RSS

Tuesday, July 21, 2009

স্টাইল ঝোলা

যুগটাই এখন ফ্যাশন আর স্টাইলের। পোশাক থেকে শুরু করে আদ্যপান্ত সবখানেই চলে হাল ফ্যাশনের হাতাহাতি। কোথায় নেই ফ্যাশন! শার্টের বোতাম থেকে শুরু করে জুতো বাধার ফিতা, নখের গয়না থেকে শুরু করে চুলের হাইলাইট। ফ্যাশনের এই দুরন্তপনায় অনেক প্রয়োজন আজ স্টাইল আয়োজন। এমনই একটি অনুষঙ্গ হলো ব্যাগ। প্রয়োজন মিটিয়ে এই অনুষঙ্গটি এখন বেশী থেকে বেশী ফ্যাশন আয়োজন। কখনো কাঁধ ঝোলা আবার কখনো স্কিনি জিন্সএর ফাঁকে আটসাট। ব্যাগের এই নানান কীর্তি নিয়েই আমাদের এ সংখ্যার স্টাইলের দুনিয়া লিখেছেন এমএইচ মিশু

মূলত জিনিসপত্র বহনকে সহজতর করতেই ব্যাগের আবিস্কার। একটা পুটুলি আকৃতির এই ব্যাগে একসাথে অনেক জিনিস সহজে বহন করা যায়। সাইজ আর আকৃতি অনুসারে এর দাম ওঠা নামা হয়ে থাকে। কিন্তু হালের ব্যাগগুলো আর জিনিসপত্র বহনে ব্যবহৃত নয়। এটি পুরোপুরি একটি স্টাইল অংশ। এখন ব্যাগের দাম উঠা নামা করে এর ডিজাইন আর তৈরির উপকরণ ভেদে। তবে ব্যাগের জন্ম লগ্নে এর তৈরি উপকরণ ছিল কাগজ। ধারণা করা হয় চীন দেশে চা পাতার স্বাদ ও গন্ধ অটুট রাখতেই কাগজের তৈরি এধরনের ব্যাগ ব্যবহার করা হতো। আর সেখান থেকেই ব্যাগ নামক বস্তুটি মানব জাতির সাথে একাত্ম হয়।

ব্যাকপ্যাক

পিঠে বেঁধে রওনা হয়ে যাওয়া এক ধরনের ব্যাগকেই বলে ব্যাকপ্যাক। আমাদের দেশে স্কুল বা কলেজ পড়ুয়া ছেলে মেয়েদের কাঁধে বই ভর্তি এই ব্যাকপ্যাকের দেখা পাওয়া যায়। সেই সাথে অনেকে বেড়াতে গেলেও এধরনের ব্যাগ ব্যবহার করে থাকেন। যারা মধুচন্দ্রিমা বা ভ্রমণে অভ্যস্থ, তাদের কথা ভিন্ন। কিন্তু অনেকেই আমাদের দেশে এখন ব্যাকপ্যাক নিয়েই বেড়াতে যেতে পছন্দ করেন। এধরনের ব্যাগের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটা আটসাট হয়ে শরীরের সাথে ঝুলে থাকে। এই ব্যাগে স্টাইলের তুলনায় প্রয়োজনটাই বেশী মেটায়। তবে ইদানিং অনেক স্টাইলিশ ধরনের ব্যাকপ্যাক বাজারে এসেছে। পাশ্চাত্যের কায়দায় এসব ব্যাকপ্যাকে একাসাথে প্রয়োজনীয় সবকিছু নেয়া সম্ভব। হেভেলশেক নামে এই ব্যাকপ্যাকে এক কথায় লোটা কম্বল সবই আটবে সহজেই। এধরনের ব্যাগকে অনেক সময় র‌্যাকস্যাক, কন্যাপস্যাক, প্যাকস্যাক, বুকব্যাগ বলে থাকে। জিন্স, টিশার্ট এমন কিছু ক্যাজুয়াল ড্রেসের সাথেই ব্যাকপ্যাক ভাল লাগবে।

মিলার নট

এটা কিন্তু কোনো ব্যাগ নয়। এটা একধরনের বিশেষ বাধন। ব্যাগনট নামে জনপ্রিয় এই বাধন খুব সহজেই ব্যাগের মুখ আটকে রাখতে পারে। পাশাপাশি ব্যাগ যদি কোথাও বেঁধে রাখতে হয় তাহলেও এটি খুব কার্যকর। এই নটের উপর ভিত্তি করে বেশকিছু কাপড়ের ব্যাগ দেখতে পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের স্টাইলিশ কাপড়ে তৈরি এসব ব্যাগের মুখে থাকে মিলার নট। একটু ট্রাডিশনাল স্টাইলের এই ধরনের ব্যাগ আমাদের সাবকন্টিনেন্টেই বেশী জনপ্রিয়।

ম্যাসেঞ্জার ব্যাগ

হালের সবচেয়ে জনপ্রিয় আর স্টাইলিশ ব্যাগ হলো ম্যাসেঞ্জার ব্যাগ। কাধের একপাশ দিয়ে ঝোলানো এই ব্যাগ এখন হিপহপ স্টাইলের সনদ প্রাপ্ত। আর তাই জনপ্রিয়তাও এখন তুঙ্গে। তরুণ বয়সীদের কাছে এই ধরনের ব্যাগ খুবই জনপ্রিয়। ১৯৫০ সালে ডি মারটিনি গোব ক্যানভার প্রতিষ্ঠানটি প্রথম এই ধরনের ম্যাসেঞ্জার ব্যাগের প্রচলন ঘটায়। নিউইয়র্ক শহরে খুব ছোট্ট একটা দোকান নিয়ে পরিচালিত হতো এই মারটিনি গোব। তখন এই ব্যাগ বিক্রি হতো ২০ থেকে ৩০ ডলার দাম ধরে। এরপর ১৯৮০ সালে জন পিটার্সের ম্যানহ্যাটেন পোর্টেজ এ আসে আধুনিক ম্যাসেঞ্জার ব্যাগ। শুরুতে ম্যাসেঞ্জার ব্যাগ খুব বেশী কেতাদূরস্ত ভাবে তৈরি না হলেও ম্যানহ্যাটেন পোর্টেজ এই ব্যাগ বেশ আধুনিক আর স্টাইলিশ ভাব নিয়ে আসে। অনেকগুলো পকেট থাকায় ম্যাসেঞ্জার ব্যাগে সহজেই অনেককিছু গুছিয়ে নেয়া যায়। কাঁধের একপাশে ঝুলিয়ে রাখা যায় বলে হাত ফ্রি রাখা যায় এই ব্যাগ নিলে। যেটা বাইসাইকেল চালানো বা অন্যকিছু হাতে বহনের জন্য জরুরি। একসময় এই ধরনের ব্যাগে শুধু বইপত্র বা কাগুজে উপকরণ বেশী পরিবহন করা হলেও এখন কিন্তু ল্যাপটপ সহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক গ্যাজেটও এই ধরনের ব্যাগে বহন করা হয়ে থাকে। হিপহপ পোশাকের সাথে মানানসই এই ব্যাগ। কিন্তু চামড়ার তৈরি বেশ কিছু ম্যাসেঞ্জার ব্যাগ পাওয়া যায় যেগুলো পুরোদস্তুর ফরমাল। তার তাই ফরমাল ওয়্যারের সাথেও মানিয়ে যাবে ম্যাসেঞ্জার। মেয়েরা সালওয়ার-কামিজ, ফতুয়া ু জিন্স-শর্ট কামিজ, এসব পোশাকের সাথে ম্যাসেঞ্জার ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন।

টোটি ব্যাগ

আধুনিক নারীদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় এখন এই টোটি ব্যাগ। আকৃতিতে একটু বড় এই ব্যাগের হাতটা একটু ছোট হয়ে থাকে। আর সেই হাতলের ফাক গলিয়ে হাতে প্রবেশ করানোটাই এখন জনপ্রিয় ফ্যাশন। বিশ্বের অনেক দেশেই এই ব্যাগ খুব জনপ্রিয়। তবে আমাদের এই অঞ্চলে টোটি ব্যাগের প্রচলন আসে ব্যাংকক থেকে। ঢাকার বাজারে যেসব টোটি ব্যাগ দেখা যায় তার অধিকাংশই ব্যাংকক থেকে আমদানী করা। এই টোটি ব্যাগ সাধারণত কাপড় বা চামড়ার হয়ে থাকে। তবে এখন কৃত্রিম বিভিন্ন উপকরণেও তৈরি হয়ে থাকে। আমাদের দেশে ছেলেদের টোটি ব্যাগ জনপ্রিয় না হলেও উন্নবিশ্বে ছেলেদের জন্য বিভিন্ন ব্র্যান্ডের টোটি ব্যাগ তৈরি হয়ে থাকে। টোটি ব্যাগ তৈরিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হলো কোচ। আমাদের দেশে ট্রাডিশনাল কামিজের সাথে টোটি সবচেয়ে মানানসই। তবে জিন্স, ফতুয়া, টিশার্ট এসবের সাথেও টোটি চলে বেশ। একধরনের প্রিন্টেড লেদারের টোটি এখন জনপ্রিয় স্টাইল যা মানাবে শুধুই টিশার্ট কিংবা ফতুয়া সাথে জিন্স পড়লে। তবে টোটি কিন্তু চাইলে শাড়ির সাথেও মানিয়ে যাবে যদি রঙ আর আকৃতি ম্যাচ করে।

পার্টস

মেয়েদের জন্য পার্টস যেন না হলেই হয়। কিন্তু এই পার্টস-এর সজ্ঞা কিন্তু একেক সময় একেক রকম। অর্থাৎ আকারগত পার্থক্য খুব বেশী হওয়াতে অনেক সময় ছোট টোটি ব্যাগও কিন্তু পার্টস গোত্রাধীন হয়ে থাকে। আমার ভাজ করে প্যান্টের পকেটে রাখা যায় এমন ব্যাগও কিন্তু পার্টস। অনেকের ধারণা পার্টস শুধুই মেয়েদের জন্য। আসলে তা কিন্তু না। ছেলেদের মানিব্যাগ ও কিন্তু এক অর্থে এক ধরনের পার্টস। পার্টস হতে পারে পার্টি কিংবা ক্যাজুয়াল সবধরনের। শাড়ি কিংবা গর্জিয়াস কামিজের সাথে হাতে ম্যাচ করা ঝলমলে পার্টস না থাকলেই নয়।

0 comments:

Post a Comment