RSS

Tuesday, January 4, 2011

কর্মক্ষেত্রে মানসিক দৃঢ়তা

প্রতিদিনের কর্মজীবনে আমাদের মুখোমুখি হতে হয় নানা বিড়ম্বনার। পেশাগত দক্ষতার পাশাপাশি সঠিক কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রয়োজনে আমাদের নিজেদেরও বাড়াতে হয় মানসিক দৃঢ়তা আর সিদ্ধান্ত দেয়ার সক্ষমতা। নিজের চারপাশকে কর্মদক্ষতায় মুগ্ধ করতে প্রয়োজন কাজের জায়গাটিকে আত্মস্থ করে নেয়া। প্রতিদিনের জীবনধারায় যারা নিজেদেরকে কর্মমুখর হিসেবে দেখতে চান তাদের জন্য এই দৃঢ়তা জীবনযাত্রার এক প্রয়োজনীয় অংশ। নিজের বুদ্ধি, কৌশল এবং কাজের স্পৃহাকে সঠিক পর্যায়ে প্রমাণ করতে কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজন যথার্থ মানসিক দৃঢ়তা। এই প্রয়োজনের ৬টি বিশেস্নষণে সাজানো হয়েছে আমাদের এবারের আয়োজন।

নিজেকে সহজভাবে উপস্থাপন

জটিল কোনো পরিস্থিতিতে সহজ থাকতে হবে। সবকিছু যেভাবে আশা করা হয়, তেমনভাবে নাও ঘটতে পারে। এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে হতাশ না হয়ে নমনীয় থাকতে হবে এবং সমস্যার সমাধানের নতুন উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে। একইসঙ্গে পূর্ব জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা যাচাই করে এর থেকে সমাধান বের করার চেষ্টাও করতে হবে।

নিজের কর্মদক্ষতায় আস্থা

প্রতিকূল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের মতো মানসিক ও শারীরিক শক্তি থাকা একজন ব্যক্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এমনকি ব্যর্থ হওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা সত্ত্বেও তাদের মনোবল ধরে রাখা জরুরি। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সর্বোচ্চ ক্ষমতা নিয়ে লড়বার মানসিকতা থাকতে হবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে মেধাবী ও কর্মঠদের চিন্তাটি থাকে এমন, 'পরিস্থিতি যখন কঠিন, আমি তখন তার চেয়েও বেশি কঠিন।'

পরিপূর্ণ দায়িত্ব নেয়ার চেষ্টা

একজন দক্ষ নেতা চাপের মধ্যেও তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকেন। হাজারো চাপের মধ্যেও তিনি ক্রমাগতভাবে পরিস্থিতির বিভিন্ন সুযোগ, চ্যালেঞ্জ এবং হুমকি চিহ্নিত করে চলেন। এক্ষেত্রে অন্যের মতো করে সমস্যাটির সমাধান নাও হতে পারে_এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে চলমান বৈশ্বিক ঘটনাবলীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নতুন উপায়ের সন্ধান করতে হবে। প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝার ক্ষমতা থাকা এবং একইসঙ্গে পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেকেই বদলে ফেলার মতো দক্ষতাও একজন ব্যক্তির থাকা উচিত।

আত্মবিশ্বাসের পূর্ণতা

নিজের উপর আস্থা রাখা সবসময়ই জরুরি। আর আত্মবিশ্বাসের পূর্ণতায় কষ্টকর হলেও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তি যেন অন্যের দ্বারা প্রলুব্ধ বা প্রভাবিত না হয় সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

স্থিতিস্থাপকতা

প্রকৃত একজন নেতার হতাশা, ভুল এবং সুযোগ হারানোর মতো দুঃখজনক পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে খুব দ্রুত কাজে ফিরে আসার ক্ষমতা থাকা জরুরি। প্রতিকূল অবস্থায়ও তাদের আশাবাদী থাকতে হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রুত নিজেকে পরিবর্তনের ক্ষমতা থাকতে হবে। সমস্যা সমাধানের দক্ষতাসহ অল্প সম্পদ দিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব

সব ব্যক্তির মধ্যেই একটি খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব থাকা জরুরি। তাদের পরিকল্পনা যেন কখনোই তার বিরোধীরা জানতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অন্যের দ্বারা আক্রান্ত হলে বা হেরে গেলেও পেশাদারের মতো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।

বর্তমান প্রতিযোগিতার যুগে সফলভাবে কাজ করে যাওয়ার জন্য আমাদের সবারই এই দৃঢ়তাগুলো অর্জন করা প্রয়োজন। কেননা, শুধু কৌশলগত দক্ষতা আমাদের সফলতা এনে দিতে পারবে না। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই বর্তমানে জটিল প্রশ্ন ও পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি পেশাজীবী ব্যক্তিকেই হতাশ না হয়ে বরং একজন দক্ষ খেলোয়াড়ের মতো দৃঢ়তার সঙ্গে প্রতিকূলতাকে মেনে নিতে হবে।

কর্মজীবনের প্রথম দিন

কর্মজীবনের প্রথম দিনের জন্য জরুরী ১০ টি টিপস-

০০ সবচেয়ে জরুরী বিষয় হলো অফিসে ঠিক সময় মত যাওয়া। দরকার হলে প্রথম দিন হাতে সময় নিয়ে একটু আগেই পৌঁছে যান।

০০ পোশাকের ক্ষেত্রে ফর্মাল হতে হবে। মেয়েরা দেশীয় পোশাক পরতে পারেন। তবে আগে থেকে যদি অফিসের কালচার সম্পর্কে জানা থাকে, তাহলে আপনি তেমনভাবে ও যেতে পারেন।

০০ সহকর্মীর সঙ্গে হাসিমুখে আলাপ পরিচয় করুন। তবে অতিরিক্ত বন্ধুভাবাপণ্ন ভাব দেখাবেন না। তাদের বোঝার চেষ্টা করুন।

০০ আপনার কাজ ভালভাবে বুঝে নিন। কাজ নিয়ে দ্বিধা থাকলে প্রশ্ন করতে ভুলবেন না।

০০ প্রথম দিন বেশি কথা না বলাই ভালো। গসিপ এবং পলিটিকসের মধ্যে যাবেন না। সবার কথা মন দিয়ে শুনুন।

০০ আরেকটি ব্যাপার প্রথম দিনই যে আপনি সব কাজ বুঝতে পারবেন তা নয়। তাই হতাশ হবেন না।

০০ যে প্রতিষ্ঠানে আপনি কাজ করতে এসেছেন সেই প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ, কাজের ধারা, বিভিন্ন বিভাগ, বার্ষিক রিপোর্ট, কর্মচারীদের ডেকোরাম ইত্যাদি সম্পর্কে প্রথম দিন জানার চেষ্টা করুন।

০০ তর্কে জড়াবেন না কারও সাথে। কোন মন্তব্য পছন্দ না হলে সরাসরি তাকে বলতে যাবেন না। তাতে আপনার সম্পর্কে ভুল মনোভাব সৃষ্টি হবে।

০০ মেয়েদের অবশ্যই মেকআপ নিয়ে থাকতে হবে। তবে অতিরিক্ত মেকআপ নেবেন না। ব্যাগ ও জুতা লক্ষ্য রাখবেন যেন সেটা পোশাকের সাথে সুন্দর মানিয়ে যায়।

০০ আর অবশ্যই যারা আপনাকে সাহায্য করেছেন, তাদের ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না।

0 comments:

Post a Comment