RSS

Tuesday, September 8, 2009

একনজরে এবারের ফ্যাশনধারা

"" শাড়ি-কামিজ সব ধরনের পোশাকে লেসের ব্যবহার।
"" ব্লক, হাতের কাজ, অ্যাপলিক যা-ই হোক না কেন, মোটিফ হিসেবে ফুলেল নকশাই বেশি ব্যবহূত।
"" কামিজের হাতা থ্রি কোয়ার্টার বা ম্যাগি স্িলভ। গলা হাই কলার।
"" ওড়নায় স্বচ্ছতা আনতে মসলিন ও হাফ সিল্ক।
"" শাড়িতে কয়েক ধরনের প্যাচওয়ার্ক।
পাঞ্জাবিতে একছাঁট।
"" ক্যাপ্রির সঙ্গে বৈচিত্র্যময় টপ পরবেন কমবয়সী মেয়েরা।
"" গয়নায় পুরোনো নকশা, পাথর ও অক্সি-রুপার ব্যবহার।
"" চলবে অ্যান্টিক রঙের মাঝারি হিলের জুতা।
"" পর্দায় এসেছে মসলিনের ব্যবহার। ডিনার সেটে টেরাকোটা আর কার্পেটের বদলে শতরঞ্জি চলবে।
"" মেকআপে ম্যাট লুক। চুলে ব্যাংস, স্লাইস, বব কাট।

ঈদবাজারে সবার আগে কেনাকাটা হয় শিশুদের। তাই তাদের ফ্যাশনটা জানা থাকা চাই সবার আগে। এবারের ঈদ একটু গরম গরম সময়ে পড়েছে। তাই শিশুর পোশাক বাছাই করতে গিয়ে সবাই গুরুত্ব দিচ্ছে আরামদায়ক কাপড়কেই। অনেকে আবার মা-মেয়ে এবং বাবা-ছেলে একই ধরনের পোশাক কিনছে। ফ্যাশন ডিজাইনার মাহিন খান জানালেন, এবার মেয়েশিশুরা সালোয়ার-কামিজ বা ঘাগড়াটাকেই বেশি পছন্দ করছে। এ ধরনের পোশাকে হাতের কাজ, লেস, টারসেলের ব্যবহারটাও শিশুদের কাছে বেশ প্রিয় হয়ে উঠেছে। আছে পোশাকের সঙ্গে ব্যাগ, চুলের ব্যান্ড−এ ধরনের বাড়তি সংযোজনও। ছেলেদের পাঞ্জাবিতে রয়েছে অনেক বেশি রং আর রংবেরঙের বোতামের ব্যবহার। মেয়েশিশুরা হাঁটলে পোশাকটা অনেক বেশি নড়বে−এমন পোশাকই বেশি পছন্দ করছেঅনেকে। বাজার ঘুরে দেখা গেল, মেয়েদের সালোয়ার-কামিজে এবারের ঝুলটা খাটো হলেও তা বেশি নয়; বরং দৈঘ্যৃটা ৩৮ বা ৪০ ইঞ্চি পর্যন্তই। স্ট্রেইট কাটটাই বেশি চলছে। কামিজে এমব্রয়ডারি করানো এখন বেশ চলতি ফ্যাশন। তবে কেউ হাতের কাজের আর কেউ মেশিন এমব্রয়ডারিটাই বেশি পছন্দ করছে। সেই সঙ্গে রয়েছে কামিজে লেসের ব্যবহার। সিল্ক, অ্যান্ডি সিল্ক, ধুপিয়ান ও বলাকা সিল্কের কামিজই বেশি চলছে। তবে এসব কামিজের সঙ্গে মসলিন বা হাফ সিল্কের ওড়না বেশি ব্যবহূত হচ্ছে। কে ক্র্যাফটের প্রধান নির্বাহী শাহনাজ খান জানালেন, দামি কাপড়ের কামিজ ও স্বচ্ছ ওড়না এখনকার ফ্যাশন।
বেনারসি, কাতানের প্যাচে লেসের ব্যবহার তো রয়েছেই−জানালেন বিবিয়ানার লিপি খন্দকার। কামিজে থ্রি কোয়ার্টার হাতা অথবা ম্যাগি হাতার ব্যবহারটাই সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে সালোয়ারের কাটে বৈচিত্র্য। ঈদ উপলক্ষে দেখা গেল, বাজারজুড়ে সালোয়ারের ডজনখানেক ডিজাইন। পাতিয়ালা, নিচে চাপা, চোস্ত, চুড়িদার মিলিয়ে কয়েক ধরনের ডিজাইন।
ঈদটা একটু গরমকালে বলে সবাই এখন কাপড় কিনছেন আরামদায়ক দেখে। শাড়ির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি চলছে সুতি ও অ্যান্ডি শাড়ি। কখনো বুনন-বৈচিত্র্যে চমৎকার সব শাড়ি, আবার কখনো কখনো এমব্রয়ডারি, হাতের কাজ, অ্যাপলিক বা ব্লক-টাইডাই করা শাড়িই বেশি বিক্রি হচ্ছে। আবার একটু উচ্চ দামের ক্ষেত্রে সবাই পছন্দ করছে কোটা, মসলিন, লেস ও নেটের শাড়ি। জমকালো ভাব এবং গরমে আরামের বিষয়টা রয়েছে বলে সবাই পছন্দ করছে এ ধরনের শাড়ি। তবে সিল্ক, মসলিন বা নেটের শাড়িতে ব্যবহূত হচ্ছে অ্যাপলিক, লেস, পাত্তি ও এমব্রয়ডারি। এমব্রয়ডারি ও প্যাচওয়ার্ক চলছে পাল্লা দিয়ে। শুধু শাড়ি নয়, ব্লাউজের অলংকরণও হয়ে উঠেছে আকর্ষণীয়। সবাই নানা ফেব্রিকে তৈরি করছে নানা ধরনের ব্লাউজ।
কমবয়সী মেয়েদের কাছে এবার দারুণ জনপ্রিয় ক্যাপ্রি। সেই সঙ্গে পরা হবে নানা কাটের টপ।
কলির পাশাপাশি এবার ছেলেদের পাঞ্জাবিতে বেশ চলছে একছাঁটের ব্যবহার। সেই সঙ্গে একটু শৌখিন যারা, তাদের পছন্দ আবার শেরোয়ানি, আচকান কাটের পাঞ্জাবি। ফেব্রিক ও কাটিংয়ের দিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। অনেকে বেশি কাজ করা পাঞ্জাবির চেয়ে ফিনিশিংয়ের দিকেই বেশি মনোযোগী। পায়জামা, চুড়িদারের পাশাপাশি আলিগড়ি পায়জামার ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। পায়জামার মাপটা ২০ থেকে ২২ ইঞ্চির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। লম্বা পাঞ্জাবি অনেকেই পরবেন। তবে তরুণদের পছন্দ খাটো পাঞ্জাবি। ফতুয়া সবাই কমবেশি পরবে। তবে ফর্মাল শার্ট যারা পরবে, তারা স্ট্রাইপ ডিজাইনই বেশি পছন্দ করছে।
পোশাকের পাশাপাশি গয়নার ব্যবহারেও এবার একটু বড় কানের দুলের ব্যবহার দেখা যাবে। সেই সঙ্গে রুপা ও অক্সিডাইজের গয়না চলবে খুব বেশি। পাথরের সঙ্গে গোল্ড প্লেটেড গয়নার ব্যবহার বেশ দেখা যাবে। যারা একটু কম বয়সী, তারা পুঁতির গয়নাটাই বেশি পছন্দ করবে। ব্যাগ হিসেবে সবারই পছন্দ ক্লাচ। আর স্যান্ডেলে একটু মাঝারি হিল সবার জন্যই ভালো লাগবে। সেই সঙ্গে চলবে ফ্ল্যাট স্যান্ডেলও। স্যান্ডেলে ভালো লাগবে কপার রংই। মেকআপে এবারের ট্রেন্ড হালকা মেকআপ। ম্যাট লুকটাই বেশি চলবে বলে জানালেন কানিজ আলমাস খান। চোখের মেকআপে বেইজ, মভ রংটা বেশি ভালো লাগবে। একইভাবে লিপস্টিকেও ব্যবহার করতে হবে হালকা রং ও ম্যাট লিপস্টিক। মাশকারা, আই লাইনার দিয়েই দিনের বেলা মেকআপ করলে ভালো লাগবে। রাতে একটু গাঢ় মানে স্েনাকি মেকআপ ভালো লাগবে। রাতে চাইলে গ্লসি লিপস্টিক লাগানো যেতে পারে। এই সময় মেকআপ যত হালকা হবে, তত ভালো। চুলের কাটে ভলিউম, ব্যাংস কাট, স্লাইস কাট, বব কাট খুব চলছে। সেই সঙ্গে চুল বাঁধার ক্ষেত্রে থাকছে ফ্রেঞ্চ রোল, পনিটেল।
ঘর সাজানোয় ঈদের সময়টা এক বিরাট উপলক্ষ। আর ঘর সাজাতে গত কয়েক বছরের মতো এবারও চলছে দেশজ উপাদানে সাজানোর ট্রেন্ড। সেই ট্রেন্ডে যোগ হয়েছে মসলিনের পর্দা। নেটের বা লেসের পর্দার পরিবর্তে স্বচ্ছতার জন্য মসলিনের পর্দা বেশ জনপ্রিয়। কুশন কভার, ম্যাট, বিছানার চাদরে অ্যাপলিকের কাজ বেশ জনপ্রিয়। ব্লকের সামগ্রীও কিনছে সবাই। মাটির ডিনার সেট আর কাঠের চামচের ব্যবহার কিন্তু বেশ ফ্যাশনেবল হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে বাঁশের প্লেসমেটও ব্যবহূত হচ্ছে খাবার টেবিলে। ঘরের দরজার ওপর নকশিকাঁথার ঝুল কিন্তু বেশ উৎসব-উৎসব ভাব আনছে। সেই সঙ্গে রং মিলিয়ে শতরঞ্জিও যেন ঘরের সঙ্গে ঈদকে রাঙাবে শত রঙে। সব মিলিয়ে বাজার যাচাই করে দেখা গেল, পোশাক-আশাক বা ঘর সাজানো যা-ই হোক না কেন, মূল ধারা দেশীয় পণ্য ব্যবহারের দিকেই।

0 comments:

Post a Comment