RSS

Tuesday, December 22, 2009

শিশুর দাঁতের যত্ন

কয়েক দিন আগেই শিশুটি ফোকলা মুখে ঘরময় নেচে বেড়াত। দুধের দাঁতকে বিদায় জানিয়ে সেখানে জায়গা করে নেয় স্থায়ী দাঁত। একটি একটি করে দাঁত ওঠে। আর এই স্থায়ী দাঁতই রয়ে যায় সারা জীবন। সে জন্য এই দাঁতের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
শিশুর দুধের দাঁত পড়ে স্থায়ী দাঁত ওঠার সময়টাতে বেশ সতর্ক থাকা উচিত। তা না হলে দাঁতের গঠন ভালো হয় না। এ জন্য মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থাতেই সচেতন থাকতে হবে। মায়ের গর্ভের ছয়-আট সপ্তাহের মধ্যে ভ্রূণের দুধদাঁতের গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই সময় মাকে পুষ্টিকর খাদ্য বেশি করে খেতে দেওয়া উচিত। এতে ভবিষ্যতে শক্ত ও মজবুত স্থায়ী দাঁত গঠন হয়। বলেন ইন্টিমেন্ট ডেন্টাল কেয়ারের প্রধান চিকিত্সক মো. রিয়াজুল আহসান

সাধারণত শিশুর ছয় বছর বয়স থেকে দুধদাঁত পড়া শুরু হয়। প্রায় ১৩ বছর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। দাঁত পড়ার সময়ের মতো দুধদাঁত থেকে স্থায়ী দাঁত ওঠার প্রক্রিয়াটাও দীর্ঘ। এ সময়ে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ক্লোরাইড এবং ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’, ‘ডি’ জাতীয় খাদ্য খাওয়া উচিত। এসব সুষম খাদ্য দাঁতকে সুগঠিত করে।
বাংলাদেশ ডেন্টাল কলেজের শিশু চিকিত্সা বিভাগের প্রধান লাবুদা সুলতানা। তাঁর সন্তান নিনাতা ও নাওয়ালের স্থায়ী দাঁত ওঠা শুরু হয়েছে। শিশুর দাঁত সুস্থ রাখতে কী করণীয়, তা জানিয়েছেন তিনি।
 শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর পর নরম কাপড় বিশুদ্ধ পানিতে ভিজিয়ে দাঁত মুছে দিতে হবে।
 বোতলে দুধ খাওয়ানো শুরু করলে চিনিমুক্ত দুধ দিতে হবে। দুধ বা ফলের রস খাওয়ানো শেষ হওয়ার পরপরই দাঁত নরম কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে।
 বোতলের খাবার খেতে খেতে ঘুমিয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে মুখ থেকে তা সরিয়ে নিতে হবে।
 শিশুর অন্তত চার-পাঁচটি দাঁত উঠে গেলে তা ‘ফিঙ্গার ব্রাশ’ দিয়ে ব্রাশ করান।
 দিনে অন্তত দুবার ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ টুথপেস্ট ও নরম ব্রাশ দিয়ে সঠিক নিয়মে দাঁত মাজতে হবে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে ও সকালের নাশতার পরে। সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত মাজলে মুখটা সতেজ লাগে, কিন্তু নাশতার পর শুধু ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজলে রোগগুলো প্রতিরোধ করা যায়।
 দুই দাঁতের মধ্যবর্তী অংশটি ডেন্টাল ফ্লস বা আন্তদণ্ডীয় ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
 প্রতিটি দুধদাঁত পড়া এবং ওই স্থানে স্থায়ী দাঁত ওঠার নির্দিষ্ট সময় আছে। এর আগে দুধদাঁত ফেলে দিলে বা নষ্ট হলে অভিজ্ঞ চিকিত্সকের শরণাপন্ন হতে হবে।
 চিনি বা চকলেট-সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কোনো কিছু খাওয়ার পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে কুলি করতে হবে।
 বিভিন্নভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরও যদি দাঁতে জীবাণু বাসা বাঁধে, তবে চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

0 comments:

Post a Comment