RSS

Tuesday, August 18, 2009

তারুণ্যের ফ্যাশন

কৈশোর আর তারুণ্যের সময়টা বাঁধ ভাঙার, সবকিছুতেই নিজের মত ও স্বকীয়তা তুলে ধরার। পোশাক, সাজ এমন হতে হবে যাতে অনেকের ভিড়েও নিজেকে আলাদা করে চেনানো যায়। নিজের স্টাইলের বেলায় অন্যের মতামতটা তাই এ সময় তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনেই হয় না। নিজের ভালো লাগাটাই এখানে শেষ কথা।
বিবিএ তৃতীয় সেমিস্টারে পড়ছেন সৌরভ। সব সময় কালো রঙের পোশাক পরেন তিনি, এটাই তাঁর স্টাইল। কালো টি-শার্ট ও ফতুয়া তো পরছেনই, ঈদের পাঞ্জাবিটাও হওয়া চাই কালো। এ পর্যন্ত মেনে নিয়েছিল বাসার সবাই। কিন্তু এখন নতুন শখ হয়েছে প্রতি মাসে একটি করে ব্রেসলেট যোগ হবে কবজিতে। সংখ্যাটা পাঁচ-ছয়ে এসেছে। তবে তাঁর মা ভয়ে আছেন এটা বেড়ে না জানি কতগুলো হয়। নিত্যকার চলাফেরা তো বটেই, বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রেজেন্টেশন, জমকালো বিয়ের নিমন্ত্রণ−সবখানেই সৌরভকে দেখা যাচ্ছে কালো পোশাকে, আর একগাদা ব্রেসলেট হাতে।

বয়সটাই যখন এলোমেলো, খেয়ালখুশিমতো চলার, সেখানে এসব নিয়ে কথা বলতে যাওয়া একটু সমস্যাই। তবে কৈশোরের উচ্ছ্বাস, তারুণ্যের জোয়ারকে লাগাম পরানোর জন্য নয় বরং নিজেকে আরও সাবলীলভাবে উপস্থাপন করার জন্যই দরকার এ ব্যাপারে একটু সচেতন হওয়া। ফ্যাশন, স্টাইল সব তার জায়গামতো থাকবে। তবু কোন উপলক্ষে, কোথায় নিজেকে কীভাবে উপস্থাপন করা দরকার সেটাও ভাবতে হবে।
‘যেখানে, যেই পোশাকই পরা হোক না কেন, সবার আগে দেখতে হবে আমাকে এটি মানাচ্ছে কি না। ফ্যাশন সম্পুর্ণ মৌলিক বা নিজস্ব ধারণা। কিন্তু এর সঙ্গে উপলক্ষ, আরাম, স্বাচ্ছন্দ্য−এ ব্যাপারগুলোও মাথায় রাখতে হবে।’ বললেন শাহরুখ শহীদ।
ধরা যাক, কারও পছন্দ হলো সব সময় একটু লম্বা জিনস পরা। সঙ্গে থাকবে পাতলা চটি−এটাই তার স্টাইল। কিন্তু এই বর্ষা মৌসুমে এমন পোশাকে রাস্তায় বের হয়ে কি স্বাচ্ছান্দ্যে হাঁটা সম্ভব? প্যান্টটা যদি হয় একটু পাতলা ফেব্রিকের, আর নিচের দিকটা সামান্য গোটানো, আর সঙ্গে থাকতে পারে মোটা সোলের রাবারের জুতা। তবেই কিন্তু বৃষ্টি-কাদা পানি মাড়িয়েও থাকা যায় দিব্যি ফিটফাট। স্টাইলের সঙ্গে একটু সমঝোতা কিন্তু করতেই হবে। সব সময় পরার স্টেসওয়াশ জিনসটা কোনো জমকালো দাওয়াতে পরে যাওয়ার জন্য মোটেও উপযোগী নয়। কিন্তু সুতির টি-শার্টটা বদলে যদি এর সঙ্গে পরা হয় খাদির একটা পাঞ্জাবি, যার গলায় থাকতে পারে হালকা ব্লক বা এমব্রয়ডারি; হাতে সরু ব্রেসলেট আর পায়ে চটি−ব্যস, কেউ বলবে না পোশাকটি মানাচ্ছে না বা মোটেও ফ্যাশনেবল নয়। বন্ধুরা তো পছন্দ করবেই, তার মুখটাও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। ‘এ সময়ের তরুণেরা আসলে অনেক বুদ্ধিমান। নিজে থেকেই তারা অনেক কিছু বুঝতে পারে। তাদের পেছনে তাই সারা দিন চিৎকার-চেঁচামেচি করা মোটেও ঠিক নয়। মা-বাবার সঙ্গে মতের মিল না হলেও চিন্তার বেশি কিছু নেই। অধৈর্য না হয়ে বরং একটু করে এ ব্যাপারগুলো বোঝাতে হবে।’ এভাবেই ভাবেন শাহরুখ শহীদ।
‘ওদের আমি একটা কথা খুব গুরুত্ব দিয়ে বলতে চাই, যে কারও অনুকরণ বাদ দিয়ে, নিজের দেশের সংস্কৃতি অনুসরণ করো। সেখান থেকেই দাঁড়িয়ে যাবে তোমার নিজস্ব একটা স্টাইল। সাদামাটা ও আরামদায়ক যেকোনো পোশাকের যেন এই দুটি বৈশিষ্ট্য থাকে। তাহলে পোশাকটা তোমায় মানিয়ে যাবে অনায়াসেই। আর একটা ব্যাপার, এ সময় ছেলেদের ব্রেসলেট, চেইন−এসব পরার ব্যাপারটা কখনো বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যায়। এ ক্ষেত্রেও একটু সংযত হওয়া দরকার।’ বললেন শাহরুখ শহীদ।

কিছু টিপস
"" পোশাক যা-ই হোক, সেটা অবশ্যই পরিষ্ককার হতে হবে।
"" এ সময়ের গরম আবহাওয়ায় পরপর দুদিন একই পোশাক না পরাই ভালো।
"" নিজের নিরাপত্তার দিকটাও দেখতে হবে। মোটরসাইকেল চালানোর সময় হেলমেট পরা, রাস্তা পার হওয়ার সময় কানে এমথ্রি প্লেয়ার গুঁজে না রাখা−সাধারণ কিছু সতর্কতা মানতেই হবে।
"" ক্লাসের প্রেজেন্টেশন, আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে নিমন্ত্রণ−এ ধরনের উপলক্ষে একটু আনুষ্ঠানিক পোশাক-আশাক পরে যাওয়াই ভালো।
"" সব সময় পরা না হলেও একজোড়া ভালো জুতা, আনুষ্ঠানিক শার্ট, প্যান্ট সংগ্রহে রাখা উচিত। হঠাৎ করেই প্রয়োজন হতে পারে।
"" বন্ধুর পোশাকটা খুব ভালো লাগলেও সেটা চেয়ে নিজে পরে ফেলা দুজনের স্বাস্েথ্যর জন্যই ক্ষতিকর।
"" জুতা, ঘড়ি, সানগ্লাস−এসব সামগ্রী সস্তায় বেশ কয়েকটি না কিনে বরং একটু দাম দিয়ে ভালো মানেরটা কেনা উচিত।

0 comments:

Post a Comment