RSS

Monday, January 11, 2010

 কোটি ফ্যাশন

শীতকালে অনেকেই গলায় মাফলার পেঁচিয়ে রাখেন। এই পেঁচিয়ে রাখার মধ্যেও আবার অনেকে একটু কায়দা করেন। মাফলারের রং উপকরণেও থাকে বৈচিত্র্য। ঠিক তখনই মাফলারটাও হয়ে ওঠে ফ্যাশনের অনুষঙ্গ। শীতকালে এমন বাড়তি কাপড় দেখাই যায়। যদিও শীত নিবারণটা মুখ্য উদ্দেশ্য, তবু পোশকটা হওয়া চাই ফ্যাশনেবল। তেমনই একটি পোশাক কোটি।
সালোয়ার-কামিজ তো বটেই, শাড়ির সঙ্গেও অনেকে পরেন কোটি। শীত যেমন কাটে, ফ্যাশনের কায়দাটাও এতে হয় ভালোভাবেই। কোটির ধরন-ধারণে পরিবর্তন মাঝেমধ্যেই দেখা যায়। তবে আমাদের শীত-পোশাকে নানাভাবে ঘুরেফিরে আসে কোটি। এই শীতেও এসেছে নতুন রূপে, আভিজাত্য নিয়েই।

কোটিতে নতুনত্ব
কোটির কথা বললে অনেকের মনে যে রূপটা ভেসে ওঠে তা হলো—হাতাকাটা, দৈর্ঘ্যে ছোট, মোটা কাপড়ের ওপর নকশা, সামনের দিকে কাটা এক পোশাক। আসলে আগেও কোটির নকশায় নানা বৈচিত্র্য দেখা গেছে। হাতাকাটা, ফুলহাতা কোটিও দেখা গেছে। হাল আমলের ফ্যাশনের ধারায় অনেক কিছুর মতো কোটির ধরনধারণও বদলে যাচ্ছে।
‘একটু বদলের মাধ্যমে ফ্যাশনের ক্ষেত্রেও যোগ করা যাবে নতুন একটা অধ্যায়।’ বললেন ফ্যাশন ডিজাইনার এমদাদ হক। তিনি আরও বলেন, ‘শীতের সময় শাল ও সোয়েটার অহরহই পরা হচ্ছে এখন। কর্মজীবীদের জন্য বা দাওয়াতে যেতে নারীদের জন্য এই শীতে কোটি হয়ে উঠতে পারে একটি আদর্শ স্টাইল। দরকার একটু অভিনবভাবে উপস্থাপন করা। আগে যেভাবে পরা হতো, তার চেয়ে একটু ভিন্নভাবে পরা।’ তো কোটির নতুন ধরনটা কেমন হতে পারে? ধারণা দিলেন এমদাদ হক। তিনি জানালেন, নতুন ধাঁচের কোটিটি হবে লম্বা। কোমর বা কোমরের একটু নিচ পর্যন্ত। এটা শাড়ি অথবা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে মানাবে ভালো। এটি হাতাকাটাও হতে পারে আবার লম্বা হাতারও হতে পারে। লম্বা হলে হাতাটা একটু চাপা করে নিতে হবে। কোটির গলায় বৈচিত্র্য আনা যায়। গোল গলা, ভি গলা, উঁচু কলার, যেভাবে ইচ্ছে করুন। গলায় আলাদাভাবে পাইপিং লাগান। দেখতে ভালো লাগবে। যাদের গলা ছোট তারা উঁচু গলা ব্যবহার না করলেই ভালো। গোল গলা করুন এ ক্ষেত্রে। লম্বা গলার অধিকারীরা অবশ্য ভাগ্যবান। উঁচু কলারে চড়া করে পাইপিং লাগাতে পারেন।

উপস্থাপনটি হোক ঠিক
শাড়ি, কামিজ বা জিনসের সঙ্গে কীভাবে পরবেন, তার ওপর নির্ভর করবে এর ফ্যাশন। ব্লাউজের ওপর কোটি পরুন। শাড়ির আঁচলে ঢেকে থাকবে একটি দিক। এবং অপর দিকটি দেখা যাবে। এমদাদ হক বলেন, আগে মেয়েরা সোয়েটার শাড়ির সঙ্গে যেভাবে পরত, সে রকমই আঁচলটি কোটির বাইরে থাকুক। এতে ভালো লাগবে দেখতে। লম্বা হাতের কোটি ভালো দেখাবে সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে, মন্দ লাগবে না শাড়ির সঙ্গেও। অন্যদিকে জিনস, টপ তো আছেই। দেশীয় এ পোশাকটি বিদেশি পোশাকের সঙ্গেও চলে যাবে পুরোদমে।

তৈরি করুন মনের মতো
পছন্দের অনেক পুরোনো শাড়িই কিছু জায়গায় নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু ফেলে দিতে মন চায় না। আদিবাসী গোষ্ঠীর মেলা থেকে কেনা শালটাও পরা হয় না। অথবা জামদানির কামিজটা ছোট হয়ে গেছে। ওড়নাটাও ভাঁজ করে রাখা তাই আলমারিতে। কিছুই করা যাচ্ছে না এগুলো দিয়ে। ‘টুকরোটাকরা এসব কাপড় দিয়েই কোটি বানানো যাবে চমত্কারভাবে।’ বললেন এমদাদ হক। ইচ্ছেমতো মিলিয়েও নিতে পারেন একটির সঙ্গে আরেকটিকে। পুরোনো কাতান জামদানি জমবে ভালো; ভালো দেখাবে খাদি বা জামদনি, এন্ডি বা কাতানের মিলিত রূপটাকেও।
হ্যাঁ, কোটির আর বাঁধাধরা কোনো নিয়ম নেই। খাদির ওপর ব্লক কিংবা প্রিন্ট করে নেওয়া যেতে পারে। ভেজিটেবল ডাই ব্যবহারেও অভিনব লাগবে বলে জানালেন এমদাদ হক। হালকা রঙের কাপড়ে চড়া রঙের পাইপিং লাগাতে পারেন। ঠিক একই স্টাইলে উল্টোভাবে বানালেও চোখ ফিরিয়ে দেখবে সবাই। একটা কাপড় দিয়েও বানিয়ে নিতে পারেন কোটি। খাদি আর এন্ডির কোটিগুলো সাধারণ সময়ে ব্যবহার করুন ইচ্ছেমতো। তবে কাতান, জামদানিটি ওঠানো থাকুক দাওয়াতের জন্যই।

বয়সের হিসাব-নিকাশ
২৫ থেকে ৩০-৪০ পর্যন্ত কিংবা ২০-২৫—সব বয়সেই পরা যাবে কোটি। কিশোরী বা যুবতী বয়সে পরা মানে, তারাও ফ্যাশনটাকে গ্রহণ করছে বলে মনে করছেন এমদাদ হক।

মনে রাখবেন

 শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে বিপরীত রঙের কোটি বেশি ভালো লাগবে।
 খাদি কাপড়ে তৈরি কোটি এখনকার আবহাওয়ার জন্য বেশি উপযোগী।
 কোটির মাপ যথাযথ হতে হবে।
 কাঁধটি কামিজের মতো করেই বানাতে হবে। তবে কাঁধ থেকে একটু ছোট হবে।
 শরীর থেকে ২ ইঞ্চি ঢিলে করতে হবে।
 ঠিকমতো স্প্লিট দিতে হবে। কাঁধ থেকে শুরু হবে।
 অবশ্যই পাইপিং লাগাবেন।
 ভেতরের দিকে পকেট লাগাতে পারেন। মোবাইল ফোনসেট, চাবি রাখতে সুবিধা হবে।
 বোতাম লাগানোর ক্ষেত্রেও একটু ব্যতিক্রম আনার চেষ্টা করুন।

0 comments:

Post a Comment