RSS

Monday, January 24, 2011

কোর্তা ঢঙে ব্লাউজ

যুগ যুগ ধরে বাঙালি নারীর প্রিয় পোশাক শাড়ি। এর অনুষঙ্গ হিসেবে চলে এসেছে ব্লাউজের ব্যবহার। ফ্যাশনসচেতন নারীরা কিন্তু তাতেই চুপচাপ বসে নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে দিয়েছেন ফ্যাশনের ধারা। আজ আর শাড়ির অনুষঙ্গ হিসেবে ব্লাউজ নয়, বরং ব্লাউজের সঙ্গে মিলিয়ে শাড়ি পরাটা হয়ে উঠেছে আরও বেশি জনপ্রিয়। ধরন, বরন, নকশা, বুননে ব্লাউজ এখন অপরূপ।

ফ্যাশন হাউস রঙ-এর ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা বলেন, বর্ণিল ও কারুকার্যময় ব্লাউজের ব্যবহার খুব নজর কাড়ছে। বাহারি নকশা আর ডিজাইনের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি যেটি চোখে পড়ছে, তা হলো ব্লাউজের কাট। ব্লাউজের হাতার দৈর্ঘ্যেও পরিবর্তন এসেছে। আর ঝুলটা নেমে গেছে একেবারে কোমর অবধি। কিছুটা কোর্তা ধরনের এ ব্লাউজ জনপ্রিয় হওয়ার আরও একটি কারণ, এখনকার এই হিম হিম আবহাওয়া। ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল ছাড়িয়ে আসা ব্লাউজের এখনকার কাটিং আমাদের সেই পুরোনো ঐতিহ্যকেই মনে করিয়ে দেয়। শুধু কাটিংই নয়, ব্লাউজের কাপড়ও এখন অনেক বৈচিত্র্যময়। ছাপা, চেক, স্ট্রাইপসহ নানা নকশায় হয়ে উঠেছে শিল্পীর ক্যানভাস। ফ্যাশন হাউস অ্যান্ডেজ ব্লাউজ নিয়ে নানা পরীক্ষামূলক কাজ করে যাচ্ছে, বিশেষ করে ব্লাউজে ছাপচিত্র ও অক্ষরচিত্রের ব্যবহারে। ব্লাউজের কাটিংয়ের ক্ষেত্রেও আফগানি, চীনা, ভারতীয়সহ বিভিন্ন দেশের কোর্তার কাটের ব্যবহারের মাধ্যমে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করেছে তারা। বললেন অ্যান্ডেজের ক্রিয়েটিভ অপারেশনস হেড বকুল বেগম। বারো মাসে তেরো পার্বণের এ দেশে বিভিন্ন পার্বণ ধরে ব্লাউজের নকশা করা হয়েছে। ফাল্গুনের হলুদ, কমলা; পয়লা বৈশাখের লাল-সাদার পাশাপাশি জাতীয় দিবস—যেমন, স্বাধীনতা দিবসের লাল, সবুজ; একুশে ফেব্রুয়ারির সাদা-কালোর মিশেলে ব্লাউজগুলো সেজে উঠেছে। কোনো কোনোটিতে রবীন্দ্রনাথের গান, কোনোটিতে আবার জীবনানন্দের কবিতার পঙিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে।
অ্যান্ডেজে পাওয়া যাবে কামিজ ও কোট—এ দুই কাটের ব্লাউজ। এগুলোর কোনোটিতে আবার কড়ি আর পুঁতির ঝালর দেওয়া। ফিতার ব্যবহারটাও দেখা যাচ্ছে। তা ছাড়া শেরওয়ানি গলা, পাঞ্জাবি গলা ও কোট গলার ব্লাউজের সঙ্গে এমব্রয়ডারি বা হাতের কাজও বেশ মানিয়ে গেছে। সাধারণত একটু মোটা ধরনের সুতি কাপড় দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এসব ব্লাউজ। এর মধ্যে পাতলা খাদি, মসলিন ও সিল্ক যোগ করে জমকালো করা হয়েছে। নিজেকে সবার থেকে একটু আলাদাভাবে সাজিয়ে তুলতে বেছে নিতে পারেন কামিজ আর কোট-ব্লাউজগুলো। এই শীতে তা হবে আরামদায়কও।
অফিসে পরতে পারেন সুতির পাতলা কামিজ ও কোট-ব্লাউজ। সঙ্গে সুতি, টাইডাই বা তাঁতের শাড়ি পরতে পারেন। শাড়ির আঁচলটা সামনের দিকে ভাঁজ করে টেনে নিন। যেকোনো উৎসবের সাজে একটু জমকালোভাব আনতে কোট-ব্লাউজ বেছে নিতে পারেন। কড়ি, ঝালর আর পুঁতির কারুকার্যময় এ ব্লাউজগুলোর সঙ্গে পরতে পারেন বিপরীত রঙের শাড়ি। লালের সঙ্গে কালো, সবুজের সঙ্গে কমলা, সাদার সঙ্গে লাল রং বেছে নিতে পারেন। সাধারণত শেরওয়ানি ও হাইনেক গলাতেই বেশি জমকালো লাগবে উৎসবের সাজে। আঁচল সামনে ও পেছনে ভাঁজ করে ইচ্ছেমতো রাখতে পারেন। এর সঙ্গে ঝোলা গোছের ব্যাগও নিতে পারেন হাতে। অ্যান্ডেজে সুতি ব্লাউজগুলো পাবেন ১০০০-১২৫০ টাকায়। একটু জমকালো ব্লাউজগুলো পাবেন ১৬০০-১০০০০ টাকার মধ্যে। ব্লাউজের কাপড় পাবেন ১৬০-৩৫০ টাকায়। আপনি চাইলে নিজে ব্লাউজ বানিয়েও নিতে পারেন এখান থেকে। শাড়ি দেখালে তার সঙ্গে মিলিয়ে ব্লাউজ তৈরি করে দেবে অ্যান্ডেজ। এ ছাড়া দর্জিবাড়ি থেকে আপনার পছন্দের নকশার ব্লাউজ বানিয়ে নিতে পারেন।

0 comments:

Post a Comment