RSS

Monday, March 28, 2011

দ্রুত জীবনযাপনে মানিয়ে নিন

নাহিয়ানের অফিসে জরুরি মিটিং। এরমধ্যেই কাজের লোক ডুব মেরেছে। এ দিকে স্বামী মুসাহিদকেও পেঁৗছতে হবে এয়ারপোর্টে। তার প্যাকিং, খাবার সবই বাকি। কোনোরকমে রান্না সেরেই সুটকেস গোছানো, তার পরেই সারাদিন ধরে ছুটে চলা শুধু। এই পরিস্থিতিটা এখন সবারই চেনা। সারাদিন ঊধর্্বশ্বাসে দৌড়াতে দৌড়াতে আমরা সবাই দিশেহারা। এক এক সময় মনে হয়, ডেডলাইন মেনটেন করাই আমাদের জীবনের মূল বা প্রধান লক্ষ্য। এর ফলাফল? ডিপ্রেশন আর হেরে যাওয়ার যন্ত্রণা। ডিপ্রেশন আর স্ট্রেস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রয়োজন কিছু পস্নানিংয়ের।

পস্ন্যান করে রাখুন

জীবন যদিও সবসময় পস্ন্যান অনুযায়ী চলে না। তারপরও যতটা সম্ভবত পস্ন্যান করে চলুন_এক বছর পরে নিজেকে কোনো জায়গায় দেখতে চান। পুরো পরিবারের সাথে বেড়াতে যাবেন। সবই পস্ন্যান করে রাখুন। এতে করে বাড়িত চাপ থেকে মুক্তি পাবেন। কখনও শেষ মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করবেন না। অফিস এবং বাসার কাজ সমান ভাগে ভাগ করে নিন। প্রতিদিন রাতে পরের দিনের কাজের লিস্ট তৈরি করুন। পরের দিন সেই লিস্ট মিলিয়ে কাজ করুন। ভুলে যাওয়ার বা কোনো কাজ মিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

নিজেকে প্রকাশ করুন

দুঃখ বা রাগ কখনোই চেপে রাখবেন না। যার উপর রাগ হয়েছে বা যার জন্য দুঃখ পেয়েছেন, তাকে বলতে না পারলেও কাছের মানুষদেরকে বলে ফেলুন। মানসিক কষ্ট থেকে মুক্তি পাবেন এবং রাগ বা দুঃখও কমে যাবে। ঠিক তেমনি ভালোবাসা প্রকাশ করতেও দ্বিধাবোধ করবেন না। ছোটখাটো ঘটনার মাধ্যমে ভালোবাসা প্রকাশ করুন। দেখবেন, আপনার ভালো লাগবে।

প্রায়োরিটি সেট করুন

বেশি কাজের চাপে দিশেহারা হয়ে যাবেন না। কাজের চাপ সবসময় থাকবেই। নিজেই নিজের প্রায়োরিটি সেট করুন। কোন কাজটা আগে করতে হবে, তা ঠিক করে নিন আপনি। মাথা ঠান্ডা করে কাজ ভাগ করুন। বাসার কাজও একইভাবে করুন। মনে রাখাবেন, আপনার একটা লিমিটেশন আছে। এমন কোনো লিস্ট তৈরি করবেন না, যেটা আপনার পক্ষে পূরণ করা অসম্ভব।

সবকিছু লিখে রাখুন

সারাদিনের নানা ধরনের কাজের সবকিছু মনে রাখা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। তাই যাই ঘটুক, ঘটনাটা লিখে রাখুন। পরবর্তীকালে কোনো সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে চাইলে মনে করতে পারবেন, কেন সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। প্রতিদিন সম্ভব না হলে সপ্তাহের শুরুতে বাসার কাজ আর অফিসের কাজের দুটো আলাদা আলাদা চেকলিস্ট বানিয়ে নিন। কাজ শেষ হলেই পেন্সিল দিয়ে কেটে দিন। সব কাজ ঠিকমতো শেষ হলে নিজেকেই ছোট্ট একটা প্রাইজ দিন। এভাবেই ছোট ছোট লক্ষ্য পূরণ করতে করতে আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠবে।

নিজেকে সময় দিন

যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন, নিজের জন্য সময় বের করে নিন। অন্তত আধা ঘণ্টা নিজের সঙ্গে কাটান। আপনার পছন্দের বই পড়-ন, গান শুনুন। মেডিটেশনও করতে পারেন। সব কাজ ভুলে, এই সময় একটু অন্যরকম কিছু করুন, অন্যরকম কিছু ভাবুন। রূপচর্চাও করে নিতে পারেন এই সময়ে। বাসার সবাইকে এটা বোঝান যে, আপনারও নিজের জন্য একটু সময় প্রয়োজন।

ভালো করে ঘুমান

ঘুমানোর সময় আপনার আমার ব্রেন সারাদিন কাজ করার পর রিলাক্সা করে। ভালো করে না ঘুমালে কাজ করার উৎসাহ চলে যায়। তাই প্রতিদিন ভালো করে ঘুমান। অনবরত লেট লাইট করতে থাকলে কনসেনট্রেশনেরও অভাব দেখা যায়। চেহারাতেও প্রভাব পড়ে এর। ঘুম খুবই জরুরি বলিরেখা আর ডার্ক সার্কেল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। প্রতিদিন চেষ্টা করবেন নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে যাওয়ার। সব সময় মনে রাখবেন, কম ঘুমানো মানে আপনি নিজেই নিজের ক্ষতি করছেন।

অযথা ওষুধ খাবেন না

স্ট্রেস কমানোর জন্য ওষুধ খাবেন না। এই ধরনের ওষুধের নানা ধরনের পাশর্্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। একবার অভ্যাস হয়ে গেলে পরে এই ওষুধগুলো ছাড়া খুব কঠিন হয়ে যায়। তাই, এই ধরনের ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ওষুধের উপর নির্ভরশীল হয়ে বাঁচবেন না।

পজিটিভ চিন্তা করুন

সুখী ভবিষ্যতের ছবি ভিজু্যয়ালইজ করলেও স্ট্রেস অনেক কমে যায়। সবসময় পজেটিভ চিন্তা করুন। নিজেকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভবিষ্যতের সুখ স্বপ্নে ডুবিয়ে রাখুন। নিজের চিন্তাভাবনার উপর নিয়ন্ত্রণ আনুন।

নিজেকে ভালো রাখুন

প্রতিদিন সকালে উঠে নিজেই নিজেকে বলুন 'আমি ভালো আছি' আমি ভালো থাকবো। দৃঢ় বিশ্বাস এবং ইচ্ছাশক্তির উপর নির্ভর করে বলা এই কথাগুলো আপনাকে নতুন সাহস জোগাতে সাহায্য করবে।

0 comments:

Post a Comment