RSS

Monday, September 19, 2011

অন্দরে আলো

‘কর্মব্যস্ত একটি দিন। অফিসে কাজের চাপে দম ফেলার সময় নেই। ঘরে ফিরেই সতেজ হতে চায় মন। বসার ঘরে কিংবা প্রিয় ব্যালকনিতে হালকা স্নিগ্ধ আলোর নিচে গা এলিয়ে দেওয়া। সঙ্গে যদি এক কাপ গরম চা কিংবা কফি থাকে তাহলে তো কথাই নেই। কৃত্রিম আলোর আভার সঙ্গে সবকিছু মিশে তৈরি করে এক অপূর্ব পরিবেশ। বেড়ে যায় সতেজতা। অন্দরের এই আলোকসজ্জা নিয়েই এবারের নকশার আয়োজন।

আপনি অন্দরের কোন জায়গা কী হিসেবে ব্যবহার করছেন, তার ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে অন্দরের আলোকসজ্জা। অর্থাৎ ব্যবহারভেদে বৈচিত্র্য আসে আলোকসজ্জায়। নিজের পছন্দ এবং রুচিও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। তবে যা-ই করুন না কেন আপনার অন্দর যাতে পর্যাপ্ত আলোয় আলোকিত হয়, সেটিই সর্বদা মাথায় রাখা উচিত। সেই সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টিও উল্লেখযোগ্য।’ বললেন ‘ব্রিক কনসালট্যান্ট’ এবং ‘ইনক্রাক্স স্কুল অব ডিজাইনের’ অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আমিরুল আরেফিন।
বসতবাড়ির অন্দরের প্রবেশপথ থেকে শুরু করে বসার ঘর, খাবার ঘর, শোয়ার ঘর, পড়ার ঘর, ব্যালকনি সবখানেই কৃত্রিম আলো তৈরি করে ভিন্নমাত্রা। এনে দেয় বিচিত্র অনুভূতি। অন্দরের প্রবেশপথে কম উজ্জ্বলতার এবং হালকা রঙের আলোকবাতির ব্যবহার আজকাল বেশ দেখা যায়। অনেকে প্রবেশপথের দুই পাশের দেয়ালে বিভিন্ন পেইন্টিংসও ঝুলিয়ে রাখেন। এসব ক্ষেত্রে পেইন্টিংসগুলোকে বাড়তি স্পট লাইট দিয়ে আলোকিত করে বাড়িয়ে তুলতে পারেন প্রবেশপথের পরিবেশ। বসার ঘরে লোকসমাগম একটু বেশি হয় বলে তুলনামূলক উজ্জ্বল আলোকসজ্জাই সবার বেশি পছন্দ। এ ক্ষেত্রে দেয়ালের রঙের সঙ্গে মিল রেখে কিংবা বিপরীত রঙের এবং বাহারি নকশার আলোকবাতির ব্যবহার পুরো জায়গাকে করে তুলতে পারে সুন্দর। শুধু তা-ই নয়, বসার ঘরের আসবাবের টেক্সচার ও রঙের সঙ্গে মিল রেখেও ব্যবহার করতে পারেন আলোকবাতি। ঘরের এক কোণে ল্যাম্পশেড, কর্নার ক্যাবিনেট কিংবা শোকেসগুলোতেও ব্যবহার করতে পারেন কম উজ্জ্বলতার ছোট আকারের আলোকবাতি। এ ছাড়া ফলস সিলিং ব্যবহার করে তার মাধ্যমে হালকা ও স্নিগ্ধ আলোর ব্যবস্থা করতে পারেন আপনি। এতে বসার ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে বহুলাংশে।
‘ব্রিক কনসালট্যান্ট’ এবং ‘ইনক্রাক্স স্কুল অব ডিজাইনের’ আরেক পরিচালক অনিন্দ্য পণ্ডিত বলেন, খাবার ঘরের আলোকব্যবস্থাও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত খাবার টেবিলের ওপর সিলিং থেকে ঝুলন্তবাতি ব্যবহার করা হয়, যাতে খাবার সময় টেবিলে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকে। আলোর উজ্জ্বলতা যাতে খাবার সময় বিরক্তির সৃষ্টি না করে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। খাবার ঘরে বাসন রাখার তাক কিংবা ক্যাবিনেটগুলোতেও কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করা যায়। এ ছাড়া আপনি আপনার পছন্দমতো ঘরের বিভিন্ন জায়গায় মনের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারেন আলোকসজ্জায়।
শোয়ার ঘরটি আপনার একান্তই নিজস্ব। এখানে আলোকবিন্যাসটাও তাই সম্পূর্ণ আপনার রুচি এবং স্বাচ্ছন্দ্যের ওপর নির্ভর করে হয়ে থাকে। সাধারণত শোয়ার ঘরের জন্য হালকা রঙের, তুলনামূলক কম উজ্জ্বলতার ও দৃষ্টি সহনীয় বাতিই ব্যবহূত হয়ে থাকে। যাঁদের শোয়ার ঘরে ড্রেসিং টেবিল আছে, তাঁরা এমনভাবে আলোকসজ্জা করতে পারেন যাতে আয়নার সামনে দাঁড়ালে পর্যাপ্ত আলো পাওয়া যায়। এ ছাড়া ঘরে রকমারি নকশার টেবিল ল্যাম্প ব্যবহার করেও একঘেয়ে ভাবটা কাটানো যায়। ওয়াল কেবিনেটেও স্পট লাইটের মাধ্যমে ঘরের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা যায়। পড়ার ঘরের জন্য এমনভাবে কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করা উচিত, যাতে একই সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য এবং দৃষ্টি সহনীয় হয়। বিশেষ করে পড়ার টেবিলে যাতে সঠিকভাবে আলো আসে, সে দিকটি লক্ষ রাখতে হবে। আপনি ইচ্ছা করলে বই রাখার তাকগুলোতেও আলোর ব্যবস্থা করতে পারেন। বাসায় শিশুদের জন্য ঘরটিতে উজ্জ্বল আলোক উৎসের ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘরের দেয়ালের রঙের সঙ্গে মিল রেখেও তা করতে পারেন বলে জানান তিনি।
অন্দরসজ্জায় অন্যতম প্রধান উপাদান কৃত্রিম আলোকসজ্জা। আলোকের বৈচিত্র্য অন্দরের পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনের ওপরও ব্যাপক প্রভাব ফেলে। তাই শুধু অলংকরণের জন্য নয়, ব্যবহূত আলোকসজ্জা যাতে স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে আসে, সে বিষয়টির প্রতি সবার বিশেষ লক্ষ রাখা প্রয়োজন। এমনটিই মনে করেন ‘অন্দরসজ্জার’ প্রধান নির্বাহী রুমানা আফজাল খান।

কোথায় পাবেন ও কেমন দাম
ঢাকার পুরানা পল্টন এলাকায় পাইকারি ও খুচরা দামে পেতে পারেন রকমারি রঙের ও ঢঙের আলোকবাতি। এ ছাড়া কারওয়ান বাজার, গুলশান ১ ও ২ নম্বরেও পেতে পারেন আপনি। সাধারণ ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে আপনার পছন্দ ও রুচি অনুযায়ী নানা মূল্যের আলোকবাতি ক্রয় করতে পারেন আপনি।

0 comments:

Post a Comment