RSS

Tuesday, October 26, 2010

এ সময়ে ত্বকের যত্ন

সারা দিন কড়া রোদ, রাতে হালকা ঠান্ডা। শীত আসার আগামবার্তা। আবহাওয়ার সঙ্গে ত্বকেরও পরিবর্তন হচ্ছে। খুঁটিনাটি যত্ন এখন থেকেই নিলে সারা শীতে থাকতে পারবেন সতেজ।
রূপবিশেষজ্ঞ ফারজানা আরমান জানান, এ সময়টাতে ত্বক স্পর্শকাতর হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে দেখা দিতে পারে র‌্যাশ। গরমের জন্য যেসব পণ্য এত দিন ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো বদলে নিতে হবে ধীরে ধীরে এখন থেকেই।

রূপবিশেষজ্ঞ নীপা মাহবুব জানান, ত্বকের ধরন বুঝে এখন থেকেই যত্ন নেওয়া শুরু করা উচিত। অনেক ধুলোবালি হবে এখন। তাই যতটা সম্ভব ত্বক পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করতে হবে।
ত্বকের যত্ন
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এ সময়টা একটু অদ্ভুত। ত্বকে মিশ্র একটা ভাব দেখা দিতে পারে। মুখের টি জোন অর্থাৎ নাক-কপালের অংশ ছাড়া বাকি জায়গা শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। সাধারণত যে ফেস ওয়াশ গরমকালে ব্যবহার করেছেন সেটাই রাখুন। তবে তা শুধু টি-জোনটুকুর জন্যই। বাকি শুষ্ক জায়গায় সাধারণ ফেস ওয়াশ বা ফোমিং ক্লিনজার দিয়ে ধোবেন। একটু বেশি শুষ্কতা দেখা দিলে ক্রিম ক্লিনজার অথবা গ্লিসারিন বার ব্যবহার করুন। প্রতিদিন বাইরে বের হওয়ার আগে দেখে নিন আপনার সঙ্গে ক্লিনজিং ওয়াইপস বা ওয়েট টিস্যু আছে কি না। প্রয়োজনে দরকারমতো মুখ মুছে নেবেন।
এ সময় ত্বক অনেকাংশেই উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে। সপ্তাহে একদিন স্ক্রাব ব্যবহারে উপকার পাবেন। তৈলাক্ত ত্বকে জেল বা হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন, যেগুলোতে তেলের পরিমাণ কম, পানির পরিমাণ বেশি। ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ত্বকের প্রয়োজনীয়তা বুঝে নিতে হবে। শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে ভারী ময়েশ্চারাইজার লাগানো উচিত। সকালের দিকে অবশ্য হালকা ক্রিমই ভালো হবে।
রূপবিশেষজ্ঞ নীপা মাহবুব বলেন, এ সময় বিকেল পর্যন্ত কড়া রোদ থাকে। এ কারণে সানস্ক্রিন লোশন অবশ্যই লাগিয়ে বের হতে হবে। কম বাইরে থাকা হলে ২৫-৩০ এসপিএফ আছে এমন সানস্ক্রিন লাগালেই হবে। দুই ঘণ্টা পরপর মুখ মুছে নিয়ে নতুন করে লাগাতে হবে। কারণ, এটি দুই ঘণ্টার বেশি কাজ করে না বলে জানান তিনি।
ঘরোয়া পদ্ধতিতেও যত্ন নিতে পারেন। কলা পেস্ট করে লাগালে শুষ্ক ত্বকে প্রাণবন্ত ভাব ফিরে আসবে। তেমনি তৈলাক্ত ত্বকে শসার রস চমৎকারভাবে কাজ করবে। সাধারণ থেকে তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীদের জন্য রইল ফারজানা আরমানের দেওয়া কিছু টিপস।
 দুই চামচ দুধের ক্রিমের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা গোলাপের পানি মেশান। মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে মাস্কটি লাগিয়ে ফেলুন। হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে পাবেন। শুষ্ক ত্বকে এটি বেশি মানানসই। তবে অন্য ত্বকে না মানালে ব্যবহার করবেন না।
 কলা পেস্ট করে মধু মিশিয়েও ত্বকে লাগাতে পারেন। ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন। পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
 নারকেল তেল কিন্তু ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফেরাতে ভেলকির মতো কাজ করবে। মুখে নারকেল তেল লাগান। সুতির রুমাল গরম পানিতে ভিজিয়ে ভালোমতো নিংড়ে নিন। মুখের ওপর দিয়ে রাখুন কিছুক্ষণের জন্য। মুখটা মুছে নিয়ে এবার গোলাপ জল লাগিয়ে নিন। সব ধরনের ত্বকেই এটি মানিয়ে যাবে।
 পেঁপে পেস্ট করে ১০-১৫ মিনিটের জন্য মুখে দিয়ে রাখুন। ত্বকের পোড়া ভাব দূর করবে। গাজর পেস্ট করে ১০ মিনিটের জন্য লাগালে উপকার পাবেন। চন্দন পেস্ট করে লাগান। শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ধুয়ে নিন।
 অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক যাঁদের, তাঁরা শসার রস ব্যবহার করুন। টমেটোর রসের সঙ্গে একটু মধু পেস্ট করে নিন। অনেক ভালো ফল পাবেন।

চুলের যত্ন
চুলের ক্ষেত্রেও দেখা যায় শুষ্কতা। অনেকের চুল উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে। একটু রুক্ষ, শক্ত ভাব এসে পড়ে চুলে। রইল কিছু টিপস।
 কলার সঙ্গে পেঁপে অথবা অ্যাভোকাডো মিশিয়ে ভালোভাবে পেস্ট করে লাগাতে পারেন।
 অ্যাভোকাডোর সঙ্গে জলপাই তেল আর মধু মিশিয়ে নিন। যেকোনো সুপার শপে অ্যাভোকাডো পাবেন। ২০-২৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন।
 এ সময় খুশকিও খুব বেশি হয়। ভারসাম্য বজায় রেখে শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। যেমন সপ্তাহে পাঁচ দিন শ্যাম্পু করলে দুই দিন সাধারণ থেকে তৈলাক্ত চুলের উপযোগী শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। আবার দুই দিন অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু লাগাতে পারেন। এরপর আবার দুই দিন সাধারণ থেকে তৈলাক্ত চুলের উপযোগী শ্যাম্পু।
 এ টিপসটি তৈলাক্ত চুলের জন্য। আধাকাপ মেয়োনেজ হালকা গরম করে নিন। মাথায় লাগিয়ে চুলের ক্যাপ পরে ফেলুন। ৩০-৩৫ মিনিট রাখুন। ভালোমতো শ্যাম্পু করুন। চমৎকার সিল্কি ভাব পাবেন। তেল তেল ভাব চলে যাবে। দু-তিন দিন শ্যাম্পু না করলেও কোনো অসুবিধা হবে না।
 চুল ধোয়ার শেষ পর্যায়ে পানির সঙ্গে দুই-তিন চামচ ভিনেগার মিশিয়ে চুল ধুয়ে নিতে পারেন। তৈলাক্ত চুলে অতিরিক্ত তেল ভাব চলে যাবে।
 পারলারে গিয়ে ওজোন ট্রিটমেন্ট করতে পারেন। এতেও কিছুটা মুক্তি পাবেন খুশকি থেকে।

হাত-পায়ের যত্ন
ধুলোবালিটা এ সময় যেন একটু বেশিই থাকে। এ কারণে নিয়মিত হাত-পায়ের যত্ন নিতে হবে বলে জানান নীপা মাহবুব। পারলারে সম্ভব না হলে বাসায়ই পেডিকিওর-মেনিকিওর করে নিতে পারেন। অবশ্যই লোশন ব্যবহার করবেন। কারণ, এখন থেকেই একটু একটু করে পা ফাটার লক্ষণ দেখা দেবে।

0 comments:

Post a Comment