RSS

Tuesday, December 28, 2010

উপহারে আশীর্বাদ

বিয়ের নিমন্ত্রণে যাবেন। সব ঠিকঠাক। কিন্তু উপহার কী দেবেন? এই চিন্তায় অনেক সময় আনন্দটাই দমে যায়। ‘আগে বিয়েতে কাঁসার তৈজসপত্র, মেলামাইন, কাচের বাসনকোসন কিংবা ডিনারসেট দেওয়ার প্রচলন বেশি ছিল। হয়তো নগদ অর্থ দিতেন কেউ কেউ। এ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে।’ বলেন ডিজাইনার চন্দ্রশেখর সাহা।

তিনি আরও জানান, আসলে এ পরিবর্তনটা ব্যক্তি পর্যায়ে হয়েছে। আগে মানুষ এভাবে ভাবতে পারত না। কাছের মানুষ হলে তাঁকে জিজ্ঞাসা করে নিতে পারেন। সবাই মিলে উপহার দিলে বড় বাজেটের জিনিস দিতে পারবেন। বিয়ের উপহারে দেখা যায় একই জিনিস অনেক পাওয়া যায়। বেশির ভাগ কাজেও লাগে না। তাই বর-কনেকে জিজ্ঞাসা করে নিলে প্রয়োজনীয় জিনিসটি কিনতে পারবেন। ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন দিতে পারেন। সামর্থ্য থাকলে দেশের মধ্যকার কোনো পর্যটন এলাকার মধুচন্দ্রিমার প্যাকেজ উপহার দিতে পারেন। বন্ধুরা মিলে নতুন দম্পতিকে দিতে পারেন প্লেনের টিকিটও। এ ছাড়া আরেকটা পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। বিয়েতে দেশি পণ্য দেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। হতে পারে তা মাটির কোনো ঘর সাজানোর সামগ্রী, নকশিকাঁথা, নানা শৈল্পিক কারুকাজের ফটোফ্রেম। এতে অবশ্য তাঁর বিশেষ কোনো মুহূর্তের ছবি বড় করেও দিতে পারেন, যা দেখে সে চমকে যাবে। এমন আনন্দ সব উপহারে দেওয়া যায় না। আগে প্রাইজবন্ড দেওয়ার প্রচলন ছিল। এখন তেমন দেখা যায় না। এর বদলে দেন গিফট ভাউচার কার্ড, যাতে পরে তিনি নিজের পছন্দমতো জিনিস কিনে নিতে পারেন। পোশাকের মধ্যে বিয়ের কনেকে জামদানি, মসলিন শাড়ি দেওয়া যেতে পারে। আপনি যদি তাঁর পছন্দ সম্পর্কে জানেন তাহলে তো কথাই নেই। না জানলে একটু কৌশলে জিজ্ঞাসা করে নিতে পারেন। ফলে যাকে দিচ্ছেন সে খুশি হবে, আপনিও তৃপ্তি পাবেন। উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে এই স্বাধীনতা বোধটাই মূল কথা। সোনার গয়না দেওয়ার ওই চাপ থেকে একটু হলেও বেরিয়ে আসতে পারবেন।
যাত্রার ধানমন্ডি শাখার আউটলেট ব্যবস্থাপক মাহমুদ হোসেন জানান, বিয়ের উপহার হিসেবে গৃহস্থালির জিনিস বেশি কেনা হয়। বিছানার চাদর, কুশন কভার, ছোট বালিশের কভার, টেবিলের কভারসহ রানার, ন্যাপকিন সেটও বিয়েতে উপহার হিসেবে দেওয়া যায়। এর বাইরে বিভিন্ন ধরনের ল্যাম্পশেড, মোমবাতি দানি, শতরঞ্জির চাহিদা রয়েছে। কেউ কেউ মাটির বাসনকোসনের সেট, নানা রকমের ট্রে, কাঠের চামচের সেটও দেন। সঙ্গে ঘর সাজানোর সামগ্রী তো রয়েছেই।
একটু অন্য রকম উপহার দিতে চাইলে প্রিয় কোনো শিল্পীর আঁকা চিত্রকর্ম দিতে পারেন। এ ছাড়া যাত্রা ও আড়ংয়ে গিফট ভাউচার কার্ড কিনতে পাওয়া যায়। যাত্রায় পাবেন ৫০০ ও ১০০০ টাকা সমমূল্যের কার্ড। এর মেয়াদ থাকে ছয় মাস। আর আড়ংয়ে ২০০-৫০০ টাকা সমমূল্যের কার্ড পাবেন। এর মেয়াদ থাকে এক বছর। ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মধ্যে মোবাইল, ছোট ডিজিটাল ক্যামেরা, নেট বুক এসবও দিয়ে থাকেন অনেকে। আধুনিক যুগে যা সবার কাজে লাগে।
এ ছাড়া গয়না যদি দিতেই চান তাহলে গোল্ড প্লেটেড গয়না, রুপার গয়না কিংবা দামি কোনো মুক্তার সেট দিতে পারেন। তবে উপহার যা-ই হোক না কেন, তাতে যেন আন্তরিকতা আর ভালোবাসার ছোঁয়া থাকে।

0 comments:

Post a Comment