RSS

Sunday, December 11, 2011

শীতের শুরুতে ব্যায়াম

শীত আসছে। এই সময়ে শরীর থেকে এই ক্লান্তি আর অবসাদ ঝেড়ে ফেলার মোক্ষম অস্ত্র কিন্তু ব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়াম দেহ-মনকে যেমন চাঙা রাখে, শীতটাও করে উপভোগ্য। আর যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাঁরা তো এ তথ্য জানেনই; কিন্তু যাঁরা এখনো ব্যায়ামাগারে যাননি তথ্যগুলো তাঁদের জন্য।

ব্যায়ামের অনুষঙ্গ
শীতে ব্যায়াম করার সময় সুতির ফুলহাতা টি-শার্ট পরা ভালো, সঙ্গে ট্রাউজার। ব্যায়ামের সময় কেডস পরে নিন। শরীর উষ্ণ রেখে ব্যায়ামের উপযোগী রাখবে এগুলো। ব্যায়ামাগারে আসার আগে শরীরে অলিভ অয়েল মেখে নিলে শরীর উষ্ণ হবে তাড়াতাড়ি। সঙ্গে জলের বোতল আর তোয়ালে। বোতলে অল্প চিনি মিশিয়ে নিতে পারেন। ব্যায়ামাগারে শারীরিক পরিশ্রমে শরীর থেকে যে ক্যালরি হারাবে, তার খানিকটা পুষিয়ে দেবে চিনি।

ডাক্তার বাড়ি
বারডেম হাসপাতালের ল্যাবরেটরি সার্ভিসেসের পরিচালক অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী বলেন, ‘ব্যায়ামের মাধ্যমে আমাদের মন সজীব হয়। যখন আমাদের মন সতেজ থাকে, তখন শরীরও ভালো হয়ে যায়। নীরোগ থাকার জন্য ব্যায়াম করা খুব জরুরি।’ ব্যায়াম রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে। শরীরের ওজন কমিয়ে দেহের সৌন্দর্য বাড়ায়।
বাড়ায় রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা।
শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে।
মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
দূরে সরিয়ে রাখে ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের মতো রোগ।

ব্যায়াম বিশেষজ্ঞ যা বলেন
কথা হয় মাসুদ পারভেজের সঙ্গে। তিনি ইএলবি ফিটনেস সেন্টার, মগবাজার শাখার প্রধান প্রশিক্ষক। তিনি জানান, ব্যায়াম সাধারণত দুই ধরনের—ফ্রি হ্যান্ড এবং ওয়েট লিফটিং। ফ্রি হ্যান্ড সবাই করতে পারেন কিন্তু ওয়েট লিফটিংয়ের জন্য কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। মেরুদণ্ড, পায়ের হাড়ে যাদের ব্যথা আছে ওয়েট লিফটিং তাদের বেলায় না। এ ছাড়া ৪০ বছর বয়সের পরে ওয়েট লিফটিংয়ের বেলায় কিছু বিধিনিষেধ মানতে হয়। তিনি আরও বলেন, ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম করতে পারবেন সবাই, কিন্তু যাঁদের শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা আছে, তাঁদের বেলায় ব্যায়ামের মাত্রাটা কমিয়ে নিতে হবে। শীত মৌসুমে শরীরচর্চার আগে ওয়ার্মআপের সময়টা বাড়িয়ে নিতে হবে। শীতে মাংসপেশিতে ব্যথা হয়, নিয়মিত ব্যায়ামে এ সমস্যা দূর হয়। ব্যায়ামের সময় শীতল বাতাস যেন শরীরকে ঠান্ডা করে না ফেলে।
নিয়মিত যাঁরা ব্যায়াম করেন, তাঁদের জল খেতে হবে প্রচুর।
ব্যায়াম শেষে স্টিম বাথ নেওয়া যেতে পারে, এতে লোমকূপে জমে থাকা ময়লা দূর হবে।

খাওয়াদাওয়া
ব্যায়ামাগারে এসে যাঁরা মেদ ঝরাতে চান তাদের জন্য—খালি পেটে ব্যায়াম করা যাবে না কখনোই। সকালে ব্যায়ামাগারে যাওয়ার আগে দুটি কলা, সঙ্গে একটি রুটি রাখতে পারেন। ফিরে এসে চারটি কলা, দুটি শসা, দুটি রুটি, সঙ্গে লেবু। দুপুরে এক কাপ ভাত, মাছ ও সবজি ইচ্ছেমতো। রাতে রুটি চারটি, একটি গোল আলু এবং মিষ্টি আলু আর সবজি। আর যাঁরা ব্যায়ামাগারে আসেন স্বাস্থ্য ফেরাতে তাঁদের বেলায়: ব্যায়ামাগারে ঢোকার আগে চারটি কলা, বড় রুটি দুটি। ফিরে এসে চারটি ডিমের সাদা অংশ, এক গ্লাস দুধ, সঙ্গে মুরগির মাংস ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম। দুপুরে এক কাপ ভাত, সবজি, মুরগির মাংস ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম ও ডাল। রাতে এক কাপ ভাত, দুটি ডিমের সাদা অংশ, মুরগির মাংস ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম এবং এক গ্লাস দুধ। প্রশিক্ষক মো. মাসুদ পারভেজ বলেন, ব্যায়ামে শরীরের শক্তি ক্ষয় হয়, তাই দেহের চাহিদা পূরণে এ ধরনের সুষম খাদ্যতালিকা প্রস্তুত করতে হবে। দেহের গঠন অনুযায়ী খাদ্যতালিকায় কখনো কিছুটা হেরফেরও হয়।
শীতে শরীরের মাংসপেশিগুলোও জমাট বেঁধে থাকে কখনো কখনো। এ জন্য একদিকে মানুষ যেমন কাজের গতি হারায়, তেমনি দেহকোষেও আলস্য ভর করে। কিন্তু শীতেই মানুষের শরীরে শক্তি সঞ্চিত থাকে বেশি। তাই চাইলে বেশি সময় ধরে শরীর গঠনে মনোযোগী হওয়া যায় এ শীতকালেই।

0 comments:

Post a Comment