RSS

Tuesday, July 21, 2009

জীবন থেকে দূরে

মানুষের নিবিড় স্পর্শ আর পরিকল্পনার ছোঁয়ায় প্রকৃতিও যে নতুন করে জেগে উঠতে পারে তারই এক অনন্য সংস্করণ এই সময়ের ফয়’স লেক ও রিসোর্ট। চিরচেনা এই লেকের নতুন রূপ আর এখানে ঘুরে বেড়ানোর নানা দিক নিয়ে লিখেছেন রাশেদুল হাসান শুভ

প্রতিটি মানুষের জীবনই যেন একেকটা ছোটগল্প। এখানে আনন্দ থাকে। থাকে ব্যস্ততা আর দুঃখকাতরতার কথা। জীবন যেখানে প্রতিদিনের নানা কাজের মাঝে তার মুখরিত কলতান শোনে সেখানে জীবন থেকে পালিয়ে বাঁচার সুযোগ হয়তো কখনোই খুঁজে পাওয়া যায় না। তবু প্রতিদিনের ব্যস্ততায় হাঁপিয়ে ওঠা মানুষ নিজের জন্য একান্ত কিছু সময় বের করে নেয়ার তাগিদে বেরিয়ে পরে চেনা পৃথিবীর অচেনা কোনো কোণে। তবে শত কোলাহলের মাঝে সুন্দরের খোঁজ না করে যারা প্রকৃতি আর আধুনিকতার মেলবন্ধনে একান্ত কিছু সময় কাটাতে চান তাদের জন্যই যেন ভিন্ন এক হাতছানি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফয়’স লেক। এখানে একদিকে যেমন রয়েছে প্রকৃতির চিরচেনা সৌন্দর্য অন্যদিকে তেমনি রয়েছে ফয়’স লেক ড্রাই পার্ক, সি-ওয়ার্ল্ড আর নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য নান্দনিক এক রিসোর্ট।

মূলত কাজের ফাঁকে হঠাৎ মিলে যাওয়া অবসরটুকু যারা কাটাতে চান একান্ত নিজের মতো করে তাদের কথা ভেবেই একটু ভিন্ন ধাঁচে গড়ে তোলা হয়েছে গোটা ফয়’স লেক এলাকাটি। প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ লেক আর ৩৩৬ একর জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা পাহাড়ের মাঝেই গড়ে তোলা হয়েছে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, সি ওয়ার্ল্ড নামের একটি ওয়াটার পার্ক আর থাকার জন্য ফয়’স লেক রিসোর্ট। ফয়’স লেক এর মূল গেট দিয়ে ঢুকলে প্রথমেই চোখে পড়বে পরিকল্পিত একটি অ্যামিউজমেন্ট পার্ক যেখানে আধুনিক একটি থিম পার্কের সাথে মানানসই নানারকম রাইডের প্রায় সবগুলোই রাখা হয়েছে।

আর এই পার্ক ছাড়িয়ে আরো কিছুটা ভেতরে ঢুকলেই দেখা মিলবে সি ওয়ার্ল্ড এবং রিসোর্টে যাবার পথের। মজার বিষয় হলো, ফয়’স লেকের মূল অংশ থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্নভাবেই গড়ে তোলা হয়েছে ওয়াটার পার্ক ও রিসোর্টের অংশটি। ফলে এখানে যাবার জন্য ভ্রমণকারীদের চেপে বসতে হয় একটি ইঞ্জিন বোটে। লেকের মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতেই একসময় নৌকা ভেড়ে ফয়’স লেক রিসোর্টের ঘাটে। দূর থেকে দেখতে অনেকটা দূর্গের মতো মনে হলেও ফয়’স লেক রিসোর্টে রয়েছে আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা আর ওয়াটার পার্কে যখন খুশি ঘুরে বেড়ানোর স্বাধীনতা। সি-ওয়ার্ল্ড লাগোয়া এই রিসোর্টে মোট রুমের সংখ্যা ৩৮টি। আর লোকালয় থেকে অনেকটা দূরে গড়ে ওঠা এই রিসোর্টে একরাত থাকা, সকালের খাওয়া ও সি-ওয়ার্ল্ডের সবগুলো রাইড যতবার খুশি উপভোগ করার জন্য প্রয়োজন পড়বে ২৫০০ থেকে ৭০০০ টাকা। তবে যারা রিসোর্টে থাকার পরিবর্তে শুধুমাত্র ওয়াটার পার্কের রাইডগুলো উপভোগ করতে চান তাদের জন্য খরচ পড়বে বোটিং সহ প্রবেশ ও রাইড ৩৫০ টাকা এবং কর্ণেল হাট এর ওয়াক ওয়ে দিয়ে প্রবেশ ও রাইড ২৫০ টাকা। ফয়’স লেক রিসোর্টের নিরিবিলি পরিবেশে থাকার ক্ষেত্রেও দু’টি বিকল্প রয়েছে। সি ওয়ার্ল্ডের লেকভিউ রিসোর্টে থাকার পাশাপাশি যারা পাহাড় ভালোবাসেন তারা থাকতে পারেন রিসোর্টের হিলভিউ অংশেও। সবমিলিয়ে পাহাড়ঘেরা লেকের স্বচ্ছ পানি আর অন্যদিকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ওয়াটার পার্কের নানা সুবিধা নিয়ে বেড়ে ওঠা এই আধুনিক পর্যটন কেন্দ্রটি অবসর আর অবসাদ কাটানোর এক চমৎকার কেন্দ্র হিসেবেই গড়ে উঠেছে।যোগাযোগ : ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাবার পথে চট্টগ্রাম শহরে ঢোকার খানিকটা আগেই পড়বে ফয়’স লেকের এলাকা। এছাড়া চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো জায়গা থেকেও বাস কিংবা অন্যান্য মাধ্যমে সহজেই পৌঁছানো যাবে ফয়’স লেকে। অন্যদিকে যারা পিকনিক বা কনফারেন্সের জন্য ফয়’স লেক রিসোর্ট বুকিং করতে চান তারা যোগাযোগ করতে পারেন এই ঠিকানায় - কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্ট কো: লি:, ফয়’স লেক, খুলশী, চট্টগ্রাম। ফোন ০৩১-২৫৬৬০৮০।

0 comments:

Post a Comment