এটা খাও, ওটা খাও—অনাগত সন্তানের কথা ভেবে গর্ভবতী মাকে এমন কথা প্রায়ই শুনতে হয়। আর তাই ঘুরে-ফিরে অভিভাবকেরা গর্ভবতী মায়ের হাতে তুলে দিচ্ছেন কখনো দুধের গ্লাস, কখনো বা ফল। কিন্তু গর্ভবতী মায়ের ত্বকের যত্ন যেন সবাই ভুলেই যান। অনেকেই হয়তো ভাবেন, গর্ভবতী মায়ের আবার ত্বকের যত্ন কেন?। এ সময় খাওয়া-দাওয়াটাই তো মুখ্য। তবে একটু লক্ষ করলেই দেখা যায় যে গর্ভকালীন মায়েদের ত্বকে দেখা দেয় মেছতা, ব্রণ বা কালো ছোপ ছোপ দাগ। আবার কখনো বা ত্বক ফেটে যায়। এ সময়ে ত্বকের সঠিক পরিচর্যা না করলে অনেক সময় তা স্থায়ী হয়ে যায়। এমনটাই বললেন রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা। তিনি বলেন, মায়ের হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মূলত ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা হয়। এ কারণে গর্ভকালীন মায়ের ত্বকের যত্নের জন্য কিছু টিপস দিয়েছেন তিনি।
তাঁর মতে, এ সময়ে নিয়ম করে সপ্তাহে অন্তত একদিন হালকা গরম পানি দিয়ে সারা শরীর পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। কেননা, শরীর তখন অপেক্ষাকৃত ভারী হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন ভাঁজে ময়লা জমতে পারে। তাই হালকা ম্যাসাজ করে পরিষ্কার করা ভালো। মুখের ত্বকের ধরন বুঝে সপ্তাহে একবার ঘরে তৈরি করা প্যাক ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি। শুষ্ক ত্বকের জন্য কাঠবাদাম পেস্ট, সয়াবিন পাউডার, গাজরের রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে ত্বক হবে মসৃণ। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখ পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ভালো।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য সিকি চামচ মধু, শসা, গাজরের রস, মেথি গুঁড়া দিয়ে প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করা ভালো। যেকোনো রকম ত্বকে মধু ব্যবহার করা যাবে, কারণ মধু ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। স্বাভাবিক ত্বকের জন্য কাঁচা হলুদ, মধু, মুলতানি মাটি, মসুর ডাল দিয়ে বেটে প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করলে কাজে দেয়। আর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই কাপড় পরিবর্তন করে ঢিলেঢালা পাতলা কাপড় পরে ফেলুন। এতে ঘুম ভালো হয়। আর ভালো ঘুম হলে শরীর এবং ত্বক দুটোই ভালো থাকবে। অনেক সময় ত্বকে কালো বা বাদামি রঙের মেছতা দেখা যায়। অবহেলা করলে এই মেছতার দাগ স্থায়ীভাবে বসে যেতে পারে। মেছতার দাগ তোলার জন্য তেঁতুলের রস ও মধু দিয়ে ম্যাসেজ করে ডিমের সাদা অংশ, ডাবের পানি, কাঁচা হলুদ দিয়ে প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। ব্রণের সমস্যা হলে ব্রণ যেখানে উঠেছে সেখানে লবঙ্গ গুঁড়া পেস্ট করে লাগালে ব্রণ কমে যায়।
গর্ভকালীন অনেকের চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমলকী, হরীতকী, বহেড়া, টকদই, ডিম, কাঁচা মেহেদি দিয়ে চুলের প্যাক তৈরি করে ১০ দিন অন্তর ব্যবহার করলে চুল ঝরঝরে থাকবে, চুল পড়া কমে যাবে। আর চুলে নিয়মিত তেল দিতে হবে। তবে রাতে তেল দিয়ে সকালে শ্যাম্পু করলে ভালো।
0 comments:
Post a Comment