
প্রথম ড্রইং রুমের কথায় আসি। কোন বাড়ির প্রথম যে ঘরটি আসে তা হল ড্রইং রুম। এই ঘরে বসার ব্যবস্থা করতে হবে প্রথমে। সোফা দিয়ে বসার ব্যবস্থা করতে হবে তার কোনো মানে নেই। বসার সাথে শোয়া এবং স্টোরেজ এই তিনের সমন্বয়ে ঘটানো যায়। নিচু কাঠের বাক্সের উপর গদি বা ফোম বিছিয়ে সাথে ছোট বড় কুশন দিয়ে সাজানো যাবে বসার স্থানটি। এখানে বসার সাথে রাতে গেস্টের শোবার ব্যবস্থাও করা যাবে। এই বাক্সে ড্রয়ার সিস্টেম করে স্টোরেজ করতে পারেন। সাথে মেঝেতে ছোট কার্পেট, শতরঞ্জি বা পাটের ম্যাট বিছিয়ে সাথে বড় কয়েকটি কুশন রেখে তার উপর বসার ব্যবস্থা এবং আরো কয়েকটি ছোট ছোট কুশন দিয়ে হেলান দিয়ে আরাম করে গা এলিয়ে বসা যাবে। নিচু নিচু কয়েকটি মোড়া, বেতের ডিভান এর ব্যবস্থা রাখতে পারেন। সেন্টার টেবিল বানাতে চাইলে শুধু সুবিধামত সাইজের গ্লাস টপ কিনে এটা টপকে সেট করতে পারেন একটু শক্ত ও ভারি আকৃতির মাটির মটকা বা পাটারির ওপর। একই সাইজের চারকোনায় চারটা পটারি বসিয়ে তার উপর গ্লাসটপ রাখলেই সহজেই সেন্টার টেবিল হয়ে যাবে। এতে ব্যয়ও হবে কম আবার দেখতেও অনেক নান্দনিক হবে। অল্প খরচে কাঠের আসবাবের জন্য উপযুক্ত হল কেরোসনি কাঠ। এটা দেখতেও যেমন ভাল লাগে তেমনি দামেও সস্তা। চারকোনা একটা ফ্রেম তৈরি করে তার উপরে টেবিল টপ সেট করলেই হয়ে যাবে টেবিল। ইদানিং রড আয়রনের আসবাবও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেখতে সুন্দর, উপযোগী আবার দামেও ক্রয় ক্ষমতার নাগালের মধ্যে, এইসব বিবেচনায় রড আয়রন জনপ্রিয়তা পেয়েছে। রড আয়রন দিয়ে নিজের ইচ্ছামত ডিজাইন দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন আপনার ঘরের আসবাব। এখন বাড়ি ফ্ল্যাট সব কিছুরই আয়তন কমে যাচ্ছে। তাই ছোট্ট ফ্ল্যাটে আসবাব যত কম ঢুকানো যায় তত ভাল হবে। ড্রেসিং টেবিলের কাজ চালাতে আবার জায়গাও কম লাগাবে এই ফর্মূলা অনুসরণ করতে চাইলে দেয়ালে ঝুলিয়ে দিতে পারেন লুকিং গ্লাস। রড আয়রন বা কাঠের ফ্রেম করে দেয়ালে আয়না ঝুলিয়ে দিন। সাথে সাজগোজের জিনিস রাখার জন্য রড আয়রনের দেয়ারে ঝোলানো তাক রাখতে পারেন। গৃহকর্তার যদি বই পড়ার অভ্যাস থাকে তবে ওয়াল-টু-ওয়াল দুই ফিট হাইটের কাঠের তাক করে তার মধ্যে বই রাখুন। এই তাকের উপরেই রাখুন আপনার টেলিভিশন, মিউজিক সিস্টেম এবং আপনার শখের কোন ডেকোরেশন পিস। আরো থাকতে পারে ফ্লাওয়ার ভাস। ঘরের আয়তন ছোট হলে তৈরি করে নিতে পারেন ফ্লোল্ডিং ফার্নিচার। যা কাজ শেষে ফ্লোড (ভাঁজ) করে রাখতে পারবেন। ফ্লোডিং ডাইনিং টেবিলও তৈরি করতে পারেন। যদি ড্রইং-ডাইনিং এর এরিয়া ছোট হয় তবে দেয়ালের সাথে মেলামাইন বোর্ড বা পারটেক্স বোর্ডকে দেয়ালে এমনভাবে সেট করুন যাতে খাবার সময় ছাড়া বাকি সময় দেয়ালের সাথে ভাজ করে রাখা যায়। দুই ফুট বা আড়াই ফুট হাইটে বোর্ডটি লাগান এবং বোর্ডের যে পাশ দেয়ালের সাথে লাগানো থাকবে না সেই পাশে কাঠের পায়া লাগিয়ে নিন। কাজ শেষ হলে ফ্লোড করে রাখুন।
যখন বোর্ডটি ফোল্ড করা থাকবে তখন দেখতে যাতে খারাপ না লাগে সেজন্য বোর্ডের উল্টা পাশে দেয়ালের কালারের সাথে মিলিয়ে সেই কালার করে নিন বা তাতে অন্য কোন পেইন্টিং করিয়ে নিলে দেখতে ভালো লাগবে। আর খাবার সময় ছাড়া অন্য সময় চেয়ারগুলিকে বসার কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। ঘরের আসবাবে যাই করুন না কেন সব সময় গুরুত্ব দিবেন আপনার নিজস্ব পছন্দ এবং রুচির। যাতে গৃহে আপনার রুচির এক প্রতিফলন ঘটে। গৃহ দেখেই বোঝা যাবে গৃহকর্তার রুচির পরিচয়।
0 comments:
Post a Comment