RSS

Monday, January 24, 2011

হানিমুন

দুজন নর-নারী বিয়ের স্বগর্ীয় বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর পরস্পরকে জানতে ও বুঝতে পারার জন্য কিছু সময় লোকচক্ষুর অন্তরালে নিজেদের একান্ত সানি্নধ্যে কাটাতে চায়। এ থেকেই হানিমুনের ধারণার উদ্ভব। পাহাড়ের উষ্ণতায় কিংবা সমুদ্রের গর্জনে স্নাত সৈকতে কিংবা অরণ্যের বিচিত্রতায় রহস্যময় মনের অতলে ডুব দিয়ে মণি-মুক্তা তুলে আনার প্রয়াসে নিজেদের হারিয়ে ফেলার উদ্দেশ্যেই বর কনের হানিমুন যাত্রা।

নিজের হানিমুনকে কিভাবে সর্বোত্তমভাবে উপভোগ করা যায়, তার জন্য পস্ন্যান কিন্তু বিয়ের আগে থেকেই সেরে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে অভিজ্ঞদের কিংবা ট্রাভেল এজেন্টদের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। হানিমুনের ভেনু্য হতে পারে দেশের ভিতরে বা বাইরে। এর প্রকৃতি নির্ভর করে দুজনের পছন্দের উপর। দেশের ভিতরের বিভিন্ন স্পটগুলোর মধ্যে যদি কোনোটাতে যেতে দুজনের আগ্রহ থাকে তাহলে সেখানে ঘুরে আসতে পারেন। কক্সবাজার, কুয়াকাটা, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, কাপ্তাই,সিলেট, সুন্দরবন এ সবের কোনো জায়গার প্রতি যদি দুর্বলতা থেকে থাকে, তবে সেটাই হতে পারে আপনার হানিমুনের আদর্শ ভেনু্য। আবার দেশের বাইরে যেতে চাইলে ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সাইপ্রাস থেকে ইউরোপ বা আমেরিকার যে কোনো দেশেও ঘুরে আসতে পারেন প্রিয়জনের নিবিড় সানি্নধ্যের পরশে। কোথায় যাবেন সেটা সিদ্ধান্ত নেয়ার পরের পদক্ষেপ হচ্ছে বাজেট নির্ধারণ করা। নির্দিষ্ট বাজেটের মধ্যে যদি কোনো হানিমুন প্যাকেজে অন্তভর্ুক্ত হওয়া যায়, তবে সেটা হবে সবচেয়ে উপযুক্ত কাজ। কেননা এতে সফরের খুটিনাটি বিষয়গুলো নিয়ে নিজেরা চিন্তিত না হয়ে আয়োজকদের হাতে সেগুলো ছেড়ে দেওয়া যায়। থাকা, খাওয়া, গাড়ি ম্যানেজ করা, এসব বিষয়ে সারাক্ষণ মাথা ঘামাতে হলে হানিমুনের প্রকৃত আনন্দই মাটি হয়ে যায়। হানিমুনকে পরিপূর্ণ আর স্মরণীয় করে রাখতে এর প্রতিটি মুহূর্তই পরস্পরকে একান্ত আপন করে চেনার জন্য, বুঝার জন্য জানার জন্য, উৎসর্গ করতে হবে।

হানিমুনকে আন্তরিকতাপূর্ণ আর সফল করার জন্য কিছু টিপস নিচে দেওয়া হলো_

ট্রাভেলিং ব্যাগে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে ফিল্ম, ব্যাটারি, সানট্যান লোশান ও মাঝারি আকারের ট্রয়লেট্রিজ ভরে নিবেন।

হানিমুন স্পটের আকর্ষণীয় জায়গা ও ইভেন্টগুলো সম্পর্কে জেনে নিবেন।

ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ট্রাভেলার্স চেক ইত্যাদি গুছিয়ে নেবেন।

কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় ঔষধ ও ফাস্ট এইড বক্স সাথে নিবেন।

হানিমুন স্পটের ধরন বুঝে তার সাথে মানানসই কাপড় গুছিয়ে নিবেন। কেননা পাহাড়ে, সাগরে কিংবা বিখ্যাত কোনো শহরে ঘুরতে গেলে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের কাপড় চোপড়ের দরকার পড়বে।

ব্যাচেলর জীবনের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠাহীন এ্যাডভেঞ্চারস লাইফ স্টাইলের ইতি ঘটিয়ে যখন বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সময় আসে তখন প্রত্যেকেই তার নিত্যদিনকার রুটিনে কিছু পরিবর্তন আনতে হয়, কেননা বিয়ের কথা পাকাপাকি হয়ে যাওয়ার পর সবার প্রত্যাশা, যাতে পাত্র তার দায়িত্ব পরায়ণতা ও কর্তব্যবোধ সম্পর্কে সচেষ্ট হবে সর্বোপরি তার আচার আচরণেও মার্জিত এবং পরিণত ভাব আসবে। একজন মানুষের ব্যক্তিত্বের স্বরূপ প্রকাশ পায় তার নানা গুণাবলীর বাস্তব উপস্থাপনের মাধ্যমে। মনস্তাত্তি্বক গুণাবলীর কথা আলাদা করে রাখলে বাহ্যিক ভাবে তার পরিচ্ছন্নতা, পোষাক পরিচ্ছদ, প্রসাধন সামগ্রী, জুতো বা স্যান্ডেল এবং অন্যান্য নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রীর ধরন তার ব্যক্তিত্বের স্বরূপ প্রকাশ করে। তাই, আপনি যদি পাত্র হন তাহলে এসব ব্যাপারে অবশ্যই মনোযোগী হবেন। আজকালকার মেট্রোসেক্সুয়াল যুবকরা বিভিন্ন ধরনের ফেসিয়াল ছাড়াও নিজেদেরকে আকর্ষণীয় আর গ্রহণযোগ্য দেখানোর জন্য মেনিকিওর আর সেডিকিওর এর সাথেও নিজেদের আত্মস্থ করে নিচ্ছে। সুতরাং পিছিয়ে থাকলে চলবে না। নিজেকে সর্বোত্তমভাবে উপস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুতেই হাতেখড়ি নিতে হবে।

0 comments:

Post a Comment