RSS

Tuesday, September 28, 2010

বিয়ের পর নতুন বউ

বিয়েতে বর-কনের সাজসজ্জা নিয়ে চিন্তাভাবনার তো শেষ নেই। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে শুরু হয় আরেকটি পর্ব। সেটি হলো আত্মীয়-পরিজন, বন্ধুবান্ধবের বাড়িতে নিমন্ত্রণের পর্ব। এ সময় বউকে একটু বাড়তি সাজগোজ করতেই হয়। নতুন দম্পতিকে অনেকেই নিমন্ত্রণ করেন। সেখানেও যাওয়া চাই নতুন বউয়ের মতো সেজেগুজেই। এ সময়ের পোশাক ও সাজটা কেমন হবে, এই বেলা না-হয় তা-ই জেনে নেওয়া যাক।
কিছুদিন আগে বিয়ে হয়েছে মডেল ও অভিনয়শিল্পী বাঁধনের। শ্বশুরবাড়িতে প্রথম সপ্তাহটা বাঁধন শাড়ি পরেই কাটিয়েছেন। আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বেড়াতেও যেতে হয়েছে। বাড়িতে থাকার সময় বাঁধন বেশির ভাগ সময় কোটা শাড়িই পরেছেন। কোটা শাড়িতে স্বচ্ছন্দ বলেই বাঁধন সেটা বেছে নিয়েছিলেন। আর বাইরে যাওয়ার সময় পরতেন শিফন, সিল্ক, মসলিন—এ ধরনের শাড়ি। গয়নার ক্ষেত্রে বাঁধন বলেন, ছোটখাটো নকশার সোনার গয়নাই ওই সময় বেশি পরা হয়েছে। আর পোশাকের সঙ্গে মানানসই সাজগোজ তো আছেই।

ফ্যাশন ডিজাইনার মাহিন খান মনে করেন, যাঁরা একান্নবর্তী পরিবারে বউ হয়ে আসেন, এ সময় তাঁদের অনেক বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে।
আবার যাঁরা শুধু স্বামী-স্ত্রী মিলে পরিবার শুরু করেন, তাঁদের এ ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় রয়েছে। তবে যেমনটাই হোক না কেন, বিয়ের কিছুদিন পর্যন্ত বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের ভিড় লেগেই থাকে। তাই এ সময় নতুন বউকে একটু সাজগোজ করেই থাকতে হবে।
পোশাকের বিষয়ে মাহিন খান বলেন, ‘অন্তত সপ্তাহখানেক বাড়িতে যখন অতিথি থাকে, তখন শাড়ি পরাটাই ভালো। দেখা যায়, বিকেলে অনেক মেহমান আসেন নতুন বউ দেখতে। তখন ভালো একটা শাড়ি পরে থাকতে হবে। জরি পাড়ের টাঙ্গাইলের শাড়ি, জামদানি, চিকন পাড়ের টাঙ্গাইল হাফ সিল্ক, কোটা, সিল্ক, মসলিন—এ ধরনের শাড়ি এই সময় পরার মতো। শাড়ি পরার অভ্যাস খুব বেশি না থাকলে আঁচলে পিন করে নিয়ে শাড়ি পরা যেতে পারে। তাহলে সামলানোর ঝামেলা খুব বেশি থাকবে না।’
শাড়ির রং বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মাহিন খানের পরামর্শ হলো: লাল, বেগুনি, সবুজ, রানি রং, গোলাপি, জাম, নীল রংগুলোই এ সময়ের জন্য মানানসই। হালকা কোনো রং নয়। সাদা আর কালো রঙটাও এ সময় এড়িয়ে গেলে ভাল হয়। আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে গেলে একটু ভালো শাড়ি বাছাই করতে হবে। চিকন পাড়ের কাতান, জুট কাতান, কাজ করা মসলিন—এ ধরনের শাড়িই বাছাই করা উচিত।
বিয়ের পরে নতুন বউ গয়না পরবেন, এটাই স্বাভাবিক। বাড়িতে থাকার সময় ছোটখাটো নকশার গয়নাগুলো পরতে পারেন। গলায় চেইন ও ছোট লকেট থাকতে পারে। হাতে চুড়ি পরে থাকলে দেখতেও ভালো লাগবে। মাহিন খানের মতে, সোনার চুরির সঙ্গে কাচের চুড়ি মিলিয়ে পরতে পারেন নতুন বউ। এখন অনেক ধরনের পাথরের গয়না পাওয়া যায়। কুন্দনের গয়নাও ভালো লাগে।
বিয়ের পর নিমন্ত্রণে যাওয়ার সময় শাড়ির রংটা একটু গাঢ় দেখে বাছাই করতে হবে। সেই সঙ্গে আনুষঙ্গিক সবকিছুই শাড়ির সঙ্গে মানানসই হওয়া চাই। ব্যাগ, স্যান্ডেল—সবকিছুই।
রূপবিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খানের মতে, এ সময়ে যেহেতু অনেক লোকজন বাড়িতে আসে, তাই নতুন বউয়ের একটু মেকআপ করে থাকা চাই। হালকা একটু বেইজ মেকআপ নিয়ে লিপস্টিক, কাজল ও টিপ পরতে পারেন। ঘরে থাকার সময় চুলটা বেঁধে রাখতে পারেন খোঁপা বা বেণিতে। চাইলে দু-একটা ফুল বা ফুলের মালাও গুঁজে রাখতে পারেন। আর বাইরে যাওয়ার সময় চুলটা ভালোমতো সেট করে নিন। তখন বাঁধতেও পারেন আবার খুলে দিয়ে সেট করেও নিতে পারেন। বাইরে যাওয়ার সময় একটু গাঢ় শেডের আইশ্যাডো দিয়ে নিন শাড়ির সঙ্গে রং মিলিয়ে। যা-ই পরুন না কেন, এ সময় কিছু একটা লাল রঙের পোশাক পরার পরামর্শ কানিজ আলমাসের। লাল ছাড়া নতুন ভাবটা ঠিক ফুটে ওঠে না।
কানিজ আলমাস বলেন, এ সময় খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। নখে একটু নেইলপলিশ, হাতে মেহেদি— এই অনুষঙ্গগুলোতে নতুন বউকে খুবই সুন্দর দেখাবে। মোট কথা, পরিপাটি থাকতে হবে।
এ ছাড়া নতুন বউয়ের সাজগোজে একটা মিষ্টি ভাব থাকা চাই। খুব চড়া কোনো সাজপোশাক এ সময় না দেওয়াই ভালো।
লক্ষ করুন
 বাড়িতে পরার জন্য বেছে নিন সুতি টাঙ্গাইল, কোটা, কটকি-এ ধরনের শাড়ি।
 দাওয়াতে যেতে পরুন সিল্ক, কাতান, মসলিন, অ্যান্ডি সিল্ক।
 বাড়িতেও মাঝারি উচ্চতার স্যান্ডেল পরতে পারেন।
 হাতে চুড়ি, কানে দুল ও গলায় একটা চেইন পরে থাকুন সব সময়ই।
 বাড়িতে চুলটা বেঁধেই রাখুন।
 বিয়ের পরবর্তী এক সপ্তাহে হাতে মেহেদি রাখুন।
 পোশাক ও সাজসজ্জায় যেন রুচির বহিঃপ্রকাশ ঘটে, সে বিষয়ে লক্ষ রাখুন।

0 comments:

Post a Comment