ঝোলানো হোক না কেনো ঘরের মাপ আর দেয়ালের বিন্যাসটাও গুরুত্বপূর্ণ। ঘরের আয়তন যদি ছোট হয় তাহলে ছোট ছোট ফ্রেমে ভাগ করে ছবি গুলো ঝুলিয়ে দিন। আর যদি ঘরের আয়তন হয় বিশাল তাহলে দেয়ালর কোনো একটা বিশেষ অংশ জুড়ে লম্বা করে সাজিয়ে দিতে পারেন ছবিগুলো।

আলোর খেলা

ঘরে শুধু দেয়াল আর রঙ না, ঘরে আলোকসজ্জাও ঘরকে স্নিগ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমেই খেয়াল রাখুন ঘরের কোনো বাতিই যেনো শেড বিহীন না থাকে। মানে, বাতিগুলোকে কোনো শেডের ভেতরে রাখতে চেষ্টা করুন। আর যেসব জায়গাতে রিডিং লাইট প্রয়োজন হবে সেখানে টেবিল ল্যাম্প অথবা স্পট লাইট ব্যবহার করতে পারেন। শেডের ভেতরে লাইট থাকলে তা কখনই ঘরে কড়া আলো সৃষ্টি করতে পারবেন না। ফলে চোখে একটা স্নিগ্ধ ভাব বজায় থাকবে সবসময়। তবে তাই বলে ঘরকে অন্ধকার করে রাখলেও চলবে না। করিডোরের মতো জায়গা, এক ঘর থেকে অন্যঘরে যাবার জায়গাগুলো সাজানো যেতে পারে একেবারেই স্পট লাইট নির্ভর করে। আর ড্রইং কিংবা ডাইনিং স্পেসে রাখতে পারে ঝুলন্ত কোনো ল্যাম্প শেড।

যেসব দেয়ালে পেইন্টিংস কিংবা ফটোগ্রাফ ঝুলিয়ে রাখতে চান সেসব দেয়ালে ছবির উপরে স্পট রাখতে চেষ্টা করুন। এখানে স্পট সেট করতে চেষ্টা করুন সিলিং থেকে। তাহলে লাইটের আলোর ঝলকানিটা চোখে পড়বে না। কিছু ফার্নিচার রাখতে পারে যেগুলো মুলত মৃদু আলোর উৎস হতে পারে। আমাদের দেশের এখন এধরনের ওয়াগন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এর মধ্যে ডাইনিং ওয়াগনটি হতে পারে চমৎকার আলোর উৎস। আবার অনেকে দেয়ালে বড় একটা পেইন্টিং-এর পেছনে লুকিয়ে রাখেন আলোর উৎস। যাতে করে দেয়াল জুড়ে আলো থাকলেও আলোর তীর্যক ভাবটা কমে আসে অনেকটাই।

0 comments:

Post a Comment