টুপির বাংলা আভিধানিক নাম হচ্ছে ‘শিরস্ত্রাণ’ বা মস্তকাবরণ। যার কাজ হচ্ছে ঠান্ডা ও গরম থেকে মাথাকে রক্ষা করা। টুপি বা ক্যাপ নিয়ে আগেও লেখা হয়েছে। তবে এবারের আয়োজন একটু ভিন্ন। এখানে ক্যাপ বা টুপি পরে ঠান্ডা ও গরম বাঁচানো নয়, শুধুই স্টাইল।
ষাটের দশকে কিউবার বিপ্লবী নেতা চে’ গুয়েভারা ক্যাপ পরে তরুণদের মধ্যে ক্যাপকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন, যা পরে আস্তে আস্তে সারা বিশ্বের তরুণদের একটা বিশেষ স্টাইল হয়ে দাঁড়ায়।
আজকাল অনেক তরুণকেই দেখা যায় নানা রং ও ধরনের ক্যাপ পরে ঘুরে বেড়াতে। কারও আবার পরার ধরনটাও একটু ভিন্ন। যেমন−সোজাভাবে না পরে উল্টো করে পরা। অর্থাৎ ঘুরিয়ে পরা, যেখানে ক্যাপের বোর্ডটা থাকে মাথার পেছন দিকটায়। কখনো কোনো সময় খেলাচ্ছলেই হয়তো কেউ এভাবে ক্যাপ পরে ছিল। পরে সেটাই ক্যাপ পরার একটা বিশেষ স্টাইল হয়ে দাঁড়ায়। সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুকে দেখা যায় এই উল্টো স্টাইলে ক্যাপ পরতে। আমাদের দেশে এভাবে ক্যাপ পরাটা আইয়ুব বাচ্চুর স্টাইল হিসেবেই তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয়। ক্যাপ প্রসঙ্গে আইয়ুব বাচ্চু বলেন, ‘প্রথমে ব্যক্তিগত কারণে ক্যাপ পরা শুরু করলেও এখন এটা শখ আর স্টাইল হয়ে গেছে।’ তবে তিনি শুধু একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডেরই ক্যাপ পরে থাকেন এবং সেই ব্র্যান্ডের নাম হচ্ছে ‘ক্যাঙ্গোল’। বিশ্বের প্রায় সব বড় শহরেই এই ব্র্যান্ডের শাখা রয়েছে। তবে আইয়ুব বাচ্চু কিউবা শহরের ক্যাঙ্গোলের শোরুম থেকেই ওগুলো সংগ্রহ করে থাকেন। তাঁর সংগ্রহে ক্যাঙ্গোলের প্রায় সব ধরনেরই ক্যাপ রয়েছে।
ক্যাপ বা টুপির স্টাইল প্রসঙ্গে এখানে সংগীতজগতেরই দুই সহোদরের নাম করা যেতে পারে, যাঁরা ক্যাপকে নিত্যসঙ্গী করে হয়ে গেছেন স্টাইলিশ। তাঁরা হলেন হামিন আহমেদ ও শাফিন আহমেদ। নানা ধরনের ক্যাপ ও টুপি পরে শাফিন আহমেদ অনেক আগে থেকেই তাঁর একটি বিশেষ ‘ইমেজ’ তৈরি করে ফেলেছেন। তিনি বিভিন্ন ধরনের ক্যাপ ও হ্যাট পরে থাকেন। শুরুর দিকে তিনি পরতেন ‘স্টেটসন’ হ্যাট। পরে বিভিন্ন ধরনের বেসবল ক্যাপ পরা শুরু করেন। হ্যাটের ওপর তিনি বিভিন্ন ধরনের অনুষঙ্গও পরে থাকেন, যা তাঁর হ্যাট বা ক্যাপকে আলাদা একটা মাত্রা দেয়। হ্যাটের ওপর তিনি কখনো মেটালিক বেল্ট, রোপ বা স্কার্ফও ব্যবহার করে থাকেন।
এই দুই তারকা ক্যাপকে শুধু নিজেদের স্টাইলিশ করার জন্যই দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছেন, তা নয়। মাথায় ক্যাপ পরাটা প্রথমে তাঁদের ভালো লাগা, তারপর ভালোবাসা এবং সবশেষে স্টাইলে দাঁড়িয়ে গেছে। আসলে কোনো জিনিসকে স্টাইলে পরিণত করতে গেলে প্রথমে তার প্রতি ভালোবাসাটা ভেতর থেকে স্বতঃস্কুর্তভাবে আসা চাই। চাই সঠিক পোশাকবোধ, যাতে যে বস্তুটাকে স্টাইলে পরিণত করতে চাইছি, তার সঙ্গে যেন ব্যক্তিত্ব ও পোশাক-আশাকের সামঞ্জস্য বজায় থাকে। তাই আপনি যদি চান, তাহলে আপনার ব্যক্তিত্ব ও রুচির সঙ্গে মিল রেখে যেকোনো ধরনের ক্যাপ বা টুপিকে সঙ্গী করে হতে পারেন স্টাইলিশ!
0 comments:
Post a Comment