RSS

Monday, January 18, 2010

স্টাইলের পূর্ণ আয়োজন

শহুরে মানুষদের আভিজাত্যের গড়ন দেখে অনুমান করা যায় এ শহরে ফ্যাশনেবল মানুষদের দৌরাত্ম প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে। ফ্যাশন বুঝি এখন গণমানুষের। পুরুষ কিংবা নারী যুবক কিংবা পৌঢ় সবাই ফ্যাশনের প্রতি ঝুঁকছেন প্রতিনিয়ত। ঢাকা শহরের প্রধান প্রধান ফ্যাশন হাউসগুলো ছাড়াও প্রতিনিয়তই তৈরি হচ্ছে ফ্যাশনের নতুন নতুন চমক। শহরে মানুষদের এই ফ্যাশনপ্রীতি প্রভাবিত করছে এদেশের ফ্যাশন শিল্পে জড়িতদেরকেও। তাই শহরময় গড়ে উঠছে নতুন নতুন ফ্যাশন হাউজ। এসব ফ্যাশন হাউজ এখন আর শুধু ফ্যাশনের কোনো বিশেষ অংশকে নিয়েই নয়, বরং ফ্যাশনের প্রায় সবগুলো বিভাগকেই ছুঁয়ে যায়। ঢাকার গুলশানে গড়ে উঠেছে এমনি একটি পূর্ণাঙ্গ ফ্যাশন হাউজ। এক ভবনে নিচতলা-দোতলা মিলে গড়ে উঠা এ ফ্যাশন হাউজটির নিচের অংশটি ফরচুনা আর উপরের অংশটি মানসা। ফরচুনা গ্রুপের এই ফ্যাশন আউটলেট নিয়েই আমাদের এবারে স্টাইলশপ। লিখেছেন এমএইচ মিশু।

ফরচুনা

ছোট পরিসরে তৈরি করা এই আউটলেটটি মূলত বিক্রি হয় সব ধরনের চামড়াজাত পণ্য। ফরচুনা গ্রুপের চামড়াজাত পণ্য তৈরিতে রয়েছে বহুবছরের অভিজ্ঞতা। একটা সময় তাদের তৈরি করা চামড়াজাত বিশেষ পণ্যগুলো শুধুমাত্র বিদেশে রপ্তানির জন্য প্রক্রিয়াজাত করা হতো। এসব পণ্য তৈরিতে ফরচুনার রয়েছে নিজস্ব কারখানা। পরবর্তীতে গেল বছর নভেম্বর মাসে ফরচুনা গ্রুপ প্রথমবারের মতো তাদের অভিজাত চামড়াজাত পণ্যগুলো দেশের ভেতরে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে ফরচুনা নামে এই ছোট্ট লেদারশপটি উদ্বোধন করে।

আভিজাত্য যেন কানায়-কানায়। দোকানটি মাত্র ৫০০ বর্গফুট জায়গা জুড়ে হলেও প্রবেশ করতেই আপনি টের পাবেন বিশাল এক চামড়াজাত পণ্যের জগতের হাতছানি। ধবধবে সাদা দেয়ালগুলো যেন এই ছোট্ট দোকানটার চার দেয়ালকে বিস্তৃত করেছে। দোকানে চামড়ার পণ্যগুলো শোকেসে সাজানো। বিভাগ বিন্যাস করা হয়েছে অত্যন্ত যতেœর সাথে। এখানে পাওয়া যাবে ছেলেদের কিছু পার্টি সু। ছেলেদের এসব জুতো কালো, বাদামি ছাড়াও আরও বেশকিছু আকর্ষণীয় রঙ। জুতোগুলোর প্যাটার্ন অনেকটা ইউরোপিয়ান স্টাইলে তৈরি। এছাড়া এখানে পাওয়া যাবে ছেলেদের বেশকিছু ডিজাইনের আকর্ষণীয় সেন্ডেল।

জুতো বিভাগে মেয়েদের জন্যও আছে আলাদা শোকেস। মেয়েদের জুতোগুলোর মধ্যে থাকছে দু’তিন ধরনের স্টাইল। এখানে সবসময় ব্যবহারের জন্য আছে ফ্ল্যাট সোলের বেশকিছু জুতো। যারা একটু হিল পড়তে অভ্যস্ত তাদের জন্যও আছে ভিন্ন ভিন্ন স্টাইলের পার্টি জুতো। এসব পার্টি জুতো মধ্যে পাওয়া যাবে একেবারে ঝকমকে উজ্জ্বল ফ্যাশন আর চামড়ার আভিজাত্য। হাল ফ্যাশনের গ্লাডিয়েটর সু কিংবা শীতের উপযোগী পুরো পা ঢেকে থাকবে এমন জুতোও মিলবে ফরচুনায়।

এর বাইরে ফরচুনায় চামড়ার ব্যাগ আর ওয়ালেটের রয়েছে বিশাল সংগ্রহ। এখানে নানান ধরনের চামড়ার ব্যাগ পাওয়া যাবে। ছেলেদের ব্যাগগুলোর মধ্যে রয়েছে এক্সিকিউটিভ স্টাইল। এসব ব্যাগে অফিসের কাগজপত্র কিংবা আপনার প্রিয় ল্যাপটপটি এঁটে যাবে সহজেই। এসব ব্যাগের ডিজাইন আর ব্যবহৃত চামড়ার টেক্সচার একটু ভিন্ন। ব্যাগগুলো আকৃতিতে একটু বড় হলেও বাজারের আর দশটা চামড়া ব্যাগের তুলনায় অনেক হালকা আর মজবুত। ব্যাগের বিভাগে মেয়েদের জন্যও রয়েছে কিছু আকর্ষণীয় পণ্য। পাওয়া যাবে কাঁধে ঝোলানোর মতো ফ্যাশন কেতাদুরস্থ কিছু ব্যাগ। এসব ব্যাগ রঙ আর ডিজাইনে ফ্যাশনেবল। এছাড়া ছেলে- মেয়ে উভয়দের জন্যই থাকছে বিশেষ এক ধরনের চামড়ার ব্যাগ যা কিনা কলেজ পড়ুয়াদের জন্য উপযোগী। এখানে পাওয়া যাবে ছেলেদের জন্য চামড়ার ওয়ালেট আর মেয়েদের জন্য ফ্যাশনেবল কিছু পার্টি পার্স। এসব পার্স দামে একটু বেশি হলেও দেখতে একেবারেই আধুনিক আর অনন্য। ফরচুনায় এসব লেদার পণ্য ডিজাইন করার জন্য রয়েছে বিদেশি ডিজাইনার। মান নিয়ন্ত্রণের জন্যও তারা বিদেশি বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকেন। চামড়ার এসব পণ্যের সবচেয়ে মজার দিকটি হলো এসব পণ্যগুলোই পুরোপুরি হাতের তৈরি। চামড়া পণ্যকে ক্রেতার কাছে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে উপস্থাপনের লক্ষ্যেই ফরচুনা তার পণ্যগুলোকে তৈরি করে অভিজ্ঞ হাতে। এখানে ছেলেদের জুতা পাওয়া যাবে ৩৫০০ থেকে ৭৫০০ টাকা পর্যন্ত। আর মেয়েদের জুতো পড়বে ২০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত। মেয়েদের ব্যাগ পাওয়া যাবে ৫০০০ থেকে ৬৫০০ টাকার মধ্যে। খুব শিঘ্রই ফরচুনার আরেকটি শাখা টাঙ্গাইলে আর উত্তরাতে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।

মানসা

ফরচুনা গ্রুপের আরেকটি ফ্যাশন আউটলেট হলো- মানসা। ফরচুনার দোতলায় এই ফ্যাশন হাউজটি পুরোপুরি মেয়েদের পোশাক-আশাকে আবৃত। গত বছর জুলাই মাসে এই হাউজটি তার যাত্রা শুরু করে। ফরচুনা গ্রুপের এই অংশে মূলত অভিজাত নারীদের পূর্ণ পোশাক আয়োজন নিয়েই তৈরি। মেয়েদের এই অংশটি মোটামুটি তিনভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে রয়েছে শাড়ি, সালোয়ার কামিজ আর ফতুয়া। এখানে নিজস্ব ডিজাইনারদের দিয়ে পোশাকগুলো তৈরি। পোশাকে খুঁজে পাওয়া যাবে আধুনিকতার ছোঁয়া। মেয়েরা বরাবরই তাদের পোশাকটা হাল ফ্যাশনের হোক এমনটাই চায়। মানসায় এমনি কিছু পোশাকের দেখা মিলবে। ফরচুনা আর মানসার ঠিকানা ১৬৯, নর্থ গুলশান এভিনিউ, গুলশান ২। ফোন- ৯৮৮০৭৭৭।

0 comments:

Post a Comment