RSS

Monday, March 28, 2011

মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি

মাঝরাতে হঠাৎ বুকে ব্যথা উঠল, বাড়ির বয়স্ক মানুষটি পড়ে গেলেন পা পিছলে কিংবা খেলতে গিয়ে বাচ্চা বাসায় ফিরল হাত-পা কেটে_এই ধরনের জরুরি অবস্থা কমবেশি দেখা দেয় সব পরিবারেই। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। এ রকম বিপদের মুহূর্তে নার্ভাস না হয়ে ইমার্জেন্সি হ্যান্ডলিংয়ের খুব জরুরি গাইডলাইন নিচে দেওয়া হলো।

কাটাছোঁড়া

০০ শরীরে কোনো অংশ কেটে রক্তপাত হতে শুরু করলে, প্রথমে পরিষ্কার কাপড় কিংবা পেপার ন্যাপকিন ভাঁজ করে ৫-১০ মিনিট জায়গাটা চেপে ধরে থাকুন।
০০ রক্ত পড়া বন্ধ হওয়ার পর একটা স্টেরিলাইজড কটন নিয়ে তাতে অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড দিয়ে ইনজুরি ও তার আশাপাশের অংশ ভালোভাবে পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে নিন।
০০ দশ মিনিট চেপে ধরে রাখার পরও রক্ত পড়া বন্ধ না হলে, আর দেরি না করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
০০ কাটা বা ছেঁড়া যেরকমই হোক না কেন, একবার ডাক্তার দেখিয়ে নিন। কারণ, আন্টি টিটেনাস ইন্জেকশন দিতে হতে পারে।

মাসল স্প্রেন

০০ আঘাত পাওয়ার সাথে সাথে কারও সাহায্য নিয়ে অথবা লাঠি জাতীয় কিছুতে ভর দিয়ে একটু উঁচু কোনো জায়গায় বসুন। কারণ, শরীরের মচকানো বা টান লাগা অংশে কোনো ধরনের চাপ দেওয়া বিপজ্জনক।
০০ আইস প্যাক বা পস্নাস্টিকের ব্যাগে কয়েক টুকরো বরফ ভরে আস্তে আস্তে ব্যথার জায়গায় কম্প্রেস করতে থাকুন। এ সময় নড়াচাড়া করবেন না।
০০ ব্যথা কমানোর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

বুক ব্যথা

০০ বুকে ব্যথা, নিঃশ্বাসের কষ্ট, ঘাম হওয়া, বমিভাব, গলার ঘাড়ে ব্যথা এবং মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ দেখা দিলেই প্রথমেই প্রেসক্রাইবড ডাক্তারের সঙ্গে ফোনে পরামর্শ করে একটা অ্যাসপিরিন চিবিয়ে খেয়ে নিন।
০০ রোগীর মাথায়, পিঠে বালিশ দিয়ে আধা শোয়া রেখে, জামা-কাপড় আলগা করে দিন, যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে।
০০ অ্যাম্বুল্যান্সকে খবর দিন, অ্যাম্বুল্যান্সের কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিন যে, পেশেন্টের বুকে ব্যথা হচ্ছে, যাতে তারা অক্সিজেনের সিলিন্ডার বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় ইকু্যইপমেন্ট নিয়ে আসতে পারেন।
০০ ভেজা কাপড় দিয়ে রোগীর কপাল, গলা, ঘাড়, মুখ হালকা হাতে মুছে দিতে থাকুন।
০০ বুকে ব্যথা হওয়ার সময় যদি একা থাকেন, তা হলে সাহায্য না আসা পর্যন্ত জোরে জোরে কাশতে থাকুন। বুক ভরতি করে নিঃশ্বাস নিয়ে একটু জোর দিয়ে কাশতে চেষ্টা করুন। এই কাশির সাহায্যে হার্টে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে।

অ্যাজমা

০০ রোগীকে শিরদাঁড় সোজা করে বসান
০০ ইনহেলার দিয়ে রোগীকে পাফ নিতে বলুন দুই থেকে চার বার। প্রত্যেকটি পাফের মধ্যে রোগীকে চারবার নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ দিন।
০০ যদি চারবারে অ্যাসমার টান না কমে তা হলে আরও চারবার পাফ করুন।
০০ রোগীর অবস্থার পরিবর্তন না হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অ্যাম্বুলান্সকে খবর দিন।

জ্বর

জ্বর হলে রোগীকে ঠান্ডা জায়গায় রাখুন। রোগী যদি অস্বস্তিবোধ না করে, তা হলে ঘরে ফ্যান বা এসি চললেও ক্ষতি নেই।

০০ সুতির হালকা কাপড় পরিয়ে রাখুন। গলায় বা কানে ব্যথা থাকলে পাতলা সুতির ওড়না জড়িয়ে রাখুন।
০০ প্রচুর পরিমাণে পানি, গস্নুকোজ বা হালকা সু্যপ খাওয়ান। শরীরে বেশি মাত্রায় ফ্লুইড থাকা খুবই জরুরি এই সময়ে। কম তেল, মসলা দেওয়া হালকা খাবার খাওয়ান, প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বন্ধ করবেন না।
০০ জ্বর বেশি বাড়লে কপালে জলপট্টি দিন। তবে একনাগাড়ে ১০-১৫ মিনিটের বেশি দেবেন না।
০০ ডাক্তারের পরামর্শে প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষুধ খাওয়াতে পারেন। আধা ঘণ্টা অন্তর অন্তর টেম্পারেচর মনিটর করুন।
০০ কিন্তু জ্বর যদি এরপরও না কমে তা হলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
০০ শরীরে র্যাশ। ভুল বকা, ডায়রিয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।

ডিহাইড্রেশন

০০ রোগীকে ঠান্ডা জায়গায় রাখুন। খুব অল্প করে ১০-১২ ঢোক পানি খাওয়ান। একবারে অনেক পানি খাওয়াবেন না।
০০ ১ লিটার পানিতে ৩ টেবিল চামচ চিনি এবং ১ চামচ লবণ মিশিয়ে আস্তে আস্তে খাওয়াতে থাকুন ৫-৬ ঘণ্টা পর্যন্ত। স্যালাইন মেশানো পানিও খাওয়ান।
০০ ঠান্ডা পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে মুখ, ঘাড় হাত, পা স্পঞ্জ করে দিতে থাকুন। স্প্রেয়ার দিয়ে মুখে পানি ছিটিয়ে দিলেও রোগী আরাম পাবেন।

দাঁত ব্যথা

০০ হালকা গরম পানিতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে কয়েকবার ভালো করে কুলকুচি করে নিন, যাতে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবারের কণাগুলো বের হয়ে যায়।
০০ স্টেরেলাইজড তুলোতে ক্লোভ ওয়েলে ডুবিয়ে, যেখানে ব্যথা সেখানে কিছুক্ষণ চেপে রাখুন।
০০ মাড়ি ফুলে উঠলে রুমালে বরফ নিয়ে ব্যথার জায়গায় কম্প্রেস করুন। ফোলা কমে যাবে।
০০ ব্যথা কমানোর জন্য পেইনকিলার খান।

মাছের কাঁটা ফোটা

০০ ভাত চটকে মেখে দলা পাকিয়ে গিলে খেয়ে ফেলুন। কাঁটা সরে যাবে।
০০ গলায় ফোঁটা কাঁটা যদি নড়াচড়া করতে থাকে বা যদি ফুটে থাকা কাঁটার জন্য নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তা হলে তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখান।

অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

০০ রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে সাপোর্ট দিয়ে শুয়ে দিন
০০ রোগীর মুখে আস্তে আস্তে পানির ছিটা দিন
০০ ১-২ মিনিটের মধ্যে জ্ঞান ফিরে না আসলে ডাক্তারকে কল করুন

কাছে রাখুন >>

০০ ফার্স্ট এইড বক্স (নানান সাইজের স্টেরিলাইড ব্যান্ডেজ, কাঁচি, স্টিকিং পস্নাস্টার, লিকুইড অ্যান্টিসেপটিক, স্টেরিলাইজড কটন, থার্মোমিটার, অ্যাসপিরিন, অ্যান্টাসিড ইত্যাদি।)
০০ হেলথ ইন্সু্যরেন্সের কার্ড এবং কাগজপত্র
০০ ওষুধের দোকানের ফোন নাম্বার
০০ ফ্যামিলি ডাক্তারের ফোন/মোবাইল নাম্বার
০০ হসপিটালের ফোন নাম্বার।

0 comments:

Post a Comment