RSS

Wednesday, November 18, 2009

 চলছে চাপা জিনস


জাঁকিয়ে না এলেও হিম হিম ভাব নিয়ে শীত তো প্রায় চলেই এসেছে।এ ঋতুকে উপলক্ষ করে বদলে গেছে পোশাকের রং-ঢং। বাড়তি উষ্ণতা পাওয়া কিংবা একঘেয়েমি কাটানো—কারণ যা-ই হোক না কেন, পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে জিনসের প্যান্টেও। বাজার ঘুরে তুলে ধরা হলো মেয়েদের জিনসের প্যান্টের বর্তমান হালহকিকত।

চাপা জিনস
দোমড়ানো-মোচড়ানো জিনসের কাপড়টা স্ট্রেচ করা। কোমর থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত পা দুটিকে যেন মুড়ে রেখেছে শক্ত করে। দেখলে মনে হয়, জিনসের কাপড়টি পায়ের সঙ্গে লেগে আছে। গোড়ালির অনেক ভাঁজ যেন চুড়িদার সালোয়ারের মতো। অন্যভাবে বলা যেতে পারে, সুপার স্কিনি জিনস প্যান্ট বা চাপা জিনস প্যান্ট। এটাই এখন জনপ্রিয় জিনসের কাটে—জানালেন ফ্যাশন ডিজাইনার মাহিন খান।

নাসিম আলী খান, ব্যান্ড সোলসের লিড ভোকাল হিসেবে শ্রোতাদের মন জয় করেছেন সব সময়। বেশ কয়েক বছর কাজ করেছেন ডেনিমের কাপড় আমদানিকারক হিসেবে। তিনি বলেন, ‘অতীতের জিনসের কাপড়গুলো ভারী ছিল বেশ। ১২.৫ এমনকি ১৪.৫ আউন্সের হতো। কিন্তু এখন এ কাপড় অনেকটাই হালকা হয়ে গেছে। এখন ১০ আউন্সের হালকা কাপড় বানানো হয়।’
তিনি জানান, ‘স্কিনি জিনসগুলোয় লাইক্রা মেশানো থাকে, এ কারণে নমনীয়তা আসে প্যান্টগুলোতে।’
কোমরের একটু নিচ থেকে পরাটাই এ কাটের জন্য মানানসই। এ কারণে এটাকে ‘লো-ওয়েস্ট স্লিক প্যাটার্নও’ বলা হয় বলে জানালেন ফ্যাশন হাউস একস্ট্যাসির অপারেশনাল হেড রাফি রহমান। শীতে এই চাপা প্যান্টের প্যাটার্ন আপনাকে অনেকটাই উষ্ণতা দেবে। পাশ্চাত্যে অনেক আগেই কাটটি শুরু হয়ে গেলেও আমাদের দেশে সম্প্রতি এটি বাজারে এসেছে। জানালেন রাফি রহমান।
রঙের বৈচিত্র্যে কালো, নীল ও হালকা নীল এগিয়ে আছে স্কিনি জিনসের রংগুলোয়। পাশাপাশি আছে সাদা, গোলাপি, আকাশী, নীল, খাকি রংও। স্কিনি জিনস দুই ধরনের ছাঁটে পাওয়া যাচ্ছে। একটির নিচের দিকে বেলবটমের মতো ছাঁট আছে। আর হাঁটুর ওপরের অংশ একদম আঁটসাঁট। একে স্কিনি ফিট বেলবটম বলা যায়। অন্যটির পায়ের নিচের দিকটি চুড়িদার সালোয়ারের মতো চাপা। একে ‘ন্যারো শেপ’ও বলা হয়।
এটাই বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কিছু জিনসে ভাঁজ ভাঁজ করা থাকে, একে ক্রেপ বলা হচ্ছে। আবার কিছু থাকছে মসৃণ। মেয়েদের জিনসগুলোয় বৈচিত্র্য আনতে ব্যবহার করা হচ্ছে এমব্রয়ডারি। দেওয়া হচ্ছে চুমকি, বোতাম, নানা ধাতব অলংকরণ।

মানানসই পাদুকা
কথায় আছে, সাজ পরিপূর্ণ হয় জুতা ও ব্যাগে। পোশাকের সঙ্গে পাদুকা জোড়া না মিললে সবই বৃথা। জিনসের এ কাটের সঙ্গেও তাই দরকার উপযুক্ত জুতা। এ প্রসঙ্গে মাহিন খান জানান, হাই হিল বা স্টিলেটো নয়, বরং প্ল্যাটফরম ও ফ্ল্যাট জুতাই স্কিনি জিনসের সঙ্গে মানানসই। ফ্ল্যাট পাম্প শুর সঙ্গে স্কিনি জিনস পরলে শীতে পা দুটোকে বাড়তি উষ্ণতাও দেয়া যাবে।

শীতে লম্বা ফতুয়া
জিনস প্যান্টের সঙ্গে দেশীয় কামিজ বা ফতুয়া পরে তৈরি করা যায় ফিউশন স্টাইল। অন্যদিকে টপস বা শার্ট পরে নিলেই পুরোপুরি পাশ্চাত্যের ভাব চলে আসবে। পাতলা সোয়েটারও মানাবে ভালোই। এই শীতের জড়সড় ভাব কাটিয়ে তুলুন রঙের বাহারে এবং কোর্তা, শার্ট কিংবা গেঞ্জির রং হোক ঝলমলে। বেছে নিন লাল, গাঢ় সবুজ, কমলা, ম্যাজেন্টা প্রভৃতি রং। তবে কোর্তা কিংবা পরিধেয় শার্টটি একটু লম্বা হতে হবে। যাকে বলে কিনা এম্পায়ার লেন্থ। মাহিন খান জানান, কোমরে কুচি দেওয়া টপস এই শীতে ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হিসেবে কাজ করবে।

জিনসের যত্ন
জিনসের মূল কথাই হলো, রাফ অ্যান্ড টাফ। তাই খুব যত্নের সঙ্গে দেখভালের প্রয়োজন নেই। তবে ধোয়ার সময় ঠান্ডা পানিতে ধোয়া উচিত। রোদে শুকানোর সময় উল্টো করে শুকাতে দিন। রং যদি উঠে যায়, তবে ড্রাই ক্লিন করাতে পারেন।

বাজারদর
একস্ট্যাসি: কালো, ডেনিম ব্লু, ব্লু নীল রঙের স্কিনি জিনস পাওয়া যাচ্ছে এখানে। দাম ১৪৮০-২৭০০ টাকার মধ্যে।
ওয়েসটেকস: এক্সক্লুসিভ স্কিনি জিনসগুলো পাওয়া যাচ্ছে ২০৫০ টাকায়। এ ছাড়া সাধারণ ডিজাইনের পাওয়া যাবে ৮৯৫ টাকায়।
ইয়েলো: সাদা, গোলাপি, খাকি, আকাশি নীল, বেগুনি রঙের জিনসগুলো পাওয়া যাবে ১২০০ টাকায়।
বঙ্গবাজার: ২০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যেই জিনসের প্যান্টগুলো পাবেন এখানে। তবে দরকার হবে তুখোড় দামাদামি করার গুণ। এখান থেকে প্যান্ট কিনলে অবশ্যই দোকানের কার্ড নিয়ে নেবেন। পরার পর প্যান্ট ফিট না হলে বদলাতে পারবেন।
বদরুদ্দোজা সুপার মার্কেট: ঢাকা কলেজের উল্টো দিকে বদরুদ্দোজা সুপার মার্কেটে স্কিনি জিনস পাবেন ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। জিনসের কাটে অনেক বৈচিত্র্য আছে।

0 comments:

Post a Comment