RSS

Tuesday, August 18, 2009

ইফতারে চাই

সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারে চাই মুখরোচক কিছু খাবার। আর সে জন্য ছোলা, পেঁয়াজু, হালিমের তুলনা নেই। তবে বাজার থেকে কেনা নয়, বাড়িতেই বানাতে পারেন এসব। দেখে নিন শাহানা পারভীনের দেওয়া রান্নাগুলো

সবজি পেঁয়াজু
উপকরণ: মসুর ডাল (মিহি করে বাটা) ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, কাঁচা মরিচ কুচি ১ চা চামচ, গাজর কুচি ২ টেবিল চামচ, লালশাকের পাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, বাঁধাকপি কুচি ২ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, বিটলবণ আধা চা চামচ, লবণ ও তেল প্রয়োজনমতো।
প্রণালী: বাটা ডালের সঙ্গে একে একে সব উপকরণ মিশিয়ে (শুধু তেল ও বিটলবণ ছাড়া) পছন্দমতো আকারে বড়া করে ডুবোতেলে ভেজে তুলুন। বিটলবণ ছিটিয়ে সবজি পেঁয়াজু পরিবেশন করুন।
ইফতারে তেলেভাজা খাবার তো খাওয়া হবেই। স্বাদবদলের জন্য চাই মিষ্টি খাবার ও ফলমূল। দেখুন কল্পনা রহমানের রান্নাগুলো
ঝটপট দইবড়া
উপকরণ: বেসন ২ কাপ, লবণ ১ চা চামচ, পাউরুটি ৮ টুকরা, কাঁচা মরিচ বাটা ১ চা চামচ, পানি পরিমাণমতো।
প্রণালী: বেসন পানি দিয়ে ঘন গোলা বানিয়ে খুব ভালোভাবে ফেটতে হবে। যখন ফুলে উঠবে, তখন বাকি উপকরণগুলো মেশাতে হবে। পাউরুটি গ্লাস অথবা ছোট কোনো গোল ছাঁচ দিয়ে কেটে নিতে হবে। এবার গোলায় ডুবিয়ে ফ্রাইপ্যানে ডুবোতেলে ভাজতে হবে।
একটি বাটিতে ৩ কাপ পানি ও ১ টেবিল চামচ লবণ দিয়ে গুলিয়ে ভাজা বড়াগুলো পানিতে ভেজাতে হবে। কিছুক্ষণ পর বড়াগুলো তুলে হাত দিয়ে চেপে পানি বের করে ডিশে সাজিয়ে রাখতে হবে। সব বড়া ভেজে ওপরে দই বড়ার গ্রেভি ঢেলে দিতে হবে। ২-৩ ঘণ্টা ভেজার পর তেঁতুলের সস দিয়ে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন।
দইবড়ার গ্রেভি তৈরি−উপকরণ: টক দই ১ কেজি, বিটলবণ পরিমাণমতো, চিনি ১ চা চামচ, জিরা ভাজা গুঁড়া আধা চা চামচ, পুদিনাপাতা বাটা ১ চা চামচ, পানি ১ কাপ, মরিচ ভাজা গুঁড়া আধা চা চামচ।
প্রণালী: ওপরের সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিলেই দইবড়ার গ্রেভি হয়ে যাবে।
তেঁতুলের সস−উপকরণ: তেঁতুলের রস ১ কাপ, ভাজা মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, চিনি ১ কাপ, ভাজা জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, লবণ আধা চা চামচ।
প্রণালী: ওপরের সব উপকরণ একসঙ্গে জ্বাল দিতে হবে। ঘন হয়ে এলে গ্রেভি তৈরি হয়ে যাবে।

পাকা পেঁপের লাচ্ছি
উপকরণ: দুধ ২ কাপ, টক দই ১ কাপ, পাকা পেঁপে ২ কাপ, বরফ কুচি ১ কাপ, বিটলবণ আধা চা চামচ, পুদিনাপাতা ১ টেবিল চামচ।
প্রণালী: ওপরের সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এবার গ্লাসে ঢেলে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন।

ফলের চাট
উপকরণ: পাকা কামরাঙা ২টা, আনার ১টা, পাকা পেঁপে ১ কাপ, কলা ২টা, কাবুলি চানা ১ কাপ, জাম্বুরার রস ১ কাপ, তেঁতুলের মাড় ১ টেবিল চামচ, চাট মসলা ১ টেবিল চামচ, চিনি ২ চা চামচ, লবণ আধা চা চামচ, শুকনা মরিচ ভাজা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, বিটলবণ সামান্য, ভাজা তিল ১ চা চামচ।
প্রণালী: কামরাঙা, পেঁপে ও কলা কিউব করে কাটতে হবে। চানাবুট লবণ দিয়ে ভালোভাবে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এবার সব উপকরণ জাম্বুরার রস দিয়ে মিশিয়ে ফ্রিজে রাখতে হবে ঠান্ডা না হওয়া পর্যন্ত। এরপর ভাজা তিল ওপরে ছিটিয়ে দিয়ে পরিবেশন।

আইসক্রিম কমলার পানীয়
উপকরণ: ঠান্ডা পানি ২ কাপ, কমলার রসের পাউডার ৪ টেবিল চামচ, চকলেট আইসক্রিম ১ কাপ, চিনি রুচিমতো, ঠান্ডা আনারসের রস ২ কাপ, লবণ একচিমটি।
প্রণালী: রসের পাউডার, আইসক্রিম, চিনি ও লবণ ব্লেন্ডারে নিয়ে পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে আনারসের রস মেশাতে হবে। এবার গ্লাসে ঢেলে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন।

জিলাপি
উপকরণ: ময়দা ২ কাপ, খাওয়ার সোডা সিকি চা চামচ, চিনির সিরা ১ কেজি, পানি পরিমাণমতো, তেল পরিমাণমতো।
প্রণালী: প্রথমে সিরা তৈরি করে ঠান্ডা করে নিতে হবে। সিরা যেন খুব ঘন কিংবা খুব পাতলা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
পানি ও ময়দা দিয়ে একটু নরম করে খামির তৈরি করে গরম জায়গায় ২৪ ঘণ্টা ঢেকে রাখতে হবে। এবার খাওয়ার সোডা দিয়ে জিলাপি বানাতে হবে। একটি মোটা কাপড় ছিদ্র করে খামির ঢেলে জিলাপি বানাতে হবে। বাদামি করে ভেজে ঠান্ডা সিরায় ভেজাতে হবে। রস ঢুকে গেলে তুলে গরম গরম পরিবেশন।
জিলাপি তাড়াতাড়ি বানাতে চাইলে ছানার পানি দিয়ে ময়দা মাখতে হবে। এই খামির দিয়ে ৫-৬ ঘণ্টা পরই জিলাপি বানাতে হবে।
তৎক্ষণাৎ জিলাপি বানাতে চাইলে ২ কাপ ময়দা ও ১ চা চামচ হাইড্রোজ দিয়ে মাখিয়ে আধা চা চামচ খাওয়ার সোডা মেশাতে হবে। এরপর জিলাপি বানাতে হবে।


বেগুনি
উপকরণ: বেগুন ২টি, লবণ সামান্য।
ব্যাটার তৈরি: বেসন ১ কাপ, ময়দা ২ টেবিল চামচ, বেকিং পাউডার ১ চা চামচ, আদা বাটা আধা চা চামচ, হলুদ গুঁড়া সামান্য, মরিচ গুঁড়া সামান্য, জিরা গুঁড়া সামান্য, লবণ স্বাদমতো, তেল ভাজার জন্য, পানি প্রয়োজনমতো।
প্রণালী: বেগুন বোঁটাসহ পাতলা করে কেটে নিয়ে লবণ মেখে রাখুন। এবার বেগুনের টুকরাগুলো ব্যাটারে ডুবিয়ে ডুবোতেলে ভেজে তুলুন। গরম গরম পরিবেশন করুন।

হালিম
উপকরণ-১: হাড়সহ গরুর মাংস ১ কেজি, তেল ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ২ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ২ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ২ চা চামচ, জিরা, ধনিয়া ও গরম মসলা প্রতিটি ১ চা চামচ করে, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালী: মাংস কেটে পরিষ্ককার করে ধুয়ে সব উপকরণ দিয়ে মেখে দুইবার কষিয়ে পানি দিয়ে যথেষ্ট নরম করে সেদ্ধ করে নিতে হবে।
উপকরণ-২: গম ১ কাপ, ছোলার ডাল আধা কাপ, মুগের ডাল আধা কাপ, মসুর ডাল সিকি কাপ, মটর ডাল আধা কাপ, মাষকলাই ডাল আধা কাপ, পোলাওয়ের চাল আধা কাপ, তেজপাতা ২টি, কাঁচা মরিচ কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, লেবু ১টি, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, হালিম মসলা ১ টেবিল চামচ, শুকনো মরিচ ২-৩টি।
প্রণালী: ডাল গরম তাওয়ায় ভেজে আধা ভাঙা করে ২-৩ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ডাল ও চাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন। সসপ্যানে পেঁয়াজ বেরেস্তা করে তুলে রাখুন। এবার এই সসপ্যানে ডাল, চাল ও গম দিন এবং বেশ খানিকটা পানি দিয়ে সেদ্ধ করুন। গম ও ডাল সেদ্ধ হলে এতে রান্না করা মাংস দিয়ে আরও কিছুটা পানি দিয়ে অল্প আঁচে ঢেকে রান্না করুন। মাঝেমধ্যে নাড়বেন। মাংস ও ডাল যখন সেদ্ধ ও ঘন হবে, তখন বেরেস্তা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ চুলায় রাখুন। বেরেস্তা, আদাকুচি, ধনেপাতা, হালিম মসলা, লেবুর রস ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

আলু-কাবুলি মসলা
উপকরণ: সেদ্ধ কাবুলি (ছোলাবুট) ২ কাপ, সেদ্ধ আলু (চারকোণা করে কাটা) ১ কাপ, আদা বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি আধা চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি দুই টেবিল চামচ, টমেটো কুচি ২ টেবিল চামচ, শসা কুচি ২ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, তেল ও লবণ প্রয়োজনমতো।
প্রণালী: আলু ও কাবুলি লবণ ও হলুদ দিয়ে প্রেসার কুকারে সেদ্ধ করে নিন। ফ্রাইপ্যানে ২ টেবিল চামচ তেল দিয়ে এতে পেঁয়াজ ও আদা দিন। একটু ভাজুন, আলু ও কাবুলি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভাজুন। তারপর একে একে কাঁচা মরিচ, টমেটো ও ধনেপাতা দিন। এক-দুই মিনিট নেড়ে চুলা থেকে নামিয়ে নিন। এরপর সালাদ ও লেবুর রস দিয়ে পরিবেশন করুন।

ভেলপুরি
উপকরণ: পুরির জন্য: ময়দা ২ কাপ, লবণ সামান্য, বেকিং পাউডার আধা চা চামচ, তেল ভাজার জন্য।
পুরের জন্য: আলু সেদ্ধ আধা কাপ, মটর ডাল সেদ্ধ ১ কাপ, কাঁচা মরিচ কুচি আধা চা চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, তেঁতুলের সস ১ টেবিল চামচ, চিনি ১ চা চামচ, চটপটি মসলা ১ চা চামচ, ভাজা জিরার গুঁড়া আধা চা চামচ, শসা কুচি ১ কাপ, লবণ স্বাদমতো, বিটলবণ সামান্য।
প্রণালী: পুরের উপকরণগুলো ভালো করে মেখে একটি পুর তৈরি করুন। এবার পুরির উপকরণ থেকে ময়দা, বেকিং পাউডার ও লবণ একসঙ্গে মিশিয়ে চালুনিতে চেলে নিন। ১ টেবিল চামচ তেল গরম করে ময়দার সঙ্গে ভালো করে মেখে নিন। প্রয়োজনমতো পানি দিয়ে ময়দা মেখে লেচি কেটে নিন। পছন্দমতো আকারে পুরি তৈরি করে ডুবোতেলে ভেজে তুলুন। প্রতিটি পুরি অর্ধেক করে কেটে এতে পুর ভরে দিন। তারপর শসা কুচি ও বিটলবণ দিন। ইফতারের সময় গরম গরম পরিবেশন করুন মজাদার ভেলপুরি।

0 comments:

Post a Comment