RSS

Sunday, February 6, 2011

বন্ধুত্ব না হোক শত্রুতা এড়িয়ে চলুন

ক্রিকেট বিশ্বে ভারত-পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার খেলার কোনো তুলনা নেই। কারণ একটাই, তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা। আমরা আমাদের চারপাশে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী দেখে থাকি। সেই ছোটবেলার স্কুল থেকে তার শুরু এবং মৃতু্য পর্যন্ত কারো না কারো সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই বাঁচি। আর তাই স্বাভাবিকভাবেই আপনার কর্মক্ষেত্রেও থাকতে পারে আপনার অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী, যারা আপনার সহকর্মী। বিষয়টিকে নেতিবাচক না ভেবে কাজের অংশ হিসেবে নিন এবং দক্ষতার সাথে পেশাদারি মনোভাব নিয়ে বিশেস্নষণ করে মোকাবিলার চেষ্টা করুন।

ছেলে হাতে রেজাল্টশিট নিয়ে আনন্দে নাচতে নাচতে বাসায় ঢুকল। বাবা জিজ্ঞেস করছেন_হ্যারে খোকা, পাশ করলি বুঝি? ছেলে হাসতে হাসতে বলল_হঁ্যা বাবা, আমি ক্লাসে ২য় হয়েছি। বাবা জানতে চাইলেন, কতজন পরীক্ষার্থী ছিলরে? ছেলে জবাব দিল_কেন বাবা, দুইজন। কৌতুকটা খুবই পরিচিত। এখানে গল্পটা বলার উদ্দেশ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার গুরুত্ব বোঝানোর জন্য। সত্যি কথা বলতে কি, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া কোনো বিজয়ের প্রকৃত আনন্দ নেই। আপনি একজন কর্মজীবী মানুষ। আপনার কর্মক্ষেত্রে আরো অনেক কর্মজীবী আছেন যারা আপনার সহকর্মী। হাতের পাঁচটি আঙুল যেমন সমান নয়, ঠিক তেমনি আপনার সহকর্মীরা আপনাকে না-ও পছন্দ করতে পারে। এর অনেক কারণ থাকতে পারে। হয়তো আপনি তাদের চেয়ে একটু বেশি স্মার্ট, কাজ করেন বেশি, আপনার বস আপনাকে পছন্দ করেন বেশি কিংবা এর উল্টোটাও হতে পারে। এখানে মূলত কাজ করে ইগো বা হিংসা। আবার কিছু লোক আছে ইগোটা যাদের বংশগত একটা অভ্যাস। এ ক্ষেত্রে আপনার ঘাবড়ে যাবার বা টেনশনের কিছু নেই। কথায় বলে না রাতের অাঁধার যত ঘন হয়, জোছনার আলো ততটাই উপভোগ্য হয়। যেখানে অাঁধার আছে সেখানে আলো থাকবেই। সুতরাং নো টেনশন। আপনার সহকর্মী আপনাকে যা-ই ভাবুক, আপনি আপনার সুন্দর ব্যবহার আর ভালো গুণগুলোর মাধ্যমে আপনার প্রতি তার ধারণা বা মনোভাব পরিবর্তনের চেষ্টা করুন। খেয়াল রাখুন, আপনার সহকমর্ীরা যদি আপনার বন্ধু না-ও হয়, তারা যেন আপনার শত্রু না হয়!

দৃষ্টিভঙ্গিতে পেশাদারিত্ব আনুন

আপনার সহকর্মীর মন আছে, সেই মন দিয়ে তার যা কিছু খুশি তা-ই ভাবতে পারেন। আপনি আপনার সুন্দর মন দিয়ে বিষয়টিকে সহজভাবে নিন। আপনার সহকর্মীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিজের ব্যক্তিগত না ভেবে একে অফিসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখুন। মনে করুন এটি কাজেরই একটা অংশ। তা ছাড়া সহকর্মীকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে মনে ক্ষোভ নিয়ে একটা কিছু করতে গেলে দেখবেন আপনারই ক্ষতি। অফিসে আপনার ইমেজ ও পারফরমেন্সেই ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই আপনার উচিত বিষয়টি সহজভাবে নিয়ে আপনার নিজস্ব স্টাইল এবং গতিকে আপন মনে কাজ চালিয়ে যাওয়া।

কিছু কিছু সহকর্মীকে এড়িয়ে চলুন

আগে বলেছি, কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা বংশগত বা পারিবারিক পরিবেশের অবদানে মনের মধ্যে ইগো বা হিংসা লালন করে। এদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, এরা সবসময় প্রায় সবার বেলায়ই নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে। অন্যের সমালোচনা করে। এদের সাথে দয়া করে খুব বেশি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়বেন না। কারণ, সুযোগ পেলেই আপনাকে এরা মানসিকভাবে আঘাত করবে। আপনার এই কথা মানতে হবে। যিনি আপনার কাছে অন্যের সমালোচনা করেন, তিনি নিশ্চয়ই অন্যের কাছে আপনার সামালোচনাও করতে পারেন, কেননা এটা তার অভ্যাস। আর তাই একটু কষ্ট হলেও এদের এড়িয়ে চলাটাই আপনার জন্যে উত্তম। তবে, সাবধান, কোনো নেতিবাচক বিষয় নিয়ে সহকর্মীদের সাথে বিতর্ক বা আলোচনায় জড়াবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।

সম্পর্ক করুন পেশাদারিত্বে

যেহেতু মানুষ সমাজবদ্ধ জীব, তাই আশপাশের মানুষ ও পরিবেশের সাথে সে সম্পর্কে আবদ্ধ হতে চায়। তার পরও আপনাকে মনে রাখতে হবে, অফিস আপনার কাজের জায়গা। আফিসে সহকর্মীরা অনেকেই আপনার বন্ধু হতে পারে, তবে এই বন্ধুত্বে যেন কখনোই ব্যক্তিগত সম্পর্কের আদান-প্রদানের মাত্রা বেশি না হয়। যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু ঘনিষ্ঠ থাকুন, এর বেশি নয় এর কমও নয়। আপনার সহকর্মী বন্ধুটিও যেন বুঝতে না পারে, আপনি তাকে কিভাবে গ্রহণ করছেন_সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। অর্থাৎ আপনাকে আপনার সহকর্মী বন্ধুর সাথে পেশাদারি মানসিকতা নিয়ে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

নিজেকে বিশেস্নষণ করুন এবং সতর্ক থাকুন

সহকর্মীদের মধ্যে যারা আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী, তাদের মধ্যে এমন কেউ থাকতে পারে, যাদের আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে। আপনার সেই ভালো না লাগার কারণটা কী, খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। ঐ ভালো না লাগা সহকর্মীর কোন কথা, আচরণ, ধরন, আপনার মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, তা মনোযোগ সহকারে উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন। যদি আপনার কাছে কারণটি যুক্তিপূর্ণ মনে হয়, তবে সতর্কতার সাথেই ঐ সহকর্মীকে এড়ানোর চেষ্টা করুন। যেহেতু আপনি তাকে পছন্দ কম করেন সেহেতু স্বাভাবিকভাবে সেও আপনাকে পছন্দ করবে না। এবং আপনার ক্ষতি করার সুযোগের অপেক্ষায় থাকবে। সুতরাং একটু সতর্ক থাকুন।

0 comments:

Post a Comment